জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির নাট্যশালা সম্পর্কে যা জানো লেখো

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির নাট্যশালা সম্পর্কে যা জানো লেখো

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির নাট্যশালা সম্পর্কে যা জানো লেখো
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির নাট্যশালা সম্পর্কে যা জানো লেখো

প্রতিষ্ঠা: বাংলা নাট্যচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো নাট্যশালা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। এটি প্রতিষ্ঠার মূলে ছিলেন সারদাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়, গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ ব্যক্তিত্বরা। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি চিঠি থেকে জানা যায়, গোপাল উড়ের যাত্রা শুনে নাট্যশালা প্রতিষ্ঠার সংকল্প তাঁদের মনে জাগ্রত হয়। এখানে সর্বপ্রথম মধুসূদন দত্তের ‘কৃষ্ণকুমারী’ ও পরে ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ নাটকের অভিনয় হয়। একবার ওরিয়েন্টাল সেমিনারির প্রধান শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র নন্দীর পরামর্শ অনুযায়ী একটি সামাজিক বিষয়কে উপজীব্য করে নাটক লেখার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় এবং পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি ছিল ‘বহুবিবাহ’। রামনারায়ণ তর্করত্ন বহুবিবাহ সম্পর্কে ‘নবনাটক’ রচনা করে দুশো টাকা পুরস্কার পান। ১৮৬৭ সালের ৫ জানুয়ারি ‘নবনাটক’-এর অভিনয় শুরু হয়, অল্প সময়ের ব্যবধানে নাটকটি নয় বার অভিনীত হয়।

নাট্যরীতি: বাস্তবরীতি অনুসরণ করার জন্য আঠা দিয়ে অরণ্যের দৃশ্যে জীবন্ত জোনাকি পোকা আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। গ্যাসের আলো দিয়ে সূর্যাস্ত ও সন্ধ্যার মনোরম দৃশ্যকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। শিল্পীরা দৃশ্যাঙ্কনে দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। এসবের জন্য তৎকালীন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, বিশেষত ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকায় বিস্তর প্রশংসা অর্জন করেছিল এই নাট্যশালা। ১৮৬৭ সালের শেষের দিকে এই নাট্যশালা লুপ্ত হয়ে যায়। শুধুমাত্র জৌলুস দেখানোই এর প্রধান লক্ষ্য ছিল না, পাশ্চাত্য নাট্যরীতির সঙ্গে ভারতীয় নাট্যরীতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে নতুন নাট্যধারার সৃষ্টি করাই ছিল এই নাট্যশালার উদ্দেশ্য। স্মরণীয় যে, এই সময়েই ঠাকুরবাড়িতে হিন্দুমেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়, জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটে।

আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment