ঐতিহাসিক নাটক রচনায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকীর্তি আলোচনা করো

ঐতিহাসিক নাটক রচনায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকীর্তি আলোচনা করো

ঐতিহাসিক নাটক রচনায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকীর্তি আলোচনা করো
ঐতিহাসিক নাটক রচনায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাট্যকীর্তি আলোচনা করো

ভূমিকা: দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের প্রতিভাস্পর্শে বাংলা ঐতিহাসিক নাটকের পূর্ণতম রূপটি প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর রচিত ঐতিহাসিক নাটকগুলি হল- ‘তারাবাঈ’ (১৯০৩), প্রতাপসিংহ (১৯০৫), ‘দুর্গাদাস’, ‘নূরজাহান’, ‘মেবার-পতন’, ‘সাজাহান’, ‘চন্দ্রগুপ্ত’, ‘সিংহল বিজয়’ প্রভৃতি।

নাটক বিশ্লেষণ: দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের নাটকগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল-

‘তারাবাঈ’, ‘প্রতাপসিংহ’, ‘দুর্গাদাস’, ‘নূরজাহান’: দ্বিজেন্দ্রলালের প্রথম ঐতিহাসিক নাটক ‘তারাবাঈ’। যদিও তাঁর প্রকৃত ঐতিহাসিক নাটক রচনা শুরু হয় ‘প্রতাপসিংহ নাটক রচনার সময়কাল থেকে। স্বাধীনতা সংগ্রামের শ্রেষ্ঠতম সৈনিক প্রতাপের অতুল বীরত্ব, অনুপম দেশপ্রেম ও অলৌকিক ও ত্যাগের চিত্র নাট্যকার অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর পরবর্তী নাটক ‘দুর্গাদাস’-এ ঘটনার অতিরিক্ত আধিক্যে নাটকের ঐক্য ও সংহতি নষ্ট হয়েছে। দ্বিজেন্দ্রলালের শ্রেষ্ঠ ট্র্যাজেডি ‘নূরজাহান’-এ নূরজাহানের অন্তর্দ্বন্দ্ব চিত্রিত।

‘মেবার পতন’, ‘সাজাহান’: এক উদার সাম্যমূলক মহানীতি প্রচার করার জনাই দ্বিজেন্দ্রলাল ‘মেবার-পতন’ নাটক রচনা করেছিলেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক নাটক ‘সাজাহান’। চরিত্র এবং বিবিধ উপকাহিনির সমাবেশে নাট্যকার সুনিপুণ শিল্পকৌশলে সমস্ত ঘটনা ও চরিত্রকে অবিচ্ছিন্নভাব পরস্পরের সঙ্গে গ্রথিত করেছেন।

‘চন্দ্রগুপ্ত’ ও ‘সিংহল বিজয়’: হিন্দু পুরাণ, কিংবদন্তি ও গ্রিক ইতিহাসের উপর নির্ভর করে ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকটি রচিত। এই নাটকের উল্লেখযোগ্য চরিত্র চাণক্য। তাঁর প্রতিভার স্পর্শ ‘সিংহল বিজয়’ নাটকটিতে থাকলেও নাটকখানি আগের নাটকগুলির মতো তেমন সমাদর লাভ করেনি।

কৃতিত্ব: মানবতার মহৎ গৌরব দেখাতে চেয়েছিলেন বলেই দ্বিজেন্দ্রলাল মানবতার বেদনাও গভীরভাবে অনুভব করেছিলেন। দুঃখকে যে বরণ করে নিল সে-ই তো অপরাজেয় গৌরব অধিকার করতে পারল-দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর ঐতিহাসিক নাটকগুলির মধ্যে সেই অপরাজেয় গৌরবগাথার মহিমাকীর্তন করেছেন।

আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment