বাংলা গদ্যে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও সুকুমার সেনের কৃতিত্ব বা অবদান আলোচনা করো
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অবদান: সমাজবিদ্যা, প্রাচীন ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, সাহিত্য, ভাষাতত্ত্ব সম্পর্কে অত্যন্ত উৎসাহী সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৮৯০-১৯৭৭) বিশ শতকের এক বিদগ্ধ শিল্পী। তাঁর গদ্য রচনার বিষয়ের ব্যাপ্তির সঙ্গে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির এক অপূর্ব মিশেল ঘটিয়েছেন। তাঁর ‘সাংস্কৃতিকী’, ‘ভারত সংস্কৃতি’, ‘ইতিহাস ও সংস্কৃতি’ প্রভৃতি গ্রন্থে ভারতের সংস্কৃতির প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ব্যক্ত হয়েছে। বাংলায় লেখা তাঁর ভাষা বিষয়ক গদ্যগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে ‘বাংলা ভাষাতত্ত্বের ভূমিকা’ (১৯২৯), ‘ভাষা প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ’ (১৯৩৯), ‘ভারতের ভাষা ও ভাষা সমস্যা’ (১৯৪৪), ‘বাঙ্গালা ভাষা প্রসঙ্গে’ (১৯৭৫) প্রভৃতি।
সুকুমার সেনের অবদান: স্বনামধন্য ভাষাতাত্ত্বিক এবং বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার সুকুমার সেনের (১৯০০-১৯৯২) নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়। তাঁর লেখা প্রথম গ্রন্থ ‘The Use of the Cases in Vedic Prose’ (১৯২৮)। এই গ্রন্থটিতে বৈদিক গদ্যভাষার নিয়ম বিবৃত হয়েছে। বাংলা ভাষায় লেখা তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’, ‘বাংলা স্থান নাম’, ‘বাংলার নারীর ভাষা’, ‘বাংলা সাহিত্যে গদ্য’, ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’ (পাঁচটি খণ্ডে), ‘ভারতীয় আর্যসাহিত্যের ইতিহাস’, ‘বাংলা সাহিত্যে গদ্য’, ‘ইসলামি বাংলা সাহিত্য’ প্রভৃতি। এ ছাড়াও ‘গল্পের ভূত’, ‘ক্রাইম কাহিনির কালক্রান্তি’, ‘কলকাতা কাহিনি’, ‘রামকথার প্রাক্ ইতিহাস’, ‘বটতলার ছাপা ও ছবি’, ‘বাংলা কবিতা সমুচ্চয়’ প্রভৃতি গ্রন্থে বিচিত্র বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ও আলোচনার সরসতা লক্ষ করা যায়। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘দিনের পরে দিন যে গেল’ (প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব) অত্যন্ত সুললিত গদ্যে রচিত।
আরও পড়ুন – বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর