নির্বাচন এবং প্রতিনিধিত্ব প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণি 2nd সেমেস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান UNIT 6

নির্বাচন এবং প্রতিনিধিত্ব প্রশ্ন ও উত্তর | একাদশ শ্রেণি 2nd সেমেস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান UNIT 6

নির্বাচন এবং প্রতিনিধিত্ব প্রশ্ন ও উত্তর
নির্বাচন এবং প্রতিনিধিত্ব প্রশ্ন ও উত্তর

1. FPTP পদ্ধতি বলতে কী বোঝ?

▶ সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতি হল একধরনের নির্বাচনি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি নির্বাচন কেন্দ্রে যে প্রার্থী অন্যসব প্রার্থীর চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে থাকেন, তাকে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করা হয়। এখানে একটি নির্বাচন কেন্দ্রে ভোটারদের যত ভোট পড়ে, সেই মোট ভোটের মধ্যে বিজয়ী প্রার্থীকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার কোনো দরকার নেই।

2. FPTP পদ্ধতির দুটি সুবিধা লেখো।

▶ সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতি বা FPTP-র সুবিধাগুলি হল-

① সহজ নির্বাচনি ব্যবস্থা: সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতির সবচাইতে বড়ো সুবিধা হল এর মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। এটি এতটাই সহজ যে, একেবারে অতি সাধারণ ভোটার, যাদের রাজনীতি বা নির্বাচন সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই, তাঁরাও সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতির ভোটদান ব্যবস্থা ভালোভাবে বুঝতে পারেন। ফলে একটি নির্বাচন কেন্দ্রের জন্য একজন প্রার্থীকে খুব সহজেই ভোটার নিজের একটি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারেন।

② স্থিতিশীল সরকার: সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থায় বড়ো রাজনৈতিক দল বা জোটের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে পাঁচ বছরের জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনের কাজ অনেকটাই সহজ হয়।

3. FPTP পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।

▶ সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতি বা FPTP-র অসুবিধাগুলি হল-

① সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভাজন: সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলি সাধারণ ভোটারদের চেয়ে তাদের ‘ভোট ব্যাংক’ গড়ে তোলার দিকে বেশি নজর দেয়। কারণ কোনো রাজনৈতিক দল নিজেদের অনুগত ভোটারদের নিয়ে ‘ভোট ব্যাংক’ গড়ে তুলতে পারলে তার ভোটে জেতার রাস্তা অনেক সহজ হয়ে যায়। এর ফলে সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভাজন ও তোষণের রাজনীতির উদ্ভব ঘটে। এধরনের প্রবণতা সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়।

② প্রতিনিধিত্বের অসম ব্যবস্থা: সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতি বা FPTP-র সবচেয়ে বড়ো অসুবিধা হল, এই পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোটারের সমর্থন নিয়ে একজন প্রার্থী জিতে যেতে পারেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে বহুদলীয় ব্যবস্থায় একটি নির্বাচন কেন্দ্রে ভোট ভাগাভাগির সুযোগে একজন প্রার্থীর মোট ভোটের চেয়ে অনেক কম ভোট পেয়ে জিতে যাওয়াটা একমাত্র সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতি বা FPTP-তেই সম্ভব। সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা অন্যকোনো ব্যবস্থায় এমনটা ভাবাও যায় না। এই কারণে FPTP পদ্ধতিকে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের অত্যাচার’ (‘Tyranny of the majority’) বলে অভিহিত করা হয়েছে।

4. সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বলতে কী বোঝ?

▶ কোনো দেশের আইনসভায় সমস্ত সম্প্রদায় ও শ্রেণির নাগরিকদের সমানুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা হল সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব। এই ব্যবস্থায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল বা যে-কোনো গোষ্ঠী তাদের সমর্থনে প্রদত্ত ভোটের সমানুপাতিক হারে প্রতিনিধি পাঠাতে পারে। এজন্য সমগ্র দেশকে কতগুলি নির্বাচনি এলাকায় ভাগ করা হয়।

5. PR System-এর দুটি পদ্ধতি কী কী?

▶ সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দুটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে-① হেয়ার পদ্ধতি বা একক হস্তান্তরযোগ্য ভোেট পদ্ধতি, ② তালিকা পদ্ধতি।

6. কে, কবে হেয়ার পদ্ধতির উল্লেখ করেন?

▶ ইংরেজ লেখক টমাস হেয়ার সর্বপ্রথম 1851 খ্রিস্টাব্দে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটপদ্ধতির কথা উল্লেখ করেন। পরে 1857 খ্রিস্টাব্দে The Mechinary of Representation এবং 1859 খ্রিস্টাব্দে The Election of Representative নামক দুটি গ্রন্থে তিনি এ বিষয়ে বিশদে আলোচনা ও বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেন।

7. হেয়ার পদ্ধতি বলতে কী বোঝ?

▶ একক হস্তান্তরযোগ্য ভোট পদ্ধতি ‘হেয়ার পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। হেয়ার পদ্ধতি অনুসারে, প্রতিটি নির্বাচনি এলাকা থেকে কমপক্ষে তিনজন প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। নির্বাচনি এলাকায় আসনসংখ্যা যাই হোক না কেন, প্রতিটি ভোটদাতার কার্যকরী ভোটের সংখ্যা হবে 1টি। ভোটদাতা ব্যালটপত্রে প্রার্থীদের নামের পাশে 1, 2, 3, 4 – ইত্যাদি সংখ্যা লিখে নিজের পছন্দ প্রকাশ করতে পারেন। প্রার্থীদের মধ্যে যাকে ভোটদাতার সবচেয়ে বেশি পছন্দ তার নামের পাশে তিনি 1 লিখে দেন। অন্যান্য নামের পাশে পছন্দের ক্রম অনুসারে 2, 3, 4 প্রভৃতি লিখে পছন্দ প্রকাশ করতে পারেন। প্রথম পছন্দ প্রকাশ করা ভোটদাতার পক্ষে বাধ্যতামূলক।

৪. ‘কোটা’ বলতে কী বোঝ?

▶ প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্বাচিত হওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্টসংখ্যক ভোট পেতে হয়। একে ‘কোটা’ (Quota) বলে।

9. ‘ড্রপ কোটা’ বলতে কী বোঝ?

▶ আসনসংখ্যার সঙ্গে । যোগ করে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে তা দিয়ে মোট বৈধ ভোটসংখ্যাকে ভাগ করতে হয়। এরপর ভাগফলের সঙ্গে 1 যোগ করে কোটা পাওয়া যায়। একে ‘ড্রপ কোটা’ (Droop Quota) বলা হয়।

11. তালিকা পদ্ধতি কাকে বলে?

▶ যে পদ্ধতিতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নির্বাচন কেন্দ্রে আসনসংখ্যার সমান নিজ দলের প্রার্থীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে। নির্বাচকমণ্ডলী তাঁদের পছন্দ অনুসারে যে-কোনো একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীতালিকাতে ভোট দান করেন।

12. সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পক্ষে দুটি যুক্তি দাও।

▶ সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সপক্ষে দুটি যুক্তি হল-

① গণতন্ত্রসম্মত: সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রসম্মত বলে অভিহিত করা হয়। এই ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘিষ্ঠ উভয়প্রকার রাজনৈতিক দল তাদের শক্তির আনুপাতিক হারে আইনসভায় আসন লাভ করতে পারে। সমানুপাতিক হারে প্রতিটি দলের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ গণতন্ত্রের বুনিয়াদকে সুদৃঢ় করে।

② রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধির সহায়ক: এই ব্যবস্থায় প্রতিটি ভোটদাতাকে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য তাঁর পছন্দ প্রকাশ করতে হয়। এর ফলে রাজনৈতিক চেতনার প্রসার ঘটে। প্রতিনিধিত্বের এই ব্যবস্থায় ভোটদাতা সম্যকভাবে এটা উপলব্ধি করতে পারেন যে, তাঁর দেওয়া একটি ভোটের মূল্য অপরিসীম। এই উপলব্ধি নাগরিকদের দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করে।

13. সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিপক্ষে দুটি যুক্তি দাও।

▶ সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিপক্ষে দুটি যুক্তি হল-

② জটিল ও বিভ্রান্তিকর: এই পদ্ধতি বস্তুতপক্ষে জটিল, ব্যয়বহুল এবং বিভ্রান্তিকর। বিশেষত হেয়ার পদ্ধতি অত্যন্ত দুর্বোধ্য। জনগণের বৃহৎ অংশ অজ্ঞ ও অশিক্ষিত হলে এই পদ্ধতি বাস্তবায়িত করা মুশকিল হয়ে পড়ে।

② জাতীয় স্বার্থের প্রতিকূল: সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নীতি গৃহীত হলে জাতীয় জীবনে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। এই ব্যবস্থায় দলগত স্বার্থ প্রাধান্য পাওয়ায় বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থ অবহেলিত হয়। সমাজ পরস্পরবিরোধী বিভিন্ন দল ও স্বার্থগোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে পড়ে। এর ফলে জাতীয় অনৈক্যের সৃষ্টি হয়।

14. ভারতের নির্বাচন কমিশনের দুটি কার্যাবলি লেখো।

▶ ভারতীয় সংবিধানের 324(1) নং ধারা অনুযায়ী ভারতের নির্বাচন কমিশনের দুটি কার্যাবলি হল-

① ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংশোধন: লোকসভা ও বিধানসভার প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন ও উপনির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংশোধন নির্বাচন কমিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

② নির্বাচনি কর্মী নিয়োগ: লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচনগুলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনি কর্মী নিয়োগের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকে অনুরোধ করে থাকে।

15. ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

▶ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উপাদান হল নির্বাচনি ব্যবস্থা। ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হল-

① সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার: সংবিধানের 326 নং ধারায় সার্বিক প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে ধনী-নির্ধন-স্ত্রী-পুরুষ-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে 18 বছর বা 18 বছরের বেশি বয়সের প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে।

② সমপ্রতিনিধিত্বের নীতি: ভারতে লোকসভা এবং বিধানসভার সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে মোট ভোটদাতাদের সংখ্যাগত সমতার নীতির ভিত্তিতে নির্বাচনি এলাকা গঠন করা হয়।

16. নির্বাচন কমিশনের দুটি ত্রুটি উল্লেখ করো।

▶ নির্বাচন কমিশনের দুটি ত্রুটি হল-

① কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে কমিশনের ক্ষমতাহীনতা: নির্বাচনের মতো এক বিরাট কর্মযজ্ঞ সম্পাদনের জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগের প্রয়োজন। কিন্তু এঁদের নিয়োগ কিংবা চাকরির শর্তাবলি নিয়ন্ত্রণ করার কোনো ক্ষমতা কমিশনের নেই। অথচ কেন্দ্রীয় জনকৃত্যক কমিশন, সুপ্রিমকোর্ট প্রভৃতির হাতে ওই ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

② কমিশনের সুপারিশ বাধ্যতামূলক নয়: নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ ও পরামর্শ মেনে নিতে কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য নয়। তাই কমিশনের যেসব সুপারিশ ক্ষমতাসীন দল বা মোর্চার অনুকূলে যায়, কেন্দ্রীয় সরকার কেবল সেগুলিকেই গ্রহণ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন নির্বাচন বিভাগ (an Independent Election Department) গঠনের প্রস্তাব দিলেও সেই প্রস্তাব অদ্যাবধি বাস্তবে রূপায়িত হয়নি।

17. ভারতীয় সংবিধানের কোন্ অংশে নির্বাচন কমিশনের উল্লেখ আছে? ভারতীয় সংবিধানের কত নং ধারায় নির্বাচন কমিশন গঠনের উল্লেখ আছে?

▶ ভারতীয় সংবিধানের পঞ্চদশ অংশে নির্বাচন কমিশনের উল্লেখ আছে।

▶ ভারতীয় সংবিধানের 324(2) নং ধারায় নির্বাচন কমিশন গঠনের উল্লেখ আছে।

18. কবে থেকে বহু সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনের ধারণা চালু হয়? আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারদের কে নিয়োগ করেন?

▶ 1993 খ্রিস্টাব্দ থেকে বহু সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনের ধারণা চালু হয়।

▶ আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।

19. আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার হওয়ার যোগ্য কারা? আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের পূর্বে রাষ্ট্রপতিকে কার সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়?

▶ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিগণ অথবা অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিবের পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার হওয়ার যোগ্য।

▶ আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের পূর্বে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়।

20. মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কীভাবে নিযুক্ত হন?

▶ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক রাজ্য সরকারের সুপারিশক্রমে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিযুক্ত হন।

21. কত খ্রিস্টাব্দের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুসারে ভারতের প্রতিটি জেলায় একজন করে জেলা নির্বাচন আধিকারিক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে? ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণের বিষয়টি সংবিধানের কত নং ধারায় উল্লেখিত আছে?

▶ 1966 খ্রিস্টাব্দের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুসারে ভারতের প্রতিটি জেলায় একজন করে জেলা নির্বাচন আধিকারিক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

▶ ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণের বিষয়টি উল্লিখিত আছে সংবিধানের 324(5) নং ধারায়।

22. মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ছাড়া অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের কীভাবে পদচ্যুত করা হয়? নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বেতন, ভাতা ইত্যাদি কোন্ তহবিল থেকে প্রদান করা হয়?

▶ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সুপারিশক্রমে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের পদচ্যুত করতে পারেন।

▶ ভারতের সঞ্চিত তহবিল থেকে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বেতন, ভাতা ইত্যাদি প্রদান করা হয়।

23. ভারতের নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠিত হয়?

▶ ভারতে একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও দুজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। প্রতিটি রাজ্যে একজন মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক থাকেন ও প্রতিটি জেলায় একজন করে নির্বাচনি অফিসার নিয়োগ করা হয়।

24. ভারতের সাধারণ নির্বাচনে বা অন্যান্য নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কেন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেন? ভারতের সাধারণ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট কে প্রকাশ করে?

▶ ভারতে নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অবাধ করার জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়।

▶ নির্বাচন কমিশন ভারতের সাধারণ নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে।

25. নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ রাখার জন্য যেসব ব্যবস্থা সংবিধানে উল্লেখিত আছে তার একটি উল্লেখ করো।

▶ নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধার জন্য ব্যয় পার্লামেন্টের অনুমোদন সাপেক্ষ করার পরিবর্তে ভারতের সঞ্চিত তহবিলের ওপর ধার্য করা হয়েছে।

26. ভারতের অঙ্গরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট কে প্রকাশ করে? কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি প্রতীক নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তার মীমাংসা কে করে?

▶ ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

▶ কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি প্রতীক নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে নির্বাচন কমিশন তার মীমাংসা করে।

27. নির্বাচন প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব কার কাছে পেশ করতে হয়? নির্বাচন কমিশনের মতামত কি কেন্দ্রীয় সরকার মানতে বাধ্য?

▶ নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচন প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয়ের হিসাব পেশ করতে হয়।

▶ না, নির্বাচন কমিশনের মতামত কেন্দ্রীয় সরকার মানতে বাধ্য নয়।

28. ভারতে নির্বাচকদের তালিকা প্রকাশ করার দায়িত্ব কার? কোনো নির্বাচনি কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা করার অধিকারী কে?

▶ ভারতে নির্বাচকদের তালিকা প্রকাশ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

▶ কোনো নির্বাচনি কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা করার অধিকারী নির্বাচন কমিশন।

29. সংসদের কোনো সদস্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তা বিচারবিবেচনা করার জন্য রাষ্ট্রপতি কার পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য? নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাজ কী?

▶ সংসদের কোনো সদস্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তা বিচারবিবেচনা করার জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য।

▶ কমিশন কর্তৃক ঘোষিত আচরণবিধি মান্য করা হচ্ছে কি না তা পর্যালোচনা করে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন পেশ করাই হল নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাজ।

30. রাজ্য আইনসভার কোনো সদস্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, তা বিচারবিবেচনা করার জন্য রাজ্যপাল কার পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য?

▶ রাজ্য আইনসভার কোনো সদস্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, তা বিচারবিবেচনা করার জন্য রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য।

31. ভারতে আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারগণের কাজের সময় কখন?

▶ ভারতে আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনারগণের কাজের সময় নির্বাচনের তিন মাস আগে থেকে তিন মাস পর পর্যন্ত।

32. পদমর্যাদার দিক থেকে ভারতের নির্বাচন কমিশনারগণ কোন্ আদালতের বিচারপতিদের সমান মর্যাদা ভোগ করেন?

▶ পদমর্যাদার দিক থেকে ভারতের নির্বাচন কমিশনারগণ সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের সমান মর্যাদা ভোগ করেন।

33. মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কার দ্বারা নিযুক্ত হন? ভারতে রাজনৈতিক দলগুলিকে স্বীকৃতি প্রদান করে কে?

▶ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিযুক্ত হন।

▶ ভারতে রাজনৈতিক দলগুলিকে স্বীকৃতি প্রদান করে নির্বাচন কমিশন।

34. ভারতীয় সংবিধানের কত নং ধারা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার জাতীয় দায়িত্ব নির্বাচনে কমিশনের হাতে অর্পণ করা হয়েছে?

▶ ভারতীয় সংবিধানের ভারতীয় সংবিধানের 324(1) নং ধারা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার জাতীয় দায়িত্ব নির্বাচনে কমিশনের হাতে অর্পণ করা হয়েছে।

35. ভারতে কোনো কেন্দ্রের নির্বাচনি প্রার্থীকে কোথায় মনোনয়নপত্র পেশ করতে হয়? ভারতে কোনো কেন্দ্রের নির্বাচন কীভাবে স্থগিত রাখা যায়?

▶ ভারতে কোনো কেন্দ্রের নির্বাচনি প্রার্থীকে সেই কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র পেশ করতে হয়।

▶ ভারতে কোনো কেন্দ্রের নির্বাচন নির্বাচনি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে স্থগিত রাখা যায়।

36. ভারতে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনি প্রতীক চিহ্ন বিতরণ করে কোন্ সংস্থা? ভারতের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের কে নিয়োগ করেন?

▶ ভারতে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনি প্রতীক চিহ্ন বিতরণ করে নির্বাচন কমিশন।

▶ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ভারতের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।

37. ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিচার সংক্রান্ত কার্য কাকে বলে?

ভারতের পার্লামেন্ট বা সংসদ লোকসভা বা রাজ্যসভার কোনো কক্ষের কোনো সদস্যের অযোগ্যতার ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন দেখা দিলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আগে রাষ্ট্রপতি বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় (103 নং ধারা)। একে ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিচার সংক্রান্ত কার্য বলে অভিহিত করা হয়।

38. ভারতে নির্বাচনি সংস্কারের জন্য গঠিত দুটি কমিটির নাম লেখো।

▶ ভারতে নির্বাচনি সংস্কারের জন্য গঠিত দুটি কমিটি হল-তারকুণ্ডে কমিটি (1974) এবং ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত কমিটি (1998)।

39. কত তম সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে 18 বছরের বেশি বয়সি ভারতীয় নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে?

▶ 61তম (1989) সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে 18 বছর কিংবা 18 বছরের বেশি বয়সি ভারতীয় নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে।

আরও পড়ুন – রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল ধারণাসমূহ ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment