ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো

ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো

ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো
ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো

নাট্যজীবনের সূচনা: রসায়নশাস্ত্রের কৃতী ছাত্র হলেও ক্ষীরোদপ্রসাদ শৈশব থেকেই সাহিত্যের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে তাঁর ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাসী’ (১৮৮৫) নামক একটি আখ্যায়িকা দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে নাট্যজগতের প্রতি আকর্ষণবশত অধ্যাপনাবৃত্তি ত্যাগ করে নাট্যরচনায় আত্মনিয়োগ করেন।

নাট্যসম্ভার: ক্ষীরোদপ্রসাদের গীতিনাট্যগুলিতে আরব-পারস্য-তুরস্কের উপাখ্যান ব্যবহৃত হয়েছে। রোমান্স, কৌতুক, রোমাঞ্চকর রূপকথা এবং নৃত্যগীতের সমন্বয়ে এই গীতিনাট্যগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল। তাঁর রচিত ‘আলিবাবা’, ‘বেদৌরা’, ‘আলাদিন’, ‘বরুণা’, ‘ভূতের বেগার’ প্রভৃতি এখনও উপভোগ্য।

পৌরাণিক নাটক: পৌরাণিক নাটক ‘বজ্রবাহন’ লিখে তিনি ‘বিদ্যাবিনোদ’ উপাধি লাভ করেন। এ ছাড়াও ‘সাবিত্রী’, ‘ভীষ্ম’, ‘রঞ্জাবতী’, ‘রামানুজ’, ‘নরনারায়ণ’ প্রভৃতি পুরাণভিত্তিক নাটক তিনি রচনা করেছিলেন।

ঐতিহাসিক নাটক: ক্ষীরোদপ্রসাদ রচিত কয়েকটি ঐতিহাসিক নাটক হল- ‘প্রতাপাদিত্য’, ‘পলাশীর প্রায়শ্চিত্ত’, ‘পদ্মিনী’, ‘অশোক’, ‘বাঙ্গালার মসনদ’, ‘আলমগীর’ প্রভৃতি।

নাটকের বৈশিষ্ট্য: ক্ষীরোদপ্রসাদের ঐতিহাসিক নাটকসমূহে ইতিহাসের অনুসরণ কমই আছে। সমালোচকদের মতে, নাট্যকার হিসেবে ক্ষীরোদপ্রসাদের মুখ্য দোষ ঘটনা সংস্থাপনের অসংগতি। ইচ্ছা ও কল্পনা অনুযায়ী তিনি এমন এমন চরিত্রকে একত্রিত করেন যা এককথায় অসম্ভব। তাঁর ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক নাটকে বীররসের পরিবর্তে কৌতুকরসের আধিক্য লক্ষ করা যায়। মঞ্চে উপবিষ্ট দর্শকদের জন্য ক্ষীরোদপ্রসাদ সুন্দর গান রচনা করতে পারতেন। ক্ষীরোদপ্রসাদ গদ্য ও অমিত্রাক্ষর ছন্দ-উভয় রীতিতেই নাটক রচনা করেন। তাঁর ঐতিহাসিক নাটকগুলি সমকালে দেশাত্মবোধের জাগরণে সহায়তা করেছিল।

আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment