গিরিশচন্দ্রের উল্লেখযোগ্য দুটি সামাজিক নাটক নিয়ে আলোচনা করো
সামাজিক নাটক: কলকাতার বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরের কাহিনি নিয়েই গিরিশচন্দ্র ঘোষের সামাজিক নাটকগুলি রচিত হয়েছিল। নিরুপদ্রব, গতানুগতিক জীবনধারার পাশাপাশি সামাজিক জীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী নানান ঘটনা তাঁর নাটকে স্থান পেয়েছিল। তাঁর উল্লেখযোগ্য সামাজিক নাটকগুলি হল- ‘প্রফুল্ল’, ‘হারানিধি’, ‘মায়াবসান’, ‘বলিদান’। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি নাটক নিয়ে আলোচনা করা হল। যথা-
প্রফুল্ল: গিরিশচন্দ্রের প্রথম ও প্রসিদ্ধ সামাজিক নাটক ‘প্রফুল্ল’। তাঁর সামাজিক নাটক রচনায় দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’-এর ছায়া লক্ষ করা যায়। ‘প্রফুল্ল’ নাটকের ট্র্যাজেডি, বিশেষত যোগেশের ট্র্যাজেডি-তার সাজানো সংসার ছারখার হয়ে যাওয়া, অবস্থার আকস্মিক অবনতি, মাদকাসক্তি ও রমেশের বিশ্বাসঘাতকতাই নাট্যপরিণতিকে ট্র্যাজিক করে তুলেছে। সহজসরল, স্নেহশীল প্রফুল্লই এই নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র। এ প্রসঙ্গে সমালোচক জানিয়েছেন, “আমাদের প্রেমপূর্ণ প্রাচীন সংসারের আদর্শ ফিরাইয়া আনিবার জন্য স্নেহময়ী প্রফুল্লের আত্মবিসর্জনেই নাটকের মেরুদণ্ড।”
বলিদান: মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে কন্যাদান যে প্রকৃত অর্থে বলিদানের নামান্তর মাত্র, নাট্যকার তাঁর ‘বলিদান’ নাটকে সেই ছবিই তুলে ধরেছেন। পিতার গৃহে যে কন্যা, শ্বশুরগৃহে সে-ই বধূ। এ নাটকে পণপ্রথার মতো সামাজিক সমস্যা ও কন্যাদানের পরবর্তী অবস্থার শোচনীয়তা রূঢ় বাস্তবরীতিতে উপস্থাপিত হয়। ‘বলিদান’ একটি করুণরসাত্মক সামাজিক নাটক।
আরও পড়ুন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা