মনোবিজ্ঞান অনুসন্ধানের পদ্ধতিসমূহ প্রশ্ন উত্তর
পরীক্ষাগারের মধ্যে পরীক্ষা এবং পরীক্ষাগারের বাইরে পরীক্ষা বলতে কী বোঝো?
পরীক্ষাগারের মধ্যে পরীক্ষা বলতে, যেসব পরীক্ষাগুলি পরীক্ষাগারে সম্ভব হয়, সেগুলিকে বোঝায়। যেমন-থর্নডাইকের পরীক্ষা, প্যাভলভের পরীক্ষা, গেস্টাল্টবাদীদের শিম্পাঞ্জিদের নিয়ে পরীক্ষা ইত্যাদি।
পরীক্ষাগারের বাইরে পরীক্ষণমূলক নকশার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত দল ও পরীক্ষণীয় দল-এই দু-ধরনের দল রয়েছে। দলের সংখ্যা অনুসারে নকশা বিভিন্ন হতে পারে। যেমন- একদলীয় নকশা, দু-দলীয় নকশা ইত্যাদি হতে পারে।
একটি ভালো পরীক্ষার উপাদানগুলি কী কী? নির্ভরযোগ্যতা বলতে কী বোঝো?
একটি ভালো পরীক্ষার উপাদানগুলি হল- নিয়ন্ত্রণ, স্বাধীন চলক, নির্ভরশীল চলক ও ধ্রুবক চলক।
যে-কোনো জায়গায় একই পরিস্থিতিতে একাধিকবার পরীক্ষাটি করলে যদি একই ফল পাওয়া যায় তাহলে বলা যাবে যে, পরীক্ষাটি নির্ভরযোগ্য। যেমন- ভুল ও প্রচেষ্টা এই পরীক্ষাটি যে-কোনো জায়গায় করা হোক না কেন একই ঘটনা ঘটবে।
যথার্থতা এবং নৈর্ব্যক্তিকতা বলতে কী বোঝায়?
পরীক্ষণ পদ্ধতিতে যথার্থতা থাকবে। যে উদ্দেশ্যে পরীক্ষণ করা হচ্ছে সেই উদ্দেশ্য যদি পরীক্ষণের মাধ্যমে যথাযথ করা সম্ভব হয়, তবে বলা যাবে পরীক্ষণ পদ্ধতির যথার্থতা রয়েছে। যেমন- প্যাভলভের কুকুরের পরীক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের প্রাচীন অনুবর্তন পদ্ধতি সম্বন্ধে ধারণা দান। এই পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই এই বিষয়টি সম্বন্ধে ধারণা দেওয়া যায়, তাই এই পদ্ধতির যথার্থতা রয়েছে।
যে-কোনো ব্যক্তিই কোনো পরীক্ষা নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে করলেই প্রত্যেক ক্ষেত্রে একই ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ পরীক্ষা পদ্ধতির মধ্যে নৈর্ব্যক্তিকতা রয়েছে। যেমন-থর্নডাইক বিড়ালকে নিয়ে যে পরীক্ষা করেছেন সেই একই পরীক্ষা যে-কোনো ব্যক্তিই করুন না কেন তিনি একই ফল পাবেন।
পরীক্ষণ পদ্ধতির দুটি গুরুত্ব লেখো।
পরীক্ষণ পদ্ধতির গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তাগুলি হল-
- কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ে সাহায্য করে। অর্থাৎ স্বাধীন ও নির্ভরশীল চলকের যে কার্যকারণ সম্পর্ক রয়েছে তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং অন্যান্য সমস্যাগুলি শনাক্ত করতে পরীক্ষা বা Experimentation সাহায্য করে থাকে। এটি ব্যক্তির চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে।
পরীক্ষামূলক অনুসন্ধান পদ্ধতির দুটি ব্যবহার লেখো।
পরীক্ষামূলক অনুসন্ধান পদ্ধতির দুটি ব্যবহার হল-
- শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ব্যবহার করা হয়।
- মনোবিজ্ঞানে পরীক্ষামূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি ব্যবহার করে গবেষকরা চলকের মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক শনাক্ত করতে পারেন, যা মানুষের আচরণের অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়া বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পরীক্ষামূলক পদ্ধতির দুটি সুবিধা লেখো।
পরীক্ষামূলক পদ্ধতির দুটি সুবিধা হল-
- বৈজ্ঞানিক নিয়ম অনুসরণ : পরীক্ষণ পদ্ধতিতে বৈজ্ঞানিক নিয়মনীতি সবচেয়ে বেশি মেনে চলা হয়। এই কারণে ফলাফল অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়।
- সাধারণীকরণ: পরীক্ষণ পদ্ধতির একটি বিশেষ সুবিধা হল ফলাফলের সাধারণীকরণ। এর অর্থ হল অল্প সংখ্যক দৃষ্টান্ত থেকে সাধারণ সত্যে উপনীত হওয়া।
পরীক্ষামূলক পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।
পরীক্ষামূলক পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হল—
- যন্ত্রপাতির দুষ্প্রাপ্যতা: উপযুক্ত যন্ত্রপাতির দুষ্প্রাপ্যতার কারণে অনেকসময় গবেষককে নতুন যন্ত্রপাতি ও নকশা নির্মাণ করতে হয়, যা খুবই ব্যয়বহুল।
- নিয়মকানুনের কঠোরতা: পরীক্ষণ পদ্ধতির একটি বিশেষ অসুবিধা হল নিয়মকানুনের কঠোরতা। পরীক্ষককে বৈজ্ঞানিক নিয়মকানুন কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়।
Case Study বা ঘটনা অনুধ্যান পদ্ধতি কী?
কেস স্টাডি পদ্ধতি হল এমন একটি পদ্ধতি যেখানে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়দের গভীর তদন্ত করা হয়। সাধারণত বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্যসংগ্রহ করা হয়। যেমন- পর্যবেক্ষণ, সাক্ষাৎকার। কেস-স্টাডি গবেষণা পদ্ধতিটি ক্লিনিক্যাল পদ্ধতির দ্বারা অনেক ক্ষেত্রে তথ্যসংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয়।
Mitchel এবং Robert E Stake কেস স্টাডি সম্পর্কে কী বলেছেন?
Mitchel-এর মতে, “A Case Study is defined as a detailed Examination of an event.” অর্থাৎ কেস স্টাডি হল কোনো ঘটনার বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ।
Robert E Stake-এর মতে, “Case Study is the study of the particular and complexity of a single case coming to understand its activity within important circumstances.” অর্থাৎ কেস স্টাডি হল একটি ঘটনার বিশেষ ও জটিলতা বিষয়ক অধ্যয়ন, এটি করা হয় তার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থার কার্যকারিতা বোঝানোর জন্য।
GR Adams (1985) এবং PV Young-এর মতে, Case Study কী?
GR Adams (1985)-এর মতে, “কেস স্টাডি একটি কিংবা স্বল্প সংখ্যক ঘটনার মধ্যে সীমাবদ্ধ অনুসন্ধানরত চলকসমূহের ধরন ও পরিমাণের উপর আলোকপাত করে এবং এই পদ্ধতি সর্বাত্মক ও গভীরতর অনুসন্ধানমুখী।”
PV Young (1987)-এর মতে, “কেস স্টাডি হল সামাজিক এককের জীবনধারা উদঘাটন ও বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি-সে একক একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার, প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক দল বা গোটা সমষ্টি হতে পারে।”
কে প্রথম কেস স্টাডি পদ্ধতিটি প্রয়োগ করেছিলেন? Barker (1944) 70 তার Social work dictionary-তে Case Study সম্পর্কে কী বলেছেন?
ফ্রেডরিখ লি প্লে (Fredric Le Play 1829) সর্বপ্রথম কেস স্টাডি পদ্ধতিটি প্রয়োগ করেছিলেন।
Barker (1944) তার Social work dictionary-তে বলেছেন, Case Study হল সাধারণত দীর্ঘ সময়ব্যাপী কোনো একজন ব্যক্তি, দল, পরিবার অথবা সমষ্টির বহুবিধ বৈশিষ্ট্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরীক্ষণের মাধ্যমে মূল্যায়ন করার একটি পদ্ধতি।
কেস স্টাডি পদ্ধতির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
কেস স্টাডি পদ্ধতির দুটি বৈশিষ্ট্য হল- কেস স্টাডি পদ্ধতি একটি সামাজিক এককের (Social unit) উপর গুরুত্ব আরোপ করে এবং এর গভীরে প্রবেশ করে। এই পদ্ধতি উদ্ঘাটনমূলক এবং অনুসন্ধানমূলক।
কেস স্টাডির কৌশলগুলি কী কী?
কেস স্টাডির কৌশলগুলি হল- পর্যবেক্ষণ, সাক্ষাৎকার, সেকেন্ডারি ডেটা, দলিল ওযরেকর্ড।
মনোবিজ্ঞানে কেস স্টাডি কী কাজে লাগে বা কেস স্টাডির প্রয়োজনীয়তা লেখো।
কেস স্টাডির প্রয়োজনীয়তা:
- একটি কেস স্টাডি জটিল পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও জানার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
- একটি কেস স্টাডি মূল্যায়ন পরিচালনা করে। অর্থাৎ কী করা হয়েছে, কী করা হয়নি বা ভবিষ্যতে কী পরিবর্তন করা প্রয়োজন-তা কেস স্টাডির দ্বারা জানা সম্ভব।
কেস স্টাডির দুটি ব্যবহার লেখো।
মনোবিজ্ঞানে কেস স্টাডি পদ্ধতির ব্যবহারগুলি হল-
- এগুলি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, এডুকেশনাল ও অকুপেশনাল মনস্তত্ত্বে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- কেস স্টাডি শিক্ষাগত প্রতিশ্রুতি এবং জটিলতা সম্পর্কিত মূল্যবান ডেটার উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি তথ্যগুলিকে নিয়মিত অনুশীলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কেস স্টাডির দুটি উদ্দেশ্য লেখো।
কেস স্টাডির দুটি উদ্দেশ্য হল-
- ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা ঘটনা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য সংক্রান্ত তথ্যসংগ্রহ করা।
- ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর আচরণ অনুসন্ধান করা।
কেস স্টাডির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে কী কী তথ্যসংগ্রহ করা হয়?
কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে কেস স্টাডি পদ্ধতিটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। কেস স্টাডির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে যে যে ধরনের তথ্যসংগ্রহ করা হয়, সেগুলি হল- ব্যক্তির পরিবারের অতীত ও বর্তমান অবস্থা, ব্যক্তির বিকাশগত দিক ও বর্তমান অবস্থা, ব্যক্তির প্রাকৃতিক পরিবেশ, ব্যক্তির আর্থসামাজিক পরিবেশ, ব্যক্তির সাংস্কৃতিক পরিবেশ ইত্যাদি।
কেস স্টাডির শিক্ষাক্ষেত্রে দুটি গুরুত্ব লেখো।
শিক্ষাক্ষেত্রে কেস স্টাডির দুটি গুরুত্ব বা ভূমিকা হল-
- শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক বৈশিষ্ট্য: শিক্ষার্থীর প্রবণতা, আগ্রহ, অভ্যন্তরীণ চাহিদা ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। যেগুলি শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমান শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষায় এগুলির গুরুত্ব রয়েছে।
- বংশধারা ও পরিবেশগত বৈশিষ্ট্য: শিক্ষার্থীর বাবা-মা, ভাই-বোন ও অন্যান্য নিকট আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবদের সম্পর্কে যে ধারণা পাওয়া যায়, তা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্ষেত্রে ও পরামর্শদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কেস স্টাডির দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।
কেস স্টাডির দুটি সুবিধা হল-
- কেস স্টাডি-তে বর্ণিত তথ্যাবলি বিশ্লেষণ করে একজন ব্যক্তি শিক্ষা সংগঠন ও পরিচালনা সংক্রান্ত জ্ঞান লাভ করতে পারে।
- কেস স্টাডি পদ্ধতিতে কোনো নির্দিষ্ট সমস্যার প্রকৃতি, প্রভাব, গভীরতা এবং এর উন্মেষ ও বিকাশ সম্পর্কিত বিষয় খুঁজে বের করা সহজ।
কেস স্টাডির দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।
কেস স্টাডির দুটি অসুবিধা হল-
- শিক্ষার্থীদের মনের উপর এই পদ্ধতির সাফল্য নির্ভরশীল।
- প্রাপ্ত তথ্য সাধারণীকরণ ও তুলনাকরণের সুযোগ কম থাকে।
কেস হিস্ট্রি (Case History) সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
কোনো ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, সামাজিক বা মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কিত ইতিহাসই হল কেস হিস্ট্রি। Case History -এর মাধ্যমে ব্যক্তির যেসব বৈশিষ্ট্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলি বিশ্লেষণ করে চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। Case History-তে ব্যক্তির বিকাশ সম্পর্কে কোনো মতামত ব্যক্ত করা হয় না। এখানে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্যের বিশ্লেষণ করা হয়।
Survey শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ লেখো।
Survey শব্দটি এসেছে দুটি শব্দ Sur বা Sor এবং Vier বা Veoir থেকে। Sur বা Sor কথার অর্থ হল Over এবং Vier বা Veoir শব্দের অর্থ See। এই দুটো শব্দের অর্থ একত্র করলে দাঁড়ায় Oversee, যার বাংলা অর্থ হল তত্ত্বাবধান বা তদারক করা। জরিপ হল তথ্যসংগ্রহের একটি উত্তম কৌশল।
Survey বা জরিপ পদ্ধতি বলতে কী বোঝো? জরিপ সাধারণত কয়প্রকার ও কী কী?
Survey বা জরিপ বলতে আমরা বুঝি কোনো বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে সরেজমিনে তথ্যসংগ্রহ করা। কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকায় জনবসতির ধ্যান-ধারণা, মনোভাব ও জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়াদির সাথে তথ্য সংগ্রহের কৌশল বা উপায়কে জরিপ বলে।
জরিপকে সাধারণত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা- ফিল্ড সমীক্ষা, বিকাশমূলক সার্ভে, পার্থক্য বা তুলনামূলক।
এল আর গে (LR Gay, 1995) ও Runkel এবং Mc Grath-এর মতে, জরিপ (Survey) কী?
এল আর গে (LR Gay, 1995)-এর মতে, “একটি জরিপ হল একটি জনসংখ্যার সদস্যদের কাছ থেকে তথ্যসংগ্রহ করার একটি প্রচেষ্টা, যাতে এক বা একাধিক চলকের সঙ্গে সেই জনসংখ্যার বর্তমান অবস্থা নির্ধারণ করা যায়।”
Runkel এবং Mc Grath-এর মতে, “অনুসন্ধানকারী যখন তথ্যসংগ্রহের জন্য ব্যক্তির গৃহ, কর্মস্থল বা ওই ধরনের স্থানে গিয়ে তথ্যসংগ্রহ করেন, তখন ওই পদ্ধতিই হল সার্ভে পদ্ধতি।”
সামাজিক জরিপ কাকে বলে? সামাজিক জরিপ কত প্রকার ও কী কী?
যে-কোনো সামাজিক কার্যক্রম সম্বন্ধে গবেষণার জন্য যে অনুসন্ধান ও জরিপ করা হয়, তাকেই সামাজিক জরিপ বলা হয়।
সামাজিক জরিপ বা Social Survey-কে মূলত দুইভাগে ভাগ করা যায়।
- শুমারি জরিপ
- নমুনা জরিপ।
মার্ক এব্রাম-এর মতে, Social Survey বা সামাজিক জরিপ কী? শুমারি জরিপ কাকে বলে?
মার্ক এব্রাম এর মতে “কোনো সমষ্টির সামাজিক অবস্থা, কার্যক্রম সম্পর্কে অধিক সংখ্যক তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়ার নামই হল সামাজিক জরিপ।”
সাধারণত শুমারি বলতে সমগ্রকের সকল এককের বর্ণনাকে বোঝায়। কোনো বিষয় সম্পর্কে জানার উদ্দেশ্যে সমগ্রকের সকল অংশ থেকে তথ্যসংগ্রহ করাকে শুমারি বলে। যেমন-দেশের জনসংখ্যার পূর্ণ তথ্যগ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর একবার করে যে জরিপ গ্রহণ করা হয়, তাকে আদমশুমারি বলে।
নমুনা জরিপ বলতে কী বোঝো?
নমুনা জরিপ পদ্ধতিগতভাবে জরিপের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্বল্প ব্যয়ে ও স্বল্প সময়ে অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহ করার কৌশলকে নমুনা জরিপ বলে। এটি মূলত একটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া। যে-কোনো সামাজিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে গবেষণার জন্য এই পদ্ধতি সার্থকভাবে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে সমগ্রকের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে। একে আবার শুমারি জরিপের একটা বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
ক্ষেত্র সমীক্ষা বা Field Work কী?
ক্ষেত্র সমীক্ষা হল প্রাথমিক তথ্যসংগ্রহের প্রক্রিয়ার জন্য গবেষকদের দ্বারা সর্বাধিক ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষণ-শিখন পরিস্থিতিতে অনুসন্ধানকারী প্রশ্নগুচ্ছ বা ইন্টারভিউ বা অভীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আচরণ সংক্রান্ত তথ্যসংগ্রহ করেন। এই পদ্ধতিই হল ক্ষেত্র সমীক্ষা।
ক্রীড়া চিকিৎসা পদ্ধতির প্রবর্তক কে? এই চিকিৎসার একটি মূলনীতি লেখো।
ক্রীড়া চিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবক হলেন ফ্রয়েড।
ক্রীড়া চিকিৎসা পদ্ধতির মূলনীতি: অপসংগতির জন্য যে শিশু পারিবেশিক তথা সামাজিক ভারসাম্য হারিয়েছে, খেলার মধ্য দিয়ে সে আবার নিজেকে পরিবেশের মধ্যে যথাস্থানে সন্নিবিষ্ট করতে পারে।
একটি ভালো সমীক্ষার (Survey) দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো?
একটি ভালো সমীক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
- সমীক্ষাটি পরিমাপযোগ্য এবং তার উদ্দেশ্য স্পষ্ট হতে হবে।
- সমীক্ষাটির উপস্থাপন হবে যথার্থ, কার্যকরী তথ্যের পরিমাণ বেশি থাকবে।
মনোবিজ্ঞানে সমীক্ষার দুটি গুরুত্ব লেখো।
মনোবিজ্ঞানে সমীক্ষার দুটি গুরুত্ব হল-
- গবেষকরা অধিক সংখ্যক দর্শকের কাছ থেকে স্ব-প্রতিবেদনের ডেটা সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে সমীক্ষা ব্যবহার করেন।
- আচরণ, মতামত, জনসংখ্যা এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বাস্তব তথ্যসংগ্রহ করতে এটি সাহায্য করে।
মনোবিজ্ঞানে সমীক্ষা ব্যবহারের কারণগুলি লেখো বা মনোবিজ্ঞানে সমীক্ষা কেন ব্যবহার করা যায়?
মনোবিজ্ঞানে সমীক্ষা ব্যবহারের কারণগুলি হল-
- সমীক্ষাগুলি সাধারণত মনোবিজ্ঞান গবেষণায় অধ্যয়ন অংশগ্রহণকারীদের থেকে স্ব-প্রতিবেদনের ডেটা সংগ্রহ করতে ব্যবহৃত হয়।
- একটি সমীক্ষা ব্যক্তি সম্পর্কে বাস্তব তথ্যের উপর আলোকপাত করতে সাহায্য করে।
মনস্তাত্ত্বিক সমীক্ষার দুটি সুবিধা লেখো।
মনস্তাত্ত্বিক সমীক্ষার দুটি সুবিধা হল-
- কম ব্যয়বহুল: এই সমীক্ষা অন্যান্য অনেক ডেটা বা তথ্যসংগ্রহের কৌশলগুলির তুলনায় অনেক কম ব্যয়বহুল।
- প্রশাসনের সহজতা: সমীক্ষাগুলি দ্রুত তৈরি করা যায় এবং সহজেই পরিচালনা করা যায়।
জরিপ গবেষণার প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
জরিপ গবেষণার প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
- অনুসন্ধানের ক্ষেত্র নির্বাচন: অনুসন্ধানের ক্ষেত্র নির্বাচন সার্ভে পদ্ধতি বা জরিপ গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন-বিদ্যালয় সংক্রান্ত সমস্যাসমাধানের জন্যে বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে তথ্যসংগ্রহের প্রয়োজন হতে পারে।
- পদ্ধতিগত: অন্যান্য গবেষণা পদ্ধতির মতো জরিপ গবেষণা পদ্ধতিগত। এর অর্থ হল যে, এটি সাধারণত পরীক্ষামূলক পদ্ধতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয় এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
নমুনা (Sample) কী? Field, Best ও Kahn-এর মতে নমুনা কী?
নমুনা হল সমগ্রকের (Population) একটি অংশ যা পুরো দলকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হয়।
Field (2005)-এর মতে, “নমুনা হল কোনো সমগ্রকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ওই সমগ্রক থেকে নির্বাচিত ক্ষুদ্র অংশ।”
J W Best এবং J V Kahn (1968, P-12) বলেছেন যে “একটি নমুনা হল পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণের জন্য নির্বাচিত সমগ্রকের একটি ছোটো অনুপাত।”
লোকেশ কাউল (Lokesh Koul) জরিপ গবেষণাকে কী কী ভাগে ভাগ করেছেন? স্কুল জরিপ (School Survey) কী?
লোকেশ কাউল (Lokesh Koul) Survey পদ্ধতিকে চারভাগে ভাগ করেছেন-
- স্কুল জরিপ (School Survey)
- কাজের বিশ্লেষণ (Job Analysis)
- জনমত জরিপ (Public Opinion Survey)
- সামাজিক জরিপ (Social Survey)।
স্কুল জরিপ মূলত শিক্ষা সংক্রান্ত কোনো সমস্যার বর্তমান অবস্থার বহুমুখী পর্যালোচনা। এর মূল উদ্দেশ্য হল বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচির সার্বিক সক্রিয়তা এবং পরিবর্তনযোগ্য উপদেশাবলি সম্পর্কে পর্যালোচনা করা।
জরিপ অনুসন্ধান পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।
জরিপ অনুসন্ধান পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হল-
- এই পদ্ধতিতে পাওয়া ফলাফলের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীর আবেগ প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ফলে সিদ্ধান্তটি ত্রুটিযুক্ত হতে পারে।
- জরিপ পদ্ধতিতে তথ্যসংগ্রহ করতে গেলে অনেকসময় উত্তরদাতাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া বা উপেক্ষা করার ঝুঁকি থেকে যায়।
শিক্ষাক্ষেত্রে জরিপ অনুসন্ধানের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো।
শিক্ষাক্ষেত্রে জরিপ অনুসন্ধানের দুটি গুরুত্ব হল –
- ছাত্র, শিক্ষক, অধ্যক্ষ, পিতামাতা, অন্যান্য নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য, আচরণ এবং মনোভাবের পরিমাণগত বিবরণ প্রদান করতে পারে।
- যেখানে স্বতন্ত্র শিক্ষা (Individualized Education) কার্যক্রম রয়েছে, সেখানে তাদের অভিভাবকদের চাহিদা মূল্যায়ন করতে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
কৃষ্ণাদাস চট্টোপাধ্যায় এবং এ কে সিং (A K Sing) জরিপ গবেষণাকে কীভাবে শ্রেণিবিভক্ত করেছেন?
কৃষ্ণাদাস চট্টোপাধ্যায় (Krishnadas Chattopadhyay) Survey
পদ্ধতিকে চারভাগে ভাগ করেছেন-
- দলগত জরিপ (Group Survey)
- মেইল জরিপ (Mail Survey)
- মুখোমুখি জরিপ (Face to Face Survey)
- টেলিফোন জরিপ (Telephone Survey)।
A K Sing-এর মতে, Survey পদ্ধতি চারপ্রকার যথা-
- ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার (Personal Interview)
- মেইল প্রশ্নমালা (Mail Questionnaire)
- প্যানেল টেকনিক (Panel Technique)
- টেলিফোন জরিপ (Telephone Survey) |
সার্ভে পদ্ধতির উল্লেখযোগ্য সতর্কতাগুলি কী কী?
যে জনসমষ্টির উপর সমীক্ষা করা হবে, সেই জনসমষ্টির থেকে দল / নমুনা সংগ্রহের জন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন, তথ্যসংগ্রহে যে কৌশল ব্যবহার করা হবে তা নির্দিষ্ট দলের পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করা হয়েছে কি না, সমীক্ষার ফলাফল কী পরিমাণে সম্ভাবনাময় তা বিচার, স্থির কি না।
সহগতি বলতে কী বোঝায়? সহগতি কয় প্রকার ও কী কী?
দুই বা ততোধিক চলকের মধ্যে যে সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয় তাকে সহসম্পর্ক বা সহগতি বলে। দুই বা ততোধিক চলক বা তথ্যসারির মধ্যে একই দিকে বা বিপরীত দিকে পরিবর্তিত হওয়ার যে সম্ভাব্য প্রবণতা দেখা যায়, তাকে সহগতি বা সহসম্পর্ক বা Correlation বলা যেতে পারে।
বিভিন্নক্ষেত্রে সহসম্পর্কের পরিমাণ সমান নয়। তাই দুটি চলকের বা – ঘটনার বা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সম্পর্ক থাকলেও এই সম্পর্কের পরিমাণগত ও গুণগত বা প্রকৃতিগত পার্থক্য রয়েছে।
সহগতি তিন প্রকার যথা—
ধনাত্মক সহগতি, ঋণাত্মক সহগতি, শূন্য সহগতি।
সহগতির সহগাঙ্ক (Coefficient of Correlation) কী? এটিকে কোন্ চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়?
যে গাণিতিক সূচক দ্বারা আমরা দুটি চলের (Variable) মধ্যেকার সহগতির পরিমাপ ও গুণগত বৈশিষ্ট্য (Quantitative and Qualitative) প্রকাশ করি, তাকেই বলা হয় সহগতির সহগাঙ্ক।
এই সহগতির সহগাঙ্ককে ‘।’ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ধনাত্মক সহগতি কাকে বলে? উদাহরণ-সহ ব্যাখ্যা করো।
দুটি চল (Variables)-এর মধ্যে সম্পর্ক যদি এমন হয় যে, একটি বাড়লে অপরটি বাড়বে এবং একটি কমলে অপরটিও কমবে তখন তাকে ইতিবাচক বা ধনাত্মক সহগতি বলা হয়।
উদাহরণ: সাইকেল চালানোর সঙ্গে মোটর সাইকেল চালানোর যে সম্পর্ক তা হল Positive Correlation Method বা ইতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্কীয় পদ্ধতির উদাহরণ।
ঋণাত্মক সহগতি কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
দুটি চল (Variables) এর মধ্যে সম্পর্ক যদি এমন হয় যে, একটি বাড়লে অপরটি কমবে এবং একটি কমলে অপরটি বাড়বে তখন তাকে নেতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্কীয় পদ্ধতি বা Negative Correlation Method বলা হয়।
উদাহরণ: শিক্ষার হারের সঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে সম্পর্ক তা হল নেতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্কীয় পদ্ধতির উদাহরণ।
শূন্য সহগতি বলতে কী বোঝো? একটি উদাহরণ দাও।
দুটি চল বা Variables-এর মধ্যে সম্পর্ক যদি এমন হয় যে, একটি চল অপর একটি চলকে কোনোভাবে প্রভাবিত করে না তখন তাকে বলা হয় Zero Correlation Method বা শূন্য পারস্পরিক সম্পর্কীয় পদ্ধতি।
উদাহরণ: রান্না ও হাতের লেখার মধ্যে শূন্য পারস্পরিক সম্পর্ক বর্তমান।
সহগতির সহগাঙ্ক নির্ণয়ে প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো।
সাধারণত স্বাভাবিক বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতিতে দুটি রাশিমালার মধ্যে সহগতি নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিতে যে সহগাঙ্ক পাওয়া যায় তাকে ‘।’ চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। দুটি চল, ‘x’ এবং ‘y’- এর মধ্যে সহগাঙ্ককে ‘rxy’ চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। একে পিয়ারসনের প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতি বলা হয়।
সহগতির সহগাঙ্কের দুটি গুরুত্ব লেখো।
সহগতির সহগাঙ্কের দুটি তাৎপর্য বা গুরুত্ব হল-
সহগতির সহগাঙ্কের দ্বারা আমাদের একটি পরিমাপ জানা থাকলে অন্যটি সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।
দুটি চলের মধ্যে সহগতি সহগাঙ্ক নির্ণয় করার পর, রিগ্রেশন সমীকরণ (Regression Equation) গঠন করলে, তার দ্বারা আমরা একটি জানা মান থেকে অপর একটি অজানা মান নির্ণয় করতে পারি।
স্পিয়ারম্যানের Rank Difference Correlation বা সারি পার্থক্য সহগতি বা অনুক্রমিক সহগতি সহগাঙ্ক বলতে কী বোঝো ?
সংখ্যা দিয়ে যেসব গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করা যায় না, যেমন- সততা, সৌন্দর্য, দক্ষতা, ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্ব ইত্যাদি সেসব গুণ বা বৈশিষ্ট্যকে ধারাবাহিকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করে সারিতে সাজানো হয়। এতে দুটি গুণ বা বৈশিষ্ট্যবাচক চলকের জন্য দুটি সারি ‘x’ ও ‘y’ থাকে। দুটি সারির প্রতিটি স্কোরের পার্থক্য নির্ণয় করে তাকে বর্গ করা হয়। একেই সারি পার্থক্য সহগতি বা Rank Difference Correlation বলা হয়। একে ‘p’ (রো) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
চলক (Variable) বলতে কী বোঝো? এর একটি সংজ্ঞা দাও।
চলক হল একটি বৈজ্ঞানিক শব্দ, যার অর্থ হল চলনশীল বা পরিবর্তনশীল। অর্থাৎ যে-কোনো অবস্থা, বৈশিষ্ট্য বা গুণ- যার পরিবর্তন ঘটে তাই হল চলক।
J W Best and James V Kahn-এর মতে, “চলক হল এমন শর্ত বা বৈশিষ্ট্য যা পরীক্ষাকারীর উপর প্রভাব বিস্তার করে, নিয়ন্ত্রণ করে বা পর্যবেক্ষণ করে’ (“Variables are the conditions or characteristics that the experimenter manipulates, controls or observes.”)।
চলকের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। স্বাধীন বা পরিবর্তনশীল চলক (Independent Variable) কী?
চলকের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল-
- চলক হল এক ধরনের গুণ বা বৈশিষ্ট্য।
- এটি পর্যবেক্ষণযোগ্য ও পরিমাপযোগ্য।
যে চলক কোনো একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে কোনোরকম শর্তের উপর নির্ভর না করেই পরীক্ষামূলক অনুসন্ধানের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তাকেই স্বাধীন বা পরিবর্তনশীল চলক বলে।
নির্ভরশীল চলক (Dependent Variable) এবং মধ্যবর্তী চলক (Intervening Variable) বলতে কী বোঝো?
স্বাধীন চলকের প্রভাবে পরীক্ষণপাত্রের উপর যে প্রতিক্রিয়া হয়, তাকেই নির্ভরশীল চলক বলে। অন্যভাবে বলা যায় স্বাধীন চলকের প্রয়োগের ফলে শিক্ষার্থীর আচরণের যে পরিবর্তন ঘটে, সেগুলিকে বলা হয় নির্ভরশীল চলক।
মধ্যবর্তী চলক হল সেই চলক যার তাত্ত্বিকভাবে অস্তিত্ব আছে এবং আচরণকে প্রভাবিত করে। কিন্তু এই চলককে দেখা যায় না এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তবে এর প্রভাব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত করা যায়।
চলক ও ধ্রুবকের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
চলক ও ধ্রুবকের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল-
- চলক হল তথ্যের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য। আর ধ্রুবক হল তথ্যের অপরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য।
- চলকের উপযুক্ত পরিমাপগুলি শূন্য বা অশূন্য, ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে। আর অন্যদিকে ধ্রুবকের পরিমাপগুলির মধ্যে কেন্দ্রিকতা ছাড়া বাকি সবগুলির মান শূন্য হবে।
প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতির দুটি সুবিধা লেখো।
প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতির দুটি সুবিধা হল-
- শিক্ষামূলক পরিমাপের ক্ষেত্রে সাংখ্যমান পাওয়া গেলে, সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে দুটি চলের সহগাঙ্ককে (r) নির্ণয় করে সহজে কাজ করা যায়।
- চলের সম্পর্ক যদি সরলরৈখিক হয়, তবে এই পদ্ধতি সুবিধাজনক।
প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।
প্রোডাক্ট মোমেন্ট পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হল-
- সহগাঙ্ক নির্ণয়ের এই পদ্ধতি দীর্ঘ ও শ্রমসাধ্য।
- শিক্ষামূলক প্রাপ্ত তথ্য যদি সংখ্যামান যুক্ত না হয়, তবে এই পদ্ধতিতে সহসম্পর্ক নির্ণয় করা যায় না।
র্যাংক পদ্ধতির দুটি সুবিধা লেখো।
র্যাংক পদ্ধতির দুটি সুবিধা হল-
- গুণগত ও পরিমাণগত উন্নত ধরনের স্কোরের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।
- এই পদ্ধতিতে সহসম্পর্ক অপেক্ষাকৃত সহজে নির্ণয় করা যায়।
র্যাংক পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।
র্যাংক পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হল-
- যখন পরিমাণগত মান অনেক বেশি সংখ্যায় থাকে, তাদের র্যাংক নির্ণয় করা অনেক সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতি কিছুটা অসুবিধাজনক।
- গুণগত তথ্যকে তুলনা করার ক্ষেত্রে র্যাংক পদ্ধতির ব্যবহার করা যায় না।
শিক্ষাক্ষেত্রে সহগতির সহগাঙ্কের ব্যবহার লেখো।
শিক্ষাক্ষেত্রে সহগতির সহগাঙ্কের ব্যবহারগুলি হল-
- এই গুণাঙ্কের ভিত্তিতে শিক্ষা বিষয়ক অভীক্ষার বৈধতা নির্ণয় করা হয়। অভীক্ষা তৈরি করার সময় যখন Predictive Validity নির্ধারণ করা হয়, তখন অভীক্ষার প্রাপ্ত স্কোরের সঙ্গে সমতুল্য অভীক্ষার প্রাপ্ত স্কোরের ৮ নির্ণয় করে বৈধতা স্থির করা হয়।
- শিক্ষা বিষয়ক অভীক্ষা সমূহের নির্ভরযোগ্যতা নির্ধারণ করার জন্য সহসম্পর্ক গুণাঙ্কের সূচক হিসেবে গণনা করা হয়।
- অভীক্ষার পদগুলির বিশ্লেষণে, তাদের পার্থক্য নির্ণায়ক ক্ষমতার জন্য সহসম্বন্ধ গুণাঙ্কের প্রয়োজন হয়।
- বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা পরিমাপের জন্য যেসব নির্বাচনমূলক পদ্ধতি আজকাল ব্যবহৃত হয় সেগুলিতে ৮-এর মান ব্যবহার করা হয়।
Also Read – The Garden Party questions and answers