কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম উল্লেখ করে বাংলা কাব্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো
ছদ্মনাম: ‘স্ফুলিঙ্গ সমাদ্দার’, ‘রূপচাঁদ পক্ষী’ ছদ্মনামে কাব্যচর্চা করেছিলেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়।
অবদান: পঞ্চাশ দশকের অন্যতম একজন তরুণ বাঙালি কবি ছিলেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়। জীবনানন্দের পরবর্তী সময়ে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিভাবান কবি হিসেবে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবস্থান। তিনি, তাঁর কবিতাকে ‘পদ্য’ বলেছেন। তাঁর লেখার মধ্যে চিন্তা-চেতনার আভাস, ভাষাশৈলী ও ভাষা বৈপরীত্য পরিলক্ষিত হয়। ১৯৫৬ সালে বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় ছাপা হয় শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম কবিতা ‘যম’। এরপর তিনি ‘কৃত্তিবাস’-সহ বহু সাহিত্যপত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল-‘হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য’ (১৯৬১), ‘ধর্মে আছো জিরাফেও আছো’ (১৯৬৫), ‘সোনার মাছি খুন করেছি’ (১৯৬৭), ‘হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান’ (১৯৬৯), ‘প্রভু নষ্ট হয়ে যাই’ (১৯৭২), ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল’ (১৯৮০), ‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো’ (১৯৮২)।
কাব্যবৈশিষ্ট্য: বাস্তবতার সঙ্গে কল্পনার মেলবন্ধনে তাঁর কবিতা নতুন শক্তি লাভ করেছে। যুগযন্ত্রণা তাঁর কাব্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নিসর্গ, পথ, সমুদ্র, নারী সর্বোপরি মানুষকে ভালোবাসাই তাঁর কাব্যের মূল উপজীব্য। তাঁর প্রথমদিকের কবিতায় মানুষের বাস্তব সমস্যা ফুটে উঠেছে। অকপট সরলতা তাঁর কবিতার অন্যতম এক আঙ্গিক। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বহু কবিতায় রবীন্দ্রনাথের গানের প্রভাব লক্ষ করা যায়।
মূল্যায়ন: শক্তি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন হাংরি আন্দোলনের অন্যতম কবি। তাঁর ‘যেতে পারি কিন্তু কেন যাব’, ‘অবনী বাড়ি আছো’ ইত্যাদি কবিতা পাঠকমহলকে চিরকাল বিস্মিত করেছে। তাঁর কবিতা বাঙালির এবং বাংলা সাহিত্যের চিরদিনের সম্পদ হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন – নুন কবিতার নামকরণের সার্থকতা