নাট্যকার মন্মথ রায়ের বিশিষ্টতা আলোচনা করো

নাট্যকার মন্মথ রায়ের বিশিষ্টতা আলোচনা করো

নাট্যকার মন্মথ রায়ের বিশিষ্টতা আলোচনা করো
নাট্যকার মন্মথ রায়ের বিশিষ্টতা আলোচনা করো

আবির্ভাবকাল: রবীন্দ্রোত্তর যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার মন্মথ রায়। মঞ্চনাট্য, চিত্রনাট্য ও বেতার নাট্য- সবরকম নাটক রচনাতেই তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর ‘মুক্তির ডাক’ একাঙ্ক নাটকটি দিয়ে বাংলা একাঙ্ক নাটকের জয়যাত্রা শুরু। তারপর তিনি রচনা করেন ‘রাজপুরী’, ‘বিদ্যুৎপর্ণা’, ‘বহুরূপী’, ‘উল্কাপাত’, ‘অসাধারণ’, ‘টোটোপাড়া’ প্রভৃতি। তাঁর ‘মুক্তির ডাক’ নাটকটি তীব্র ঘাত-প্রতিঘাতপ্রবণ ও আবেগ-উৎকণ্ঠায় পরিপূর্ণ। বৌদ্ধ যুগে বিম্বিসারের রাজত্বকালে মগধের তরুণ শ্রেষ্ঠী সুন্দরক তার স্ত্রী পদ্মা ও অম্বার কাহিনি। মন্মথ রায়ের পূর্ণাঙ্গ নাটকের মধ্যে বিখ্যাত হল ‘চাঁদ সদাগর’, ‘কারাগার’, ‘অশোক’, ‘মীরকাশিম’, ‘মমতাময়ী হাসপাতাল’, ‘ধর্মঘট’, ‘অমৃত অতীত’ প্রভৃতি।

কারাগার: ‘কারাগার’-কে তাঁর শ্রেষ্ঠ নাটকরূপে অভিহিত করা হয়। এখানে ইংরেজ শাসনাধীন সমগ্র ভারতবর্ষই হল কারাগার, অত্যাচারী কংস হল শাসক ইংরেজ আর কৃষ্ণ হল বিপ্লবী। পুরাণকথা এখানে স্বদেশভাবনায় পূর্ণতা লাভ করেছে।

পূর্ণাঙ্গ ও ঐতিহাসিক নাটক: মন্মথ রায় রচিত চারটি পূর্ণাঙ্গ নাটক যথা-‘ধর্মঘট’, ‘পথে বিপথে’, ‘চাষীর প্রেম’, ‘আজব দেশ’ বিভিন্ন সাময়িকপত্রে (১৯৫২-১৯৫৩) প্রকাশিত হয়। শ্রমিক জীবনের পটভূমিকায় লেখা হয়েছে ‘ধর্মঘট’। মধ্যবিত্তজীবন রূপ পেয়েছে ‘পথে বিপথে’ নাটকে, কৃষকজীবনের পটভূমিকায় লেখা ‘চাষীর প্রেম’, ব্যঙ্গাত্মক নাটক ‘আজব দেশ’ গণজীবনের বাতাবরণে লেখা। ঐতিহাসিক নাটক ‘মীরকাশিম’ বাংলার অতীত ইতিহাসের মহানায়ক মীরকাশিমের জীবন ও ভাবনার ভিত্তিতে রচিত। তাঁর অসামান্য রচনা ‘মহাভারতী’, যেখানে বঙ্গভঙ্গ থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জন-প্রায় চল্লিশ বছরের ইতিহাসকে ধরা হয়েছে। এ ছাড়াও ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’, ‘লাঙল’, ‘বন্দিতা’ তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটক। দ্বন্দ্বময়তায়, ভাষার অলংকরণে, অভিনব নাট্যবিষয় ও আঙ্গিকে তাঁর নাটক বাংলা নাট্যসাহিত্যের ইতিহাসে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে।

আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment