তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে রোমান্টিকতা ও বাস্তবতার যে টানাপোড়েন লক্ষ করা যায়, তা ব্যক্ত করো

তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে রোমান্টিকতা ও বাস্তবতার যে টানাপোড়েন লক্ষ করা যায়, তা ব্যক্ত করো

তেলেনাপোতা আবিষ্কার' গল্পে রোমান্টিকতা ও বাস্তবতার যে টানাপোড়েন লক্ষ করা যায়, তা ব্যক্ত করো
তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে রোমান্টিকতা ও বাস্তবতার যে টানাপোড়েন লক্ষ করা যায়, তা ব্যক্ত করো

ভূমিকা

প্রেমেন্দ্র মিত্র ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ একটি কবিত্বরসপূর্ণ রোমান্টিক ভাবমূলক গল্প। এই গল্পের ঘটনায় ক্লাইম্যাক্স নেই, চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য নেই। সমস্ত বাস্তব প্রয়োজনবিচ্ছিন্ন মানবমন এখানে আকস্মিক ভাববিন্দুতে মিশেছে।

বিশ্লেষণ

গল্পটি ভাবের দিক থেকে দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে রয়েছে তেলেনাপোতা গ্রামে আসা থেকে রাত্রির অভিজ্ঞতা নিয়ে নায়কের ঘুমিয়ে পড়া। এই অংশ নায়কের মনে রোমান্টিকতার ভাব বিস্তার করেছে। তেলেনাপোতার প্রকৃতি ও চরাচর তার মনকে বিস্ময়মুগ্ধ, আনন্দ-আহ্লাদে আপ্লুত করেছে। আবার কৃষ্ণপক্ষের ম্লান জ্যোৎস্নায় জরাজীর্ণ অট্টালিকার জানালায় আলোর ক্ষীণ রেখায় আবছা নারীর ছায়ামূর্তি যেন কথকের মনে ক্ষণিকের জন্য ‘স্বপ্নের বুদবুদ’ ভাসিয়ে দিয়েছে। এ অংশ রোমান্টিক কল্পনার। অন্য ভাগটি রূঢ় বাস্তবের। সেখানে নায়ক ঘুম থেকে উঠে বাস্তব উপলব্ধি করে। কিন্তু তা নায়কের মনের রোমান্সকে দমন করলেও মুছতে পারে না। চেতন-অবচেতনের মাঝে এক অলৌকিকতা যেন তাকে দ্বিধাগ্রস্ত করে তোলে। এই দুই প্রান্তিক বৈশিষ্ট্য, এই বিপরীত বৈশিষ্ট্যই গল্পটিকে ইঙ্গিতধর্মী করে।

রোমান্টিক কল্পনা না থাকলে শহুরে শিক্ষিত যুবক যামিনীর প্রতি আকর্ষিত হত না। কিন্তু তেলেনাপোতার গ্রামীণ আবহ, স্বপ্নময়তা, রোমান্টিক ভাবনা তার মানসমুক্তি ঘটায়। শেলি, কিট্স প্রমুখ রোমান্টিক কবিরা কবিতায় নিজস্ব রোমান্টিক জগৎ তৈরি করে আবার বাস্তব পৃথিবীর অভিঘাতে ফিরে আসেন। এ গল্পেও তাই তেলেনাপোতার জ্বলজ্বলে স্মৃতির উপর শহুরে জীবনের উদাসীনতার আস্তরণ পড়ে যায়। বাস্তব জীবনের রুদ্ধশ্বাস, অসহায় বেদনা এবং ব্যর্থতায় গল্প পরিসমাপ্ত হয়। তাই ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের কাহিনিবস্তু রোমান্টিকতা ও বাস্তবতার টানাপোড়েনে ট্র্যাজেডির বিশিষ্টতা লাভ করেছে।

আরও পড়ুন – আগুন নাটকের বড়ো প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment