নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে সেবিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী উপদেশ দেন

নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে সেবিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী উপদেশ দেন

নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে সেবিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী উপদেশ দেন
নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে সেবিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী উপদেশ দেন

নিষ্কাম কর্মযোগ বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ

 

শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মযোগ কীভাবে সম্পাদন করতে হবে তা বোঝাতে গিয়ে কিছু উপদেশ দেন। যথা-

নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধির উপদেশ

নিষ্কাম কর্মযোগীদের স্থির নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধি থাকে, কিন্তু যাদের চিত্ত অস্থির তাদের বুদ্ধি অনন্ত ও বহুশাখাবিশিষ্ট হয়ে থাকে। কর্ম যে বুদ্ধির দ্বারা যুক্ত হয়ে যোগে পরিণত হয় তা স্থির বুদ্ধি। এই বুদ্ধি এক দিকেই ধাবিত হয়, বহুদিকে ধাবিত হয় না। এই বুদ্ধি সত্ত্বগুণযুক্ত এবং কখনোই ব্যভিচারী হয় না। লক্ষ্য সর্বদা স্থির থাকে বলে ব্যক্তি কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। যাদের বুদ্ধি এক নয় বহু শাখাবিশিষ্ট এবং অনন্ত, সেসব ব্যক্তির চিত্ত স্থির নয়। তাই অনন্ত কামনার ফলে তারা নিষ্কাম কর্মের সাধন করতে পারেন না। একারণে নিষ্কাম কর্ম সাধন করতে হলে বুদ্ধি এক এবং স্থির হওয়া প্রয়োজন।

নিৗস্ত্রগুণ্য হওয়ার উপদেশ

নিষ্কাম কর্মযোগীকে নিস্ত্রৈগুণ্য হওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। ‘নিস্ত্রৈগুণ্য’ শব্দটির অর্থ হল ত্রিগুণের অতীত। ত্রিগুণ বলতে সত্ত্ব, রজো ও তমোকে বোঝানো হয়েছে। ত্রিগুণাত্মিকা প্রকৃতির বশে থাকলে কামনা-বাসনা ত্যাগ করে নিষ্কাম কর্ম করা যাবে না। বৈদিক কর্মগুলি কাম্যকর্ম হওয়ায় ফল দান করে। সেগুলি ত্রিগুণাত্মক। তাই এই কর্ম ত্যাগ করে নিস্ত্রৈগুণ্য হতে হবে।

নির্দ্বন্দ্ব হওয়ার উপদেশ

কীভাবে ত্রিগুণাতীত হওয়া যাবে সে কথা বলতে গিয়ে শ্রীকৃয় নির্ধন্দ্ব হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন সুখ- দুঃখ, লাভ-অলাভ, রাগ-দ্বেষ, দ্বন্দ্বভাব দূর করতে হবে। সমত্ববুদ্ধিযুক্ত হয়ে স্বধর্মোচিত কর্ম সম্পাদন করে নির্দ্বন্দ্বী হতে হবে। যতদিন চিত্তে দ্বন্দ্বভাব থাকবে ততদিন চিত্ত শান্ত ও সমাহিত হতে পারবে না।

নিত্যসত্ত্বা হওয়ার উপদেশ

‘নিত্যসত্ত্বস্থ’ শব্দটির অর্থ হল সর্বদা সত্ত্বগুণে অবস্থিত থাকা। সত্ত্বগুণের দ্বারা রজো এবং তমোকে অভিভূত করতে পারলে ত্রিগুণের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব বা বিরোধ আছে, তা আর থাকবে না। চিত্ত তখন সম ও শান্ত হয়ে যাবে।

নির্যোগক্ষেস হওয়ার উপদেশ

নির্যোগক্ষেম- শব্দের অন্তর্গত যোগ হল অপ্রাপ্ত বস্তুর লাভ এবং ক্ষেম হল প্রাপ্ত বস্তুর রক্ষা। ব্যক্তি নিষ্কাম কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে কোনো অপ্রাপ্ত বস্তু যেমন লাভ করবেন না তেমনি প্রাপ্তবস্তুর রক্ষা করবেন না। ব্যক্তিকে দুটি ব্যাপারে অনাসক্ত থাকতে হবে এবং আত্মস্থ অর্থাৎ অপ্রমত্ত থেকে স্থির ও অচঞ্চল হয়ে নিষ্কাম কর্মের সাধনায় ব্রতী হতে হবে।

ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জনের উপদেশ

নিষ্কাম কর্মীকে কর্ম সম্পাদনের সময়স মনে রাখতে হবে কর্মেই তার অধিকার; কর্মফলে কোনো অধিকার নেই। কর্মফলের আকাঙ্ক্ষা যেন তার কর্মের প্রবর্তক না হয়।

আরও পড়ুন – যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃতি – অবরোহ এবং আরোহ

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment