হিন্দু থিয়েটারের প্রতিষ্ঠা ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো
হিন্দু থিয়েটার প্রতিষ্ঠা: ইতিহাস বলছে, ভারতবর্ষে নাট্যচর্চার সূত্রপাত বৈদিক যুগ বা উত্তর-বৈদিক যুগে। তবে বাঙালির জীবনে আধুনিক রীতিতে নাট্যচর্চার সূত্রপাত ঘটেছিল ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগে। ১৮৩১ সালে প্রসন্নকুমার ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ‘হিন্দু থিয়েটার’-এর মঞ্চ থেকেই বাঙালির আধুনিক নাট্যাভিনয়চর্চার সূচনা হয়। এখানেই একদিক খোলা মঞ্চ বা ‘প্রসেনিয়াম’ রীতিতে নাট্যাভিনয় পরিবেশনার ক্ষেত্রে বাঙালির হাতেখড়ি হল বলা চলে।
বৈশিষ্ট্য: শহর কলকাতায় সেসময় আখড়াই, হাফ-আখড়াই, কীর্তন, পাঁচালি, কবির লড়াই, তরজা, যাত্রা প্রভৃতি রমরমিয়ে চলছিল। কিন্তু নব্য ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালিবাবুরা এর মধ্যে আর আনন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এই বাবুসমাজকে নাট্যরসের আস্বাদদানের তাগিদে, প্রসন্নকুমার ঠাকুরের নেতৃত্বে, তাঁরই বাগানবাড়িতে নাট্যমঞ্চ গড়ে তোলা হল। এরই নাম হল ‘হিন্দু থিয়েটার’। ১৮৩১ সালের ২৮ ডিসেম্বর এই মঞ্চে শেকসপিয়রের ‘জুলিয়াস সিজার’-এর অংশবিশেষ এবং ভবভূতির ‘উত্তররামচরিত’-এর অভিনয় হয়-দুটি নাটকই হয় ইংরেজিতে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: হিন্দু থিয়েটারের মধ্য দিয়েই বাঙালি প্রথম নিজপ্রচেষ্টায় নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে অনেকখানি অগ্রসর হতে পেরেছিল এবং বাঙালির সংস্কৃতিচর্চায় নাটক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, যার পরিণাম সুদূরপ্রসারী।
আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা