বাংলা কাব্যধারায় শঙ্খ ঘোষের অবদান আলোচনা করো

বাংলা কাব্যধারায় শঙ্খ ঘোষের অবদান আলোচনা করো

বাংলা কাব্যধারায় শঙ্খ ঘোষের অবদান আলোচনা করো
বাংলা কাব্যধারায় শঙ্খ ঘোষের অবদান আলোচনা করো

ভূমিকা: বিশ শতকের পাঁচের দশক থেকে বাংলা সাহিত্যের নানা শাখায় নিজের সৃষ্টিশীলতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। তাঁর সুবিশাল কাব্যচর্চার ইতিহাসে প্রতিফলিত হয়েছে দেশভাগের ক্লান্তি, রাজনীতি, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সর্বোপরি নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা। তথাকথিত জাঁকজমকপূর্ণতায় আস্থা না রেখে কবি থাকেন ‘আপাত সারল্যের আড়ালে’।

কাব্যগ্রন্থ: কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হল-‘দিনগুলি রাতগুলি’ (১৯৫৬), ‘এখন সময় নয়’ (১৯৬৭), ‘বাবরের প্রার্থনা’ (১৯৭৬), ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ (১৯৯৪), ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’ (১৯৮৪) ইত্যাদি।

কাব্যবৈশিষ্ট্য: শঙ্খ ঘোষ তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতার ভূমিকাংশে কবিতার রূপ কেমন হওয়া উচিত, এ বিষয়ে জানিয়েছেন-“সত্যি বলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই কবিতার। কিন্তু জীবিকাবশে শ্রেণিবশে এতই আমরা মিথ্যায় জড়িয়ে আছি দিনরাত যে একটি কবিতার জন্যেও কখনো-কখনো অনেকদিন থেমে থাকতে হয়…”।

‘দিনগুলি রাতগুলি’ (১৯৫৬) তাঁর প্রথম কাব্য। এর মাধ্যমেই তাঁর কবিজীবনের অভিযাত্রা শুরু হয়। তাঁর প্রথম কবিতা থেকে শেষ লেখা কবিতাটি পর্যন্ত একটি পূর্ণ কবিতা সৃষ্টির যাত্রাপথ চোখে পড়ে। ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’ কাব্যে তিনি লেখেন-

"একলা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি 
তোমার জন্য গলির কোণে 
ভাবি আমার মুখ দেখাব
মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।"

– কবি এখানে সময়ের বহমানতায় মুখ ও মুখোশের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর কবিতাগুলিতে শুধু মনুষ্যত্বের সংকট নয়; ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি সমস্ত কিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। জীবনের শুরু থেকেই তাই তিনি বলে যান-

'সুন্দর কথা কে আর শোনে
দু-চারটি সত্য কথা বলো।"

মূল্যায়ন: সামাজিক স্বপ্ন, বিচ্ছিন্নতাকে কবিতায় ধারণ করাই শঙ্খ ঘোষের কবিতার কবিসত্তার লক্ষ ও চেষ্টা। তাঁর দীর্ঘ কাব্যচর্চার জীবনে শঙ্খ ঘোষ প্রতিনিয়ত সমবেত মানুষের হৃদয়ের বেদনাকেই কবিতায় প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার নামকরণের সার্থকতা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment