ভারতীয় নীতিবদ্যিার দৃষ্টিতে কাম পুরুষার্থের ধারণা সংক্ষেপে আলোচনা করো

ভারতীয় নীতিবদ্যিার দৃষ্টিতে কাম পুরুষার্থের ধারণা সংক্ষেপে আলোচনা করো

ভারতীয় নীতিবদ্যিার দৃষ্টিতে কাম পুরুষার্থের ধারণা সংক্ষেপে আলোচনা করো
ভারতীয় নীতিবদ্যিার দৃষ্টিতে কাম পুরুষার্থের ধারণা সংক্ষেপে আলোচনা করো

পুরুষার্থরূপে কাম

অধিকাংশ ভারতীয় দার্শনিকদের মতে, মোক্ষই মূল পুরুষার্থ। ধর্ম, অর্থ ও কাম মোক্ষ লাভের উপায়মাত্র। কিন্তু চার্বাক মতে – মোক্ষ কোনো পুরুষার্থই নয়। তাঁদের মতে- “কামেব পুরুষার্থঃ” অর্থাৎ কামই হল মূল পুরুষার্থ।

কাম শব্দের অর্থ

সাধারণভাবে ‘কাম’ শব্দটি কামনা, প্রেম, ইন্দ্রিয় সুখ ও লোভ অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে ‘কাম’ শব্দটি মূলত দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। একটি ব্যাপক অর্থে আর অন্যটি সংকীর্ণ অর্থে। ব্যাপক অর্থে ‘কাম’ বলতে ছয়টি ইন্দ্রিয় (চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক ও মন)-এর সুখ বা আনন্দকে বোঝায়। আর সংকীর্ণ অর্থে ‘কাম’ বলতে কেবলমাত্র দৈহিক সুখকে নির্দেশ করা হয়।

কাম একটি প্রবৃত্তি

বাস্তবমুখী ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে মানুষের জীবনে দৈহিক সুখসম্ভোগ যে প্রয়োজন সে কথা স্বীকার করা হয়েছে। সেই কারণে কামের পরিচর্যার জন্য ও দাম্পত্য জীবনের জন্য গার্হস্থ্য আশ্রমের উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণ অর্থে ‘কাম’ শব্দটিকে বিচার করে দেখা যায় যে, কাম একটি প্রবৃত্তি যা চরিতার্থতার জন্য উন্মুখ থাকে। প্রশ্রয় পেলে কাম তৃপ্ত ও প্রশমিত হওয়ার পরিবর্তে ক্রমবর্ধমান হয়। তাই মানুষ যতই ইন্দ্রিয়কে পরিতৃপ্ত করে ইন্দ্রিয়ের ভোগলিপ্সা ততই বৃদ্ধি পায়। আর মানুষ প্রবৃত্তিমার্গে বিচরণ করে।

কাম মূলত গার্হস্থ্য ধর্ম

জীব সৃষ্টির জন্য কামের প্রয়োজন, কিন্তু শুধু কামের জন্য কামাচরণ-এটা নিন্দনীয়। শাস্ত্রে উল্লেখ আছে “পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভাৰ্য্যা।” অর্থাৎ পুত্র উৎপাদনের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ অন্যথায় তা বৈধ বলে স্বীকৃত নয়। যে কাম অসংযত পরিতৃপ্তি কামনা করে সেই কাম প্রকৃতপক্ষে লালসা। লালসা মনুষ্যজীবনে বিশৃঙ্খলা আনে।

কামের নিয়ন্ত্রকরূপে ধর্ম: কাম নিজে সুখস্বরূপ হলেও তা সুখলাভের উপায় নয়। কাম হল গার্হস্থ্য ধর্ম। কাম ব্যতীত গৃহস্থের সংসার জীবন পালন করা সম্ভব নয়। কিন্তু অবৈধ কামের বশবর্তী হলে জীবনে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। তাই কামের ক্ষেত্রে ধর্ম নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে। ধর্ম কামকে ততটাই প্রশয় দেয় যতটা তা মানুষকে বেঁচে থাকার প্রেরণা দেয়।

আরও পড়ুন – যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃতি – অবরোহ এবং আরোহ

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment