বইমেলা রচনা 400+ শব্দে

বইমেলা রচনা

বইমেলা রচনা

মেলা

মেলা বলতে বোঝায় নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে বিশেষ কোনো স্থানে লোকজন হাজির হন এবং সেখানে বিভিন্ন ধরনের জিনিষপত্র কেনা বেচা হয়। তবে হাট বা বাজারের সাথে পার্থক্য হল যে মেলায় হাজির হন মানুষ আনন্দ উপভোগ করতে এবং মনের আনন্দে পছন্দের বস্তু ক্রয় করেনও হৈহুল্লোড়ে মেতে ওঠেন। মেলায় চিত্ত বিনোদনের নানা ধরণের ব্যবস্থা থাকে। যেমন পৌষ সংক্রান্তির মেলা, কেঁদুলির বাউলমেলা, রথের মেলা, কুম্ভমেলা, গঙ্গাসাগরের মেলা প্রভৃতি। হাট বা বাজার বসে সাধারণত প্রতি সপ্তাহে, কোথাও প্রতিদিন। মেলা বসে নির্দিষ্ট দিনে, কয়েক দিন ধরেও মেলা চলতে থাকে কোথাও কোথাও, মেলায় জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে মানুষ এসে মিলিত হন। লক্ষ্য মিলেমিশে কিছু নেওয়া, কিন্তু একসময় তা বাহ্যিক হয়ে যায়, গড়ে ওঠে প্রীতির মেলবন্ধন।

বইয়ের আকর্ষণ

লোক সংস্কৃতিতে যেসব মেলা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে থাকে নানা ধরনের পসরা। কিন্তু অন্য এক ধরনের পসরা, বই নিয়ে মেলা পাঠক-সংস্কৃতির এক গৌরবময় ঐতিহ্য। এই মেলার পসরা বই, কেনা-বেচা হয় বই। এই মেলার মধ্যে লুকিয়ে আছে বই প্রেমিকদের আশ্চর্য আকর্ষণ। বইমেলা হল পছন্দের বই সংগ্রহ করা, নতুন বই-এর গন্ধে মনে এক অনাবিল শিহরণ অনুভব করা। যাঁরা বই ভালোবাসেন তাঁরা তাঁদের প্রিয় বই কিনে তা পড়ার জন্য ব্যগ্র হয়ে বাড়ি ফেরেন, মনে মনে অনুভব করেন গর্ব।

কলকাতা বইমেলা

কলকাতা বইমেলার উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৬৩ সাল থেকে, তবে শুরু হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। ১৯৭৩ সালে ন্যাশনাল বুক ট্রাস্টের উদ্যোগে একাডেমি অব ফাইন আর্টস হলে বইমেলার ব্যবস্থা হয়। ১৯৭৬ সালে বঙ্গীয় প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতার উদ্যোগে এক লক্ষ বর্গফুট জায়গায় ময়দানে বইমেলা শুধু হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও এই মেলার উৎসাহী। বায়ু দূষণের কারণে – এখন বই মেলার ব্যবস্থা হয় বিজ্ঞান নগরীতে। প্রতিবছর কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড়ে কলকাতা বইমেলা পৃথিবীর সেরা বইমেলার অন্যতম হিসাবে স্থান লাভ করেছে।

বইমেলায় বই-এর সম্ভার

বইমেলার সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ হল নতুন নতুন বই-এর মুখোমুখি হওয়া। বই-এর স্টলগুলো রং এর বাহারে ও আলোয় অপরূপ সাজে ঝলমল করে। অপরূপা রূপসী যেন বইমেলা। স্টলে রাখা হয় থরে থরে বই। নতুন বই এর মিষ্টি গন্ধে আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি হয়। নানা ধরণের বই- এর রঙিন মলাটে আলোর রশ্মি পড়ে মুক্তোর মতো ঝলমল করে। একটার পর একটা স্টলে বই-এর কাছে গিয়ে ইচ্ছে মতো বই হাতে নিয়ে দেখার সে কি আনন্দ। শুধু বই কেনা বা বই দেখা নয় বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডার আসরও কম আনন্দের নয়। বইমেলায় পাঠক ও পুস্তক বিক্রেতার মধ্যে যেমন মিলন ঘটে লেখক ও পাঠকের মধ্যেও সাক্ষাতের বুনিয়াদ সৃষ্টি হয়।

‘উপসংহার

এখন বইমেলা সরকারী উদ্যোগে যেমন হয় তেমনি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায়ও শহর গ্রামগঞ্জে মহাসমারোহে’ হচ্ছে। সব ধরনের ও সব বয়সের মানুষ বইমেলায় আসেন। মানুষের ভিড়ে বইমেলা মিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়, পরিণত হয় সম্প্রীতির মেলায়। মানুষের নানা প্রকার নেশা থাকে। কোনো কোনো নেশা মানুষের ক্ষতি করে। কিন্তু বই সংগ্রহের নেশা মানুষের জ্ঞান-চক্ষু উন্মীলিত করে, অজ্ঞানের অন্ধকার থেকে জ্ঞানের আলোকে উদ্ভাসিত করে। তাই বইমেলার গুরুত্ব খুবই।

আরও পড়ুন – একটি ছুটির দিন রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment