টীকা লেখো- বিজ্ঞানচর্চায় ফ্রান্সিস বেকন

টীকা লেখো- বিজ্ঞানচর্চায় ফ্রান্সিস বেকন

টীকা লেখো- বিজ্ঞানচর্চায় ফ্রান্সিস বেকন
টীকা লেখো- বিজ্ঞানচর্চায় ফ্রান্সিস বেকন

ফ্রান্সিস বেকন

ফ্রান্সিস বেকন (Sir Francis Bacon, ১৫৬১-১৬২৬ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ইংল্যান্ডের বৈজ্ঞানিক গবেষণার অন্যতম পথিকৃৎ। বিজ্ঞানচর্চায় তাঁর অবদান কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

(1) সংক্ষিপ্ত পরিচয়: ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সিস বেকন লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। বলা হয়, দুর্বল স্বাস্থ্যের কারণে ছোটোবেলায় তিনি নিজের বাড়িতেই শিক্ষাগ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি শিক্ষাগ্রহণের উদ্দেশ্যে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, দার্শনিক ও ফ্রান্সিস বেকন আইনজীবী। তবে পরবর্তীকালে ফ্রান্সিস বেকন বিজ্ঞানচর্চাতেও আত্মনিয়োগ করেন।

(2) চিন্তাধারা: ফ্রান্সিস বেকন অন্ধভাবে কোনও কিছু বিশ্বাস করার তীব্র বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতে, শুধুমাত্র দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষানিরীক্ষার পর বারংবার একই জিনিস দেখে তবেই সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। তিনি অভিজ্ঞতাবাদ বা Empericism-এর জনক হিসেবেও অভিহিত হন।

(3) বিজ্ঞানচর্চায় অবদান: অনেকে মনে করেন যে, ফ্রান্সিস বেকন প্রকৃত অর্থে বৈজ্ঞানিক ছিলেন না। কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণার উজ্জ্বল সম্ভাবনার প্রতি সমকালীন ও আগামী প্রজন্মের মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টির জন্য তিনি বিশেষ কৃতিত্বের দাবি করতে পারেন। বিজ্ঞানচর্চা ও সাধারণ মানুষকে বিজ্ঞানমুখী করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এমনকী তাঁর উপন্যাসগুলিও ছিল বিজ্ঞানভিত্তিক। প্রকৃতিবিজ্ঞান চর্চায় বেকনের ছিল প্রবল উৎসাহ। তিনি বলেন যে, যদি কোনও মৃতদেহকে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে রেখে দেওয়া হয়, তাহলে তা পচে যায় না।

  • বেকলিয়ান মেথড: ফ্রান্সিস বেকন কর্তৃক প্রবর্তিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল বেকনিয়ান মেথড (Baconian Method)। এই পদ্ধতিতে প্রথমে প্রকৃতির উপর নিরীক্ষণ করে বিভিন্ন ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তারপর ঘটনার কারণ ও ফলাফল নির্ণয়ের জন্য পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। এরপর পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে সাধারণ নীতিসমূহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই পদ্ধতিটি বিজ্ঞানে যৌক্তিক চিন্তাভাবনার ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করতে প্রভূত সাহায্য করে।

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: ফ্রান্সিস বেকনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত পরিকল্পনার পরিচয় পাওয়া যায় ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তাঁর De Augmentis Scientiarum গ্রন্থটিতে। তবে তাঁর রচিত সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ গ্রন্থটি হল Novum Organum. ফ্রান্সিস বেকন ছিলেন বিজ্ঞানসাধনার পক্ষে একজন বড়ো মাপের প্রচারক। তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক কার্য সম্পাদনের জন্য একটি অ্যাকাডেমি গড়ে তোলার কথাও বলেন। তাঁর জীবদ্দশায় অবশ্য এরূপ কোনও প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর অর্ধশতাব্দী পরে তাঁরই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ইংল্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত হয় রয়্যাল সোসাইটি (Royal Society)।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment