নাট্যকার মনোমোহন বসু (১৮৩১-১৯১২) সম্পর্কে যা জানো লেখো
ভূমিকা: ডেভিড হেয়ার এবং কবি ঈশ্বর গুপ্তের শিষ্য মনোমোহন বসু ছাত্রাবস্থাতেই ‘সংবাদ প্রভাকর’, ‘তত্ত্ববোধিনী’ প্রভৃতি পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি নাট্যকার, মঞ্চাধ্যক্ষ এবং ‘মধ্যস্থ’ পত্রিকার সম্পাদক হয়ে ওঠেন।
নাটকের প্রকৃতি: মনোমোহনের নাটকগুলির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, বহিরঙ্গ আধুনিক নাটকের মতো কিন্তু অন্তরঙ্গ দেশীয় যাত্রাধর্মী। তাঁর নাটককে যাত্রার মতো খোলা মঞ্চেও অভিনয় করা যায় আবার আধুনিক থিয়েটারের মতোও মঞ্চস্থ করা যায়। ‘বহুবাজার বঙ্গ নাট্যালয়’-এর সঙ্গে মনোমোহন যুক্ত ছিলেন এবং বেশ কয়েকটি নাটক রচনা করেন।
বিখ্যাত নাটকসমূহ: তাঁর অন্যতম তিনটি বিখ্যাত নাটক হল- ‘রামাভিষেক’ (১৮৬৮), ‘সতীনাটক’ (১৮৭৪), ও ‘হরিশ্চন্দ্র’ (১৮৭৫) নাটক। অন্যান্য নাটক হল ‘প্রণয় পরীক্ষা’ (১৮৬৯), ‘পার্থপরাজয়’ (১৮৮১), ‘রাসলীলা’ (১৮৮৯) প্রভৃতি। বিয়োগান্তক নাটকে ক্রোড় অঙ্ক জুড়ে মিলনান্তক করার উল্লেখযোগ্য প্রচলন তাঁর হাত ধরেই বাংলা নাটকে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
কৃতিত্ব: ১৮৭২ সালে ন্যাশনাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মনোমোহন অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। মনোমোহনের কৃতিত্ব এইখানেই যে তিনি যাত্রাকে উন্নত করে, সংগীতাংশকে পরিমার্জিত করে থিয়েটারের উপযোগী করে তুলেছিলেন। ফলে, তদানীন্তন কালে প্রাচীন ও নবীন মঞ্চভাবনার মধ্যে মেলবন্ধন ঘটেছিল।
আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা