ফলমুখী নৈতিক মতবাদ হিসেবে উপযোগবাদ-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

ফলমুখী নৈতিক মতবাদ হিসেবে উপযোগবাদ-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

ফলমুখী নৈতিক মতবাদ হিসেবে উপযোগবাদ-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

ফলমুখী নৈতিক মতবাদ হিসেবে উপযোগবাদ

নীতিবিজ্ঞানে যে-কোনো ধরনের নৈতিকতার বিষয়টিই উঠে আসুক না কেন, এর মূলকথা হল-নৈতিকতা (Morality)। নৈতিকতার বিষয়টিকে দু-ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়-উদ্দেশ্য বা ফলমুখী নৈতিকতা (Teleological morality) এবং নিয়মমুখী নৈতিকতা (Rule Oriented morality)। ফলমুখী নৈতিকতা অনুসারে দাবি করা হয় যে, কোনো কর্মের ফল বা পরিণতি যদি ভালো হয় তবে সেই কর্মকে বলা হয় নৈতিক কর্ম বা উচিত কর্ম। অপরদিকে, কোনো কর্মের ফল বা পরিণতি যদি ভালো না হয়, অর্থাৎ তা যদি মন্দ হয়, তবে তাকে বলা হয় অনৈতিক কর্ম বা অনুচিত কর্ম।

নীতিবিজ্ঞানে ভালোমন্দ এবং ন্যায়-অন্যায়-এর মধ্যেও পার্থক্য করা হয়েছে। নীতিবিজ্ঞানে যে- কাজ কল্যাণসাধকরূপে গণ্য, তাকে বলা হয় ভালো, আর এর বিপরীত কাজকেই বলা হয় মন্দ। অপরদিকে যে-কাজ নৈতিকভাবে বিধিসম্মত, তাকেই বলা হয় ন্যায়সম্মত কাজ, আর এর বিপরীত কাজকেই বলা হয় অন্যায়। ফলমুখী নৈতিকতা ভালোমন্দ-র ধারণাটির ওপরেই গুরুত্ব দেয়, আর নিয়মমুখী নৈতিকতা ন্যায়-অন্যায় বোধের ওপরেই গুরুত্ব প্রদান করে। মূলত ফলমুখী নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করেই উপযোগবাদের তত্ত্বটি উঠে এসেছে।

উপযোগবাদ হিসেবে মিল ও বেন্থামের নৈতিক সুখবাদ

নীতিবিজ্ঞানে নৈতিকতা নির্ধারণের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মানদণ্ডের উল্লেখ করা হয়েছে। এই মানদণ্ডগুলির অন্যতম একটি মানদণ্ড হল সুখ (Pleasure)। এই সুখের মানদণ্ডটিকে সামনে রেখে যে নৈতিক মতবাদ গড়ে উঠেছে তাকে বলা হয় সুখবাদ (Hedonism)। সুখবাদের একটি অন্যতম রূপ হিসেবে উঠে এসেছে নৈতিক সুখবাদ (Ethical Hedonism)। এই নৈতিক সুখবাদের ক্ষেত্রে যে-ধরনের নৈতিকতার কথা বলা হয়েছে, তা হল-ফলমুখী নৈতিকতা। মিল এবং ব্যোম প্রচারিত নৈতিক সুখবাদকেই বলা হয় উপযোগবাদ (Utilarianism)। স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় যে, মিল ও ব্যোমের উপযোগবাদে ফলমুখী নৈতিকতার বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে।

উপযোগিতার নীতি ও উপযোগবাদের প্রচার

উপযোগবাদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নৈতিকতার একমাত্র নির্ধারক হল উপযোগিতার নীতি (Rule of Utility)। অর্থাৎ কোনো কাজ ভালো না মন্দ, ন্যায় না অন্যায়, উচিত না অনুচিত-তা নির্ভর করে সেই কাজটির উপযোগিতার ওপর। উপযোগিতার মূল কথাই হল অকল্যাণকে পরিহার করে যত বেশি সম্ভব কল্যাণের বিষয়টিকে প্রতিষ্ঠা করা সেই কারণেই বলা যায় যে, উপযোগবাদের মূল কথাই হল সর্বাধিক ব্যক্তির সর্বাধিক কল্যাণসাধণ (Greatest good of the greatest number)।

আরও পড়ুন- কর্ম-কর্তব্যবাদের গ্রহণযোগ্যতা আলোচনা করো

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment