“কে, নিরঞ্জন এলি?”-নিরঞ্জন আসলে কে এবং কোন্ পরিস্থিতিতে গল্পকথক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন?
নিরঞ্জন
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ ছোটোগল্পে বর্ণিত যামিনীর মায়ের দূরসম্পর্কের বোনপো হল নিরঞ্জন।
পরিস্থিতি বিচার
কথক তেলেনাপোতায় মাছ ধরার আকর্ষণে যান। পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে নিষ্ফল হওয়ার পর সঙ্গী মণিদার আত্মীয়াকন্যা যামিনী তাদের মধ্যাহ্নভোজ পরিবেশন করে এবং সেইসময় তার মধ্যে অসহায় অস্থিরতা দেখা যায়। যখন তারা খাওয়া শেষ হওয়ার পর বিশ্রাম করতে যাওয়ার কথা ভাবছে, তখনই যামিনী মণিদাকে ডাকে। মণিদা ও যামিনীর কথোপকথনে এক অদ্ভুত করুণ আখ্যান ফুটে ওঠে। যামিনীর বৃদ্ধা মা বর্তমানে দৃষ্টিহীন এবং পঙ্গু। তাঁর দূরসম্পর্কের বোনপো নিরঞ্জনের সঙ্গে তিনি যামিনীর বিয়ে ঠিক করেন। বছর চারেক আগেও সে এসে বৃদ্ধাকে বলে যায় বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে যামিনীকে সে বিয়ে করবে। প্রতিশ্রুতি পেয়ে বৃদ্ধা অজগর-পুরীতে সেই আশাতেই দিন গোনেন। কিন্তু বাস্তবে ছেলেটি তাদের প্রতারণা করে। সে কখনও বিদেশে যায়নি এবং বর্তমানে অন্যত্র বিয়ে করে সে সংসার করছে। কিন্তু বৃদ্ধা সে-কথা জানলে তার মৃত্যু অনিবার্য। এমন পাপের ভাগী কেউ হতে চায় না। তাই সবাই তাকে ক্রমাগত মিথ্যা বলে।
বৃদ্ধার এই অসহায়তায় ভারাক্রান্ত কথক উঠে দাঁড়ান। পরম মানবিকতা থেকেই বৃদ্ধার ছেঁড়া কাঁথা-জড়ানো শীর্ণ কঙ্কালসার দৃষ্টিহীন মূর্তির প্রশ্নের উত্তরে নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
আরও পড়ুন – আগুন নাটকের বড়ো প্রশ্ন উত্তর