দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকৃতিত্ব আলোচনা করো

নাট্যকৃতিত্ব: রবীন্দ্রনাথের সমকালে যে নাট্যকার শেকসপিয়রের নাট্যাঙ্গিক অনুসরণে বাংলা নাট্যচর্চাকে বিশিষ্টতা দিয়েছিলেন তিনি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়।

নাট্যসম্ভার: বিষয় অনুযায়ী দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাটকসমূহকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল-

  • প্রহসন: শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশের প্রথম পর্বে দ্বিজেন্দ্রলাল কয়েকটি – প্রহসন রচনা করেন। যথা- ‘কল্কি অবতার’, ‘বিরহ’, ‘এ্যহস্পর্শ’, ‘প্রায়শ্চিত্ত’, ‘পুনর্জন্ম’ ইত্যাদি। ‘আনন্দ-বিদায়’ প্রহসনে রবীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করে নানাভাবে তিনি নিন্দিত হন এবং দর্শকের তীব্র প্রতিবাদে নাটকের অভিনয় বন্ধ হয়।
  • পৌরাণিক ও পারিবারিক নাটক: সমকালীন দর্শকদের চাহিদাকে স্বীকার করে নাট্যকার কয়েকটি পৌরাণিক নাটক লেখেন। যথা- ‘সীতা’ (১৯০৮), ‘ভীষ্ম’ (১৯১৪)। এই শ্রেণির নাটকে বিদেশি নাট্যাদর্শ বিশেষভাবে অনুসৃত। এ ছাড়া ‘পরপারে’ ও ‘বঙ্গনারী’ নামে তাঁর পারিবারিক নাটক দুটি একসময় বিশেষ জনপ্রিয়তা পায়।
  • ঐতিহাসিক নাটক: দ্বিজেন্দ্রলালের সার্বিক কৃতিত্ব নিহিত আছে ঐতিহাসিক নাটক রচনায়। ‘প্রতাপসিংহ’, ‘দুর্গাদাস’, ‘নূরজাহান’, ‘মেবার-পতন’, ‘সাজাহান’ প্রভৃতি নাটকে ইতিহাসকে এমনভাবে পরিবেশন করেছেন- যাতে ঐতিহাসিক ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে। ‘চন্দ্রগুপ্ত’ ও ‘সিংহল বিজয়’ নাটক দুটি নাট্যকারকে বাংলার বাইরে বিশিষ্টতা দান করেছে। ইতিহাসকে আশ্রয় করে তিনি যে কয়েকটি নাটক লিখেছেন সেখানে সযত্নে শেকসপিয়রের ট্র্যাজেডির আদর্শ অনুসরণ করেছেন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ইতিহাসের অনুকরণে লেখেন ‘তারাবাঈ’ এবং ‘সোরাব রুস্তম’।

কৃতিত্ব : দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর নাটককে মানসিক দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা দিতে চেয়েছেন, তাঁর ঐতিহাসিক চরিত্রনির্মাণ তাঁকে বাংলা নাট্যসাহিত্যে অমরত্ব দিয়েছে। পেশাদারি নাট্যসমাজে তাঁর আবেদন আজও সর্বাত্মক।

আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment