মিড-ডে মিলের প্রয়োজনীয়তা প্রবন্ধ রচনা 400+ শব্দে

মিড-ডে মিলের প্রয়োজনীয়তা প্রবন্ধ রচনা – আজকের পর্বে মিড-ডে মিলের প্রয়োজনীয়তা প্রবন্ধ রচনা আলোচনা করা হল।

মিড-ডে মিলের প্রয়োজনীয়তা প্রবন্ধ রচনা

মিড-ডে মিলের প্রয়োজনীয়তা

ভূমিকা

‘স্বাস্থ্যই সম্পদ’ কথাটি বহুল প্রচারিত। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হলে কোনোদেশের মানুষ, সেই দেশ যেমন শক্তিশালী হতে পারে না তেমনি শৈশব থেকে শিশুর স্বাস্থ্যরক্ষার ব্যবস্থা না করলে সে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হবে ভগ্ন স্বাস্থের কারণে এবং নানা কারণে দেশের অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হবে। শরীর সুস্থ না থাকলে কর্মের উৎসাহে ভাটা দেখা দেবে। আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৪৭ সালে। তারপরেও দীর্ঘবছর কেটে গেছে। এখনও জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চি ত হয়ে নিরক্ষরতার অন্ধকারে ডুবে আছে। দেশের অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত জনগণ। গনতন্ত্রের সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষিত জনগণের ওপর।

শিশু শিক্ষা

আজ যারা শিশু পরবর্তী কালে বড়ো হয়ে তারাই হবে দেশের কর্ণধার। শিশুকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করলে দেশ ও জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করতে পারবে না। বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে ভারতের শিশুদের একটি বড় অংশ দারিদ্রের ফলে স্কুলে যেতে পারছে না। তাদের শৈশবের বিকাশ সঠিকভাবে হচ্ছে না এবং জীবন শুরুর প্রাতে তাদের নিযুক্ত করা হচ্ছে অর্থোপার্জন কাজে। যার ফলে দিনে দিনে বাড়ছে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ও শিশু অপরাধপ্রবণতা। সরকার জোর দেয় প্রাইমারী শিক্ষার ওপর। তারা যাতে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পায় স্কুলে তার ব্যবস্থা এবং শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। দরিদ্র শিশুরা স্কুলে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণে সচেষ্ট হয়। কিন্তু তারপরেও দেখা গেল যে অনেক শিশু স্কুলে আসছে না।

শিশুশিক্ষার পথে প্রতিবন্ধকতা

অনুসন্ধানের ফলে জানা গেল শিশুর স্কুলে না যাওয়ার কারণ সচেতনতার অভাব ও দারিদ্র। দারিদ্রের জন্য মা বাবা অনেক সময় শিশুকে স্কুলে না পাঠিয়ে শিশুশ্রমিক হিসাবে নানা কাজের সাথে যুক্ত করছে এবং স্কুলে পাঠালে সামান্য যে ব্যয় হবে তাও ব্যয় করতে অসমর্থ হচ্ছে।

মিড-ডে মিল

শিশুর স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য এবং শিশুদের স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধির জন্য মিড-ডে মিলের প্রকল্প সূচিত হয় ১৯৯৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ‘ন্যাশানাল প্রোগ্রাম অফ নিউট্রেশন সার্পোট টু প্রাইমারি এডুকেশন’এর মাধ্যমে। সর্বশিক্ষা প্রকল্পের অর্ন্তগত এই অভিযানে শিশুদের বিদ্যালয়ে মাথা পিছু একশত গ্রাম করে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এবং ২০০২ সালে প্রাইমারী স্কুলের সাথে অন্যান্য বিদ্যালয়কে যুক্ত করা হয় ও রান্না করা খাদ্য সরবরাহ শুরু হয়। খাদ্যের ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে ২০০৪ সালে ৩০০ গ্রাম এবং ১২গ্রাম প্রোটিন ধার্য করা হয় ও ২০০৬ সালে তা আরও বাড়িয়ে ৪৫০ গ্রাম ক্যালোরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

প্রকল্পের সুফল

এই প্রকল্প গ্রহণের ফলে পড়ুয়া ছাত্ররা এখন যেমন ক্যালোরি ঘাটতি জনিত রোগে কম আক্রান্ত হচ্ছে তেমনি স্কুলের প্রতি আর্কষণ ও বৃদ্ধি হয়েছে। আমাদের দেশে জাতিগত কুসংস্কার একটি মারাত্মক ব্যাধির সমান। সমস্ত শ্রেণির ও সমস্ত জাতের ছাত্র-ছাত্রীরা রান্নাকরা খাবার একসাথে খাওয়ার ফলে শিশুদের মন এই সংস্কার থেকে মুক্ত হচ্ছে ও তাদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে প্রেম- প্রীতি-সখ্যতার বন্ধন।

উপসংহার

এই প্রকল্প ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে খুবই সময়োপযোগী। তবে প্রকল্পের সাফল্য নির্ভর করছে যারা বাস্তবরূপ দিচ্ছেন তাঁদের ওপর। কিছু অসাধু ব্যক্তি অনেকসময় নিজের স্বার্থে প্রকল্প রূপায়নে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে। তাই ছাত্র-ছাত্রীরা প্রকল্পের সুফল যাতে সঠিকভাবে পায় সে ব্যাপারে শিক্ষক অভিভাবক ও জনগণকে সর্তক থাকতে হবে।

আরও পড়ুন – বিশ্ব উষ্ণায়ণ ও গ্রিনহাউস এফেক্ট প্রবন্ধ রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment