ন্যাশনাল থিয়েটার সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো
ভূমিকা: উনিশ শতকে থিয়েটার ছিল ব্রিটিশ শাসক এবং বাঙালি জমিদারদের বিনোদনের মাধ্যম। কিন্তু নবজাগরণের আলোয় উদ্ভাসিত বাঙালি সমাজ অচিরেই বুঝল যে থিয়েটার শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, সময়ের চাহিদায় তাকে হতে হবে সমাজ বদলের হাতিয়ার। এই ভাবনা থেকেই জনমুখী থিয়েটারের ভাবনার জন্ম হয়েছিল। ন্যাশনাল থিয়েটারের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলা থিয়েটারের প্রকৃত গণতন্ত্রীকরণ ঘটেছিল। ফলে, নিয়মিত নাটক অভিনয়ের সুযোগ যেমন তৈরি হল তেমনই বাংলা থিয়েটারও দর্শকের চাহিদা ও সামাজিক দায়দ্ধতার কথা মনে রাখতে বাধ্য হল। সমাজের যে-কোনো শ্রেণির মানুষ রঙ্গমঞ্চে গিয়ে টিকিট কেটে নাটক দেখতে পারলেন, মতামত দিতে পারলেন।
উদ্বোধন: ৭ ডিসেম্বের, ১৮৭২, শনিবার, দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটক দিয়ে ন্যাশনাল থিয়েটারের উদ্বোধন হয়।
উদ্যোক্তা: নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, মতিলাল সুর, অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফি, অমৃতলাল বসু প্রমুখ ব্যক্তিত্বরা।
অভিনীত নাটক: ‘নীলদর্পণ’, ‘জামাই বারিক’, ‘সধবার একদশী’, ‘কৃষ্ণকুমারী’, ‘যেমন কর্ম তেমনি ফল’ ‘নববিদ্যালয়’ প্রভৃতি।
ন্যাশনাল থিয়েটারের গুরুত্ব:
- আগে যেখানে থিয়েটারে সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না, সেখানে ন্যাশনাল থিয়েটারে এই প্রথম টিকিট কিনে নাটক দেখার সুযোগ হল।
- এই থিয়েটার ছিল বাঙালির নিজস্ব থিয়েটার।
- ন্যাশনাল থিয়েটার ধনী ব্যক্তির হাত থেকে বাংলা থিয়েটারকে মুক্তি দিয়েছিল।
- এখানে পেশাদারি থিয়েটারের বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল।
- অভিনয় শিল্পকে এই প্রথমবার সর্বসাধারণের উপযোগী করার প্রয়াস দেখা গেল।
আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা