যে ঘরে গল্পের চরিত্রেরা রাতের জন্য আশ্রয় নেয়, সেই ঘরটির বর্ণনা দাও।
অট্টালিকায় বাসযোগ্য ঘর
প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে কথক তার দুজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে অবসর যাপনের জন্য মহানগরী থেকে ত্রিশ মাইল দূরে তেলেনাপোতা গ্রামে যান। সেখানে একটি সুবিশাল ভগ্নপ্রায় প্রাসাদের অপেক্ষাকৃত বাসযোগ্য একখানি জীর্ণ পোড়ো ঘরে তাদের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা হয়।
অট্টালিকার বর্ণনা
বাড়িটিতে পৌঁছোনোর একটু আগেই পথের দু-পাশে ভাঙা থাম, দেউড়ির খিলান প্রভৃতি প্রাচীন অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ কথকের চোখে পড়ে। মহাকালের সাক্ষ্যবাহী অট্টালিকা কথকের মনে কুয়াশাচ্ছন্ন স্মৃতিলোকের শিহরণ জাগায়। সেই জীর্ণ অট্টালিকার ভাঙা ছাদ, ধসে পড়া দেয়াল আর পাল্লাহীন জানালা দেখে তাদের মনে হয় যেন সেটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গপ্রাকার। সেখানে গোরুর গাড়ির গাড়োয়ান একটি ভাঙা লণ্ঠন আর এক কলশি জল তাদের কাছে পৌঁছে দেয়। সেই ঘরে ভ্যাপসা গন্ধ ও চামচিকের সহাবস্থান। রাত বাড়ার সঙ্গে অ্যানোফিলিস মশার ঝাঁকের আক্রমণ শুরু হয়। গভীর রাতে গল্পকথক একা অট্টালিকার ছাদে উঠে দেখেন সিঁড়ি ভগ্নপ্রায়, যে-কোনো সময়ে ইট বা টালি খসে পড়তে পারে। ছাদে গিয়ে লক্ষ করেন – আলিসার বেশিরভাগ অংশই ধূলিসাৎ হয়েছে এবং সমস্ত ফাটলে ফাটলে বিভিন্ন গাছের শিকড় সুবিস্তৃত। এইভাবেই আলোচ্য গল্পে তেলেনাপোতা গ্রামের জীর্ণ অট্টালিকার বর্ণনা গল্পের আবহনির্মাণে যথোপযুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন – আগুন নাটকের বড়ো প্রশ্ন উত্তর