সরকারের বিভিন্ন রূপ প্রশ্ন ও উত্তর | XI 2nd Semester (Marks 2)
1. ‘গণতন্ত্র’ বলতে কী বোঝো?
▶ ‘গণতন্ত্র’ কেবল একটি শাসনব্যবস্থা বা সরকারের ধরনকেই বোঝায় না, গণতন্ত্র বলতে এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে জনগণের সম্মতি ও রাজনৈতিক মর্যাদা সাম্যের নীতির ওপর এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্র সমতার নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
2. গণতন্ত্রের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ উল্লেখ করো।
► ইংরেজি ‘Democracy’ শব্দটির বাংলা অর্থ হল ‘গণতন্ত্র’। গ্রিক শব্দ ‘Demos’ এবং ‘Kratos’ থেকে ‘Democracy’ শব্দটি এসেছে, যার প্রথমটির অর্থ হল ‘People’ বা ‘জনগণ’ এবং দ্বিতীয়টির অর্থ হল ‘authority’ বা ‘কর্তৃত্ব’। অতএব ‘গণতন্ত্র’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল-‘জনগণের কর্তৃত্ব’ বা ‘জনগণের শাসন’।
3. সর্বপ্রথম কে, কোন্ গ্রন্থে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি ব্যবহার করেন?
▶ প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিক থুকিডিডিস তাঁর ‘পেলোপনেশীয় যুদ্ধের ইতিহাস’ সংক্রান্ত বইতে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন।
4. গণতন্ত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
▶ গণতন্ত্রের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য-① গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় জনমতের ওপর। ② গণতন্ত্রে ‘গণসার্বভৌমিকতা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ③ গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিক রাজনৈতিক কার্যে অংশগ্রহণের এবং জনমত কার্যকর করারও সুযোগ পায়। ④ গণতন্ত্র হল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন।
5. ব্যাপক অর্থে ‘গণতন্ত্র’ বলতে কী বোঝ?
▶ ব্যাপক অর্থে ‘গণতন্ত্র’ হল এমন একটি ধরন, যেখানে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্য গড়ে ওঠে। এইরূপ গণতন্ত্রে জনগণের হাতে চূড়ান্ত ক্ষমতা ন্যস্ত থাকার কথা বলা হয়েছে। ব্যাপক অর্থে সেই রাষ্ট্রব্যবস্থাকেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বলা হয়েছে, যে রাষ্ট্রব্যবস্থা সাম্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। গণতন্ত্র মানুষকে সমমর্যাদা সম্পন্ন করে।
6. সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?
▶ সংকীর্ণ অর্থে গণতন্ত্র বলতে সেই শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যে শাসনব্যবস্থা জনগণ দ্বারা পরিচালিত হয়।
7. গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে কয়ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী?
▶ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়, যথা- ① প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র, ② পরোক্ষ গণতন্ত্র। আবার শ্রেণিগত দিক থেকে গণতন্ত্রকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন- [a] উদারনৈতিক গণতন্ত্র এবং [b] সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র।
৪. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বলতে কী বোঝ?
▶ যে শাসনব্যবস্থায় শাসনকার্য পরিচালনার জন্য জনগণ সরাসরি ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে; একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও একটি নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হয়ে শাসনতান্ত্রিক নীতি নির্ধারণ, আইন প্রণয়ন, রাষ্ট্রের আয়-ব্যয় নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদেশিক নীতি সম্পর্কে মতামত গ্রহণ প্রভৃতি করে থাকে; এ ছাড়া সরকারকে এইসব ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকে, তাকে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বলা হয়।
9. গণতন্ত্র সম্পর্কে আব্রাহাম লিঙ্কনের সংজ্ঞাটি উল্লেখ করো।
▶ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন গণতন্ত্রের একটি গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্র হল “জনগণের জন্য, জনগণ দ্বারা, জনগণের সরকার” (Government of the people, by the people and for the people)।
10. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের নিয়ন্ত্রকগুলি কী?
▶ প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রকে তিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যথা-① গণভোট, ② গণ উদ্যোগ এবং প্রত্যাহার।
11. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।
▶ প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। এগুলির মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য হল-① প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে বিপ্লব বা বিদ্রোহের সম্ভাবনা থাকে না। কারণ, এই ব্যবস্থায় জনগণই সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে সরকারের নীতি নির্ধারণে সাহায্য করে। ② প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনগণ সরাসরি ও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় বলে আমলাতান্ত্রিকতার শাসন থেকে এই ব্যবস্থা প্রায় মুক্ত থাকে।
12. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।
▶ প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বর্তমানে অচল। কারণ এর কতকগুলি অসুবিধা রয়েছে। এগুলির মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য হল-① সরকার পরিচালনার জন্য প্রয়োজন বিশেষ জ্ঞানের কিন্তু প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় যেসকল সাধারণ জনগণ উপস্থিত থাকেন, তাদের সকলের সরকার পরিচালনার মতো জ্ঞান থাকে না। ② ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের পক্ষেই প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করা যায়, বৃহৎ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা অসম্ভব।
13. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের প্রচলন কোথায় ছিল? বর্তমানে কোথায় প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র প্রচলিত আছে?
▶ প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র প্রচলিত ছিল প্রাচীন গ্রিস এবং রোমে।
▶ বর্তমানে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র প্রায় বিলুপ্ত হলেও সুইটজারল্যান্ডের ছোটো ছোটো কয়েকটি ‘ক্যান্টন’-এ এই ব্যবস্থা প্রচলিত আছে।
14. ‘পরোক্ষ গণতন্ত্র’ বা ‘প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র’ বলতে কী বোঝ?
▶ যে শাসনব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সরাসরি শাসনকার্যে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা করে এবং প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের কাজের জন্য নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে দায়বদ্ধ থাকে, তাকে পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র বলে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সরকারি নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবে তা রূপায়ণ করে থাকেন।
15. পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র প্রচলিত আছে এমন চারটি দেশের নাম করো।
▶ পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র প্রচলিত আছে এমন চারটি দেশের নাম হল-① ভারত, ② মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ও গ্রেট ব্রিটেন, ④ ফ্রান্স।
16. পরোক্ষ গণতন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
▶ পরোক্ষ গণতন্ত্রের দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল-প্রথমত, এরূপ গণতন্ত্রে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের দুটি অংশ থাকে-① একটি রাজনৈতিক অংশ এবং ② অপরটি অ-রাজনৈতিক অংশ। রাজনৈতিক অংশটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে তাঁরা পদচ্যুত হতে পারেন। দ্বিতীয়ত, পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে একাধিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।
17. ‘গণভোট’ বলতে কী বোঝ?
▶ ‘গণভোট’ বলতে সেই ব্যবস্থাকে বোঝায়, যে ব্যবস্থা অনুসারে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে জনগণ মতামত দেন এবং এক্ষেত্রে জনগণ সরাসরি তাঁদের মতামত জানান। বেশিরভাগ জনগণের মতামত পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি গৃহীত হয়।
18. ‘গণ উদ্যোগ’ বলতে কী বোঝ?
▶ প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের কখনও কোনো আইন সরকার দ্বারা মনোনীত না হলে জনগণ নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে আইনটি প্রণয়নের জন্য এগিয়ে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে সরকার অবশেষে আইন প্রণয়নে বাধ্য হন। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় গণ উদ্যোগ।
19. ‘প্রত্যাহার’ কী?
▶ প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন করেন তাঁদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়নের জন্য। জনপ্রতিনিধিগণের কাজে জনগণ সন্তুষ্ট না হলে অথবা প্রতিনিধি যদি শাসনব্যবস্থার কাজে অযোগ্য বা দুর্নীতিপরায়ণ হয়, তবে তাকে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ‘পদচ্যুত’ (Recall) করতে পারেন। একে বলা হয় প্রত্যাহার।
20. গণতন্ত্রের দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।
▶ গণতন্ত্রের দুটি সুবিধা হল-① গণতন্ত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতার পূর্ণ বিকাশ ঘটে। এই ব্যক্তিস্বাধীনতা সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত হয়। ② সরকারের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণ শান্তিপূর্ণ পথ গ্রহণ করতে পারে, বিপ্লবের পথ এড়ানো সম্ভব হয়।
21. গণতন্ত্রের দুটি অসুবিধা বা ত্রুটি উল্লেখ করো।
▶ গণতন্ত্রের দুটি অসুবিধা হল-① অতিরিক্ত স্বাধীনতা প্রদানের ফলে গণতন্ত্রে উচ্ছৃঙ্খলতা লক্ষ করা যায়। এই ব্যবস্থায় ব্যক্তি শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ ভঙ্গ করে। ② গণতন্ত্রকে কেউ কেউ মূর্খের শাসনও বলেছেন। কারণ সমাজে মূর্খের সংখ্যা যেহেতু বেশি সেহেতু তাদের দ্বারা নির্বাচিত ব্যক্তিরাই ক্ষমতায় আসেন।
22. গণতন্ত্রের সাফল্যের শর্তগুলি কী?
▶ গণতন্ত্রকে সাফল্য পেতে হলে কতকগুলি শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন-① গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য দরকার গণতান্ত্রিক জনগণ ও গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানসিকতা। ② গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্যতম শর্ত হল, গণতন্ত্রকে গ্রহণ করার মতো জনগণের ইচ্ছা ও ক্ষমতা। ③ গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা। ④ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন।
23. গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছেন, এমন কয়েকজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর নাম করো।
▶ কোনো কোনো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছেন এবং ত্রুটি দেখিয়েছেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-① প্লেটো, ② অ্যারিস্টট্ল, ও কার্লাইল, ④ হেনরি মেইন, নিক্সে, ⑥ ট্রিটস্ক প্রমুখ।
24. গণতন্ত্রকে সমর্থন করেছেন এমন কয়েকজন রাষ্ট্রদার্শনিকের নাম করো।
▶ গণতন্ত্রকে যাঁরা সমর্থন করেছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযো-ট হলেন-① জন লক, ② মঁতেস্কু, ③ জেমস্ মিল, ④ জাঁ জ্যাক রুশো, ⑤ ব্যোম, জে এস মিল, ⑦ হবহাউস, ৪ টি এইচ গ্রিন, ⑨ আর্নেস্ট বার্কার, ⑩ হ্যারল্ড ল্যাস্কি, ⑪ আব্রাহাম লিঙ্কন, ② ম্যাকাইভার প্রমুখ।
25. প্লেটো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কী কী আপত্তি তুলেছেন?
▶ প্রাচীন গ্রিসের এথেন্সে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল, তার করুণ অবস্থার কথা মনে করেই প্লেটো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলে বলেছেন যে, ① এরূপ ব্যবস্থায় যোগ্য এবং অযোগ্য ব্যক্তি-উভয়েই সমানভাবে সুযোগ পায়② এরূপ ব্যবস্থায় উচ্ছৃঙ্খলতা বৃদ্ধি পায়। ③ গণতন্ত্রে নৈতিকতা বিকাশের অবনতি ঘটে।
26. রাষ্ট্রতাত্ত্বিকগণ গণতন্ত্রকে কয়ভাগে ভাগ করেছেন?
▶ ‘গণতন্ত্র’ ধারণাটিকে বিভিন্ন রাষ্ট্রদার্শনিক ও রাষ্ট্রতাত্ত্বিক বিভিন্নভাবে ভাগ করেছেন। তবে অনেকেই বলেছেন যে, একে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-① উদারনৈতিক গণতন্ত্রের তত্ত্ব, ② গণতন্ত্রের প্রবর বা এলিট তত্ত্ব, ও গণতন্ত্রের বহুত্ববাদী তত্ত্ব, ④ গণতন্ত্রের মার্কসীয় তত্ত্ব।
27. উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে কী বোঝ?
▶ যে গণতন্ত্রের ভিত্তি জনসম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং জনগণের নিকট দায়িত্বশীল একটি সরকার থাকে, তাকে বলে উদারনৈতিক গণতন্ত্র। তা ছাড়াও উদারনৈতিক গণতন্ত্রে একটি নির্বাচিত সরকারের অবস্থিতির কথা বলা হয়, যে সরকার জনগণের স্বার্থে নিয়োজিত। উদারনৈতিক গণতন্ত্রে স্বাধীনতা, সাম্য, পরমতসহিষুতা, সমমর্যাদা প্রভৃতি প্রদান করা হয়।
28. উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
অথবা, উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দুটি নীতি উল্লেখ করো।
▶ উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-① উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় জনগণের সার্বভৌমত্বের ওপর ভিত্তি করে। ② এরূপ গণতন্ত্রে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হয় এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সরকার গঠন করে।
29. গণতন্ত্র সম্পর্কে মার্কসবাদীদের অভিমত কী?
▶ মার্কস, লেনিন প্রমুখ দার্শনিকগণ মনে করেন যে, বুর্জোয়া শাসনের অবসানের পর প্রোলেতারীয় একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে কার্যত শ্রমিক শ্রেণিই ক্ষমতার অধিকারী হবে এবং তারা যে নতুন শাসনব্যবস্থা কায়েম করবে তার ভিত্তি হবে প্রোলেতারীয় একনায়কতান্ত্রিক গণতন্ত্র।
30. গণতন্ত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
▶ গণতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য চারটি বৈশিষ্ট্য হল-① জনমতের ওপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ② গণসার্বভৌমিকতার ধারণাটি গণতন্ত্রেই বিদ্যমান। ও গণতন্ত্রে প্রযুক্ত শাসন হল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন। ④ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিটি নাগরিক যেমন অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে, তেমনই এখানে জনমত কার্যকর করার নানা সুযোগ থাকে।
31. মার্কসবাদীরা গণতন্ত্র সম্পর্কে কীরূপ অভিমত দিয়েছেন?
▶ মার্কসবাদ অনুসারে শ্রমিক শ্রেণি পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করলে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটবে এবং গণতন্ত্র এক নতুন রূপ পরিগ্রহ করবে। শ্রমিকশ্রেণির একনায়কত্ব কায়েম হলে গণতন্ত্র আর সংখ্যালঘুর স্বার্থে সংখ্যালঘুর গণতন্ত্র থাকবে না, তা হবে সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্র। অর্থাৎ শ্রমিক শ্রেণির একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে পূর্বের বুর্জোয়া গণতন্ত্রের সাথে প্রোলেতারীয় গণতন্ত্রের যে পার্থক্যটি সুস্পষ্ট হবে তা হল, বুর্জোয়া ব্যবস্থায় সংখ্যালঘু শ্রেণি গণতন্ত্রকে কায়েম করায় তাদের স্বার্থই রক্ষিত হয়, কিন্তু প্রোলেতারীয় একনায়কত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণি গণতন্ত্রকে কায়েম করায় সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বার্থ রক্ষিত হবে।
32. গণতান্ত্রিক সমাজবাদ বলতে কী বোঝ?
▶ গণতান্ত্রিক সমাজবাদ বলতে এমন একটি রাজনৈতিক মতাদর্শকে বোঝায়, যেখানে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সমন্বয় সাধন করা হয়। গণতান্ত্রিক সমাজবাদ মার্কসবাদের বিপরীত একটি মতবাদ যা শান্তিপূর্ণ পথে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী।
33. গণতান্ত্রিক সমাজবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
▶ গণতান্ত্রিক সমাজবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-① গণতান্ত্রিক সমাজবাদ রাষ্ট্র বিষয়ে বিবর্তনের ধারাকে আলোকপাত করেছে। তাঁদের দৃষ্টিতে রাষ্ট্র হল একটি শ্রেণি-নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। গণতান্ত্রিক সমাজবাদীরা মনে করেন সমাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় একটি প্রতিষ্ঠান হল রাষ্ট্র। ② গণতান্ত্রিক সমাজবাদ ব্যক্তি মালিকানার কোনোরূপ বিলোপ চায়নি। তাঁরা চেয়েছেন মিশ্র-অর্থনীতির তত্ত্বটিকে প্রয়োগ করতে। মিশ্র অর্থ ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রই সমানভাবে প্রসারিত হয়।
34. গণতান্ত্রিক সমাজবাদের পক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
▶ গণতান্ত্রিক সমাজবাদের পক্ষে দুটি যুক্তি হল-① গণতান্ত্রিক সমাজবাদ যেহেতু পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ইতিবাচক দিকগুলিকে নিয়ে গড়ে উঠেছে, সেহেতু এই মতবাদ পুঁজিতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ত্রুটিসমূহ থেকে মুক্ত একটি মতবাদ। ② গণতান্ত্রিক সমাজবাদ হিংসাবর্জিত একটি মতবাদ। কারণ গণতান্ত্রিক সমাজবাদ চায় শান্তিপূর্ণ পথে ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে বাস্তবায়িত করতে।
35. গণতান্ত্রিক সমাজবাদের বিপক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
▶ গণতান্ত্রিক সমাজবাদের বিপক্ষে দুটি যুক্তি হল-① অনেকে গণতান্ত্রিক সমাজবাদকে ‘সোনার পাথরবাটি’র মতো এক অলীক কল্পনা বলে মনে করেন। কারণ তাঁরা মনে করেন, গণতান্ত্রিক সমাজবাদীরা পুঁজিবাদের কাঠামোর মধ্যেই সমাজতন্ত্রকে বাস্তবায়িত করার কথা বলেন। কিন্তু পুঁজিবাদে সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বার্থই উপেক্ষিত হয়।② মার্কসবাদীরা গণতান্ত্রিক সমাজবাদের সমালোচনা করে বলেন যে, রাষ্ট্র যেহেতু শ্রেণি শাসনের যন্ত্র, সেহেতু রাষ্ট্র শ্রেণি নিরপেক্ষভাবে অবস্থান করে সংখ্যাগরিষ্ঠের কল্যাণ সাধন করতে পারে না।
36. সর্বাত্মকবাদী ব্যবস্থা কাকে বলে?
▶ সর্বাত্মকবাদ বলতে এমন একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত শাসন- ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেখানে রাষ্ট্রের কোনো প্রকার বিরোধিতা বা সমালোচনা সহ্য করা হয় না, যেখানে শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি সকল বিষয়ই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং যে শাসনব্যবস্থায় প্রাধান্য পায় উগ্রজাতীয়তাবাদ ও কমিউনিস্ট বিরোধিতা।
37. সর্বাত্মকবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
▶ সর্বাত্মকবাদের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① সর্বাত্মকবাদীরা রাজনৈতিক সর্বনিয়ন্ত্রণবাদকে আশ্রয় করেছে। ② এই ব্যবস্থায় একটিমাত্র রাজনৈতিক দলের কথা বলা হয়। এবং সর্বাত্মকবাদ চায় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের দ্বারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে সংকুচিত করতে।
38. সর্বাত্মকবাদের দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।
▶ সর্বাত্মকবাদের দুটি সীমাবদ্ধতা হল-① সর্বাত্মকবাদ জনগণের সার্বভৌমিকতাকে উপেক্ষা করে একদলীয় ও একনেতার শাসনকে স্বাগত জানায়। তাই এটি ভুল নীতি। ② সর্বাত্মকবাদ গণতান্ত্রিক আদর্শ ও মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে কার্যত স্বাধীনতা, সাম্যের আদর্শকে পাশ কাটিয়ে গেছে।
39. সর্বাত্মকবাদ বলতে কী বোঝায়?
▶ সর্বাত্মকবাদ হল এক ধরনের সামগ্রিক স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। এ এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে কোনো বিরোধী কণ্ঠস্বর বা বিরোধী দল বা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি কোনো কিছুই থাকে না। যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন স্বৈরাচারী শাসকের হাতে কুক্ষীগত থাকে। এই স্বৈরাচারী শাসক তাঁর অবাধ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব কিছুই, এমনকি নাগরিকদের ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনকেও নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
40. সর্বাত্মকবাদের সংজ্ঞা দাও।
▶ সর্বাত্মকবাদ হল এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে বিরোধী দল ও বিরোধী মত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকে। এ হল এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে সমস্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন স্বৈরাচারী শাসকের হাতে কুক্ষীগত থাকে যিনি তার সর্বগ্রাসী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের মানুষদের জীবন ও স্বাধীনতাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন।
41. সর্বাত্মকবাদ সম্পর্কে মুসোলিনির বক্তব্য কী ছিল?
▶ ইতালির একনায়ক সর্বাত্মকবাদের প্রবক্তা বেনিতো মুসোলিনির বক্তব্য ছিল, ‘সব কিছুই রাষ্ট্রের মধ্যে, রাষ্ট্রের বাইরে কিছু নেই, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও কিছু নেই’।
42. সর্বাত্মকবাদের উদাহরণ উল্লেখ করো।
▶ সর্বাত্মকবাদের ঐতিহাসিক উদাহরণ হল হিটলারের নাৎসি জার্মানি (১৯৩৩-৪৫), স্ট্যালিনের সোভিয়েত ইউনিয়ন (১৯২৪-৫৩), মুসোলিনির ইতালি (১৯২২-৪৩), মাও জে দঙ-এর চিন (১৯৪৯- ৭৬) এবং নে উইনের বার্মা (১৯৬২-৮৮)। বর্তমান সময়ে সর্বাত্মকবাদের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন-এর রাজনৈতিক ব্যবস্থা।
43. সর্বাত্মকবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী?
▶ সর্বাত্মকবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① সর্বাত্মক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, ② রাষ্ট্রের জন্য ব্যক্তি, ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র নয়, ও একদলীয় ব্যবস্থা, ④ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অনুপস্থিতি, ⑤ গণমাধ্যমের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি।
44. সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি দোষের কথা উল্লেখ করো।
▶ সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি দোষ হল-① ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থী, ② অগণতান্ত্রিক, ③ একদলীয় শাসন, ④ ব্যক্তি পরিসরে রাষ্ট্রের প্রবেশ এবং সৃজনশীলতার চরম শত্রু।
45. সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি গুণ-এর কথা উল্লেখ করো।
▶ সর্বাত্মকবাদের প্রধান পাঁচটি গুণ হল-① দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণ ও রূপায়ণের ক্ষমতা, ② সংকটকালীন সময়ের উপযোগী, ③ আর্থিক বিকাশ, ④ একত্রে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ এবং ⑤ সামাজিক শৃঙ্খলা ও কঠোর অনুশাসন।
46. কর্তৃত্ববাদ কাকে বলে?
▶ কর্তৃত্ববাদ হল গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত একটি মতবাদ। কর্তৃত্ববাদ বলতে এমন এক মতবাদকে বোঝায় যেখানে সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রক হল কর্তৃত্ব বা কর্তৃপক্ষ। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে, কর্তৃত্বের প্রতি অন্ধ আনুগত্য হল কর্তৃত্ববাদ।
47. কর্তৃত্ববাদের উৎস হিসেবে কোন্ মতবাদের কথা বলা হয়?
▶ কর্তৃত্ববাদের উৎস হিসেবে ঊনবিংশ শতাব্দীর ভাববাদ বা আদর্শবাদের কথা বলা হয়। আদর্শবাদ অনুসারে আগে রাষ্ট্র পরে ব্যক্তি। রাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে ব্যক্তি তার অস্তিত্বকে কল্পনা করতে পারে না। তাই রাষ্ট্রবিরোধী কোনো অধিকার নাগরিকদের থাকবে না। রাষ্ট্র কর্তৃত্ব যাই আদেশ দিক তা নাগরিকদের মেনে চলতে হবে।
48. কর্তৃত্ববাদের সংজ্ঞা দাও।
▶ কর্তৃত্ববাদ এমন এক মতবাদ যেখানে ব্যক্তির স্বাধীন চিন্তা ও স্বাধীন কর্মকাণ্ডের বদলে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের প্রতি অন্ধ আনুগত্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থায় সমস্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন নেতা বা গোষ্ঠীর কর্তৃত্বে থাকে, এই নেতা বা গোষ্ঠী দেশের সংবিধানকে অগ্রাহ্য করে স্বেচ্ছাচারীভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখেন।
49. কর্তৃত্ববাদের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করো।
▶ কর্তৃত্ববাদের দৃষ্টান্ত হিসেবে স্পেনে ফ্রাঙ্কোর শাসনের (১৯৩৯) কথা, কম্বোডিয়ায় কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির শাসনের (১৯৭৯) কথা, আর্জেন্টিনায় জুয়ান পেরনের শাসনের কথা, ইজিপ্টে প্রেসিডেন্ট নাসের-এর শাসনের কথা উল্লেখ করা যায়।
50. কর্তৃত্ববাদের পাঁচটি শ্রেণির কথা উল্লেখ করো।
▶ কর্তৃত্ববাদের পাঁচটি শ্রেণি হল-① দলীয় শাসনের কর্তৃত্ববাদ, ② সামরিক শাসনের কর্তৃত্ববাদ, ③ ব্যক্তিতান্ত্রিক শাসনের কর্তৃত্ববাদ, ④ পরোক্ষ সামরিক শাসনের কর্তৃত্ববাদ এবং ⑤ মিশ্র গণতন্ত্রের কর্তৃত্ববাদ।
51. কর্তৃত্ববাদের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের বিবরণ দাও।
▶ কর্তৃত্ববাদের কতকগুলি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে এগুলি হল- ① সীমিত রাজনৈতিক স্বাধীনতা, ② নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম, ও বহু মত বহু পথের বহুত্ববাদের প্রত্যাখ্যান, ④ কর্তৃত্বের হাতে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা এবং নামমাত্র গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব।
52. কর্তৃত্ববাদের সুবিধাগুলি কী?
▶ কর্তৃত্ববাদের উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলি হল-① কর্তৃত্ববাদী প্রশাসন জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, ② কর্তৃত্ববাদে সরকারের স্থিতিশীলতা বা স্থায়িত্ব বজায় থাকে, ও কর্তৃত্ববাদী প্রশাসন একক নেতৃত্বের পরিচালনায় চালিত হয় বলে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব হয় এবং ④ কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বাস্তব রূপায়ণ অনেক সহজ হয়।
53. কর্তৃত্ববাদের অসুবিধাগুলি কী?
▶ কর্তৃত্ববাদের অসুবিধাগুলি হল-① কর্তৃত্ববাদে সীমিত রাজনৈতিক অধিকার দেওয়া হয় বলে নাগরিক স্বাধীনতাও সীমিত থাকে। ② কর্তৃত্ববাদে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের ফলে দুর্নীতির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। ও কর্তৃত্ববাদে যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একজন কর্তৃত্ববাদী শাসক বা গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষীগত থাকে বলে স্বৈরাচারের আধিক্য দেখা দেয়। ④ কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থায় চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করে রাখা হয় বলে নাগরিকদের মধ্যে নতুন উদ্ভাবনা বা সৃজনশীল কাজের বিকাশ ঘটে না।⑤ কর্তৃত্ববাদে যেভাবে বিরুদ্ধ মতামতকে দমন করা হয় তার ফলে জনগণের মধ্যে সামাজিক অস্থিরতা ও অসন্তোষ দেখা দেয়।
54. প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বিলুপ্তির দুটি কারণ উল্লেখ করো।
▶ প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র বিলুপ্তির দুটি কারণ হল-① প্রাচীন গ্রিসের যে নগররাষ্ট্রগুলিতে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র একসময় চালু ছিল তা আধুনিক রাষ্ট্রে সম্ভব নয়। কারণ আধুনিক রাষ্ট্রের আয়তন ও জনসংখ্যা অনেক বেশি। ② আধুনিক রাষ্ট্রের কাজকর্মের প্রকৃতি অনেক জটিল। তাই রাষ্ট্রীয় কাজকর্মের সব বিষয়ে জনগণের পক্ষে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ কোনোমতেই সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন – রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর