নারী নির্যাতন প্রবন্ধ রচনা 400+ শব্দে

নারী নির্যাতন প্রবন্ধ রচনা – আজকের পর্বে নারী নির্যাতন প্রবন্ধ রচনা আলোচনা করা হল।

নারী নির্যাতন প্রবন্ধ রচনা

নারী নির্যাতন প্রবন্ধ রচনা

নারী নির্যাতন প্রবন্ধ রচনা

ভূমিকা

মানব সমাজ গড়ে উঠেছে নারী এবং পুরুষকে নিয়ে। উভয়ের যৌথ প্রচেষ্টায় সমাজ হয়েছে সুন্দর, সুখ-শান্তিতে ভরপুর। কিন্তু সারা পৃথিবীতে নারীর ওপর নির্যাতন দেখে প্রত্যেক শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ আজ চিন্তিত। নারী নির্যাতন ও তার সমস্যা এখন দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। সমাজে পণপ্রথা একটি মারাত্মক সমস্যা। প্রতিবছর অজস্র নারী হচ্ছেন পণপ্রথার বলি। পণের অত্যাচারে নারী খুন হচ্ছেন, এমন কি নারীরা বাধ্য হচ্ছেন আত্মাহুতি দিতে। বর্তমান সমাজে সংসারের সুপরিবেশ রক্ষা, সন্তান পালন, গৃহস্থালী কাজকর্ম করেও আর্থিক সমস্যা সমাধানের জন্য ঘরের বাইরে পা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন নারীরা। শিক্ষাক্ষেত্রে, অফিস-কাছারিতে, যেকোন প্রতিযোগিতায় পুরুষের সাথে সমান তালে এগিয়ে চলেছেন নারীরা।

তবুও নারীরা যখন নির্যাতিতা হন তখন প্রশ্ন ওঠে পুরুষরা বিবেকহীন হন কেন? একসময় সতীদাহের নামে নারীদের পুড়িয়ে মারা হত। কী অমানবিক ও নিষ্ঠুর সামাজিক এই কুসংস্কার। রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় সতীদাহ প্রথা বিরোধী আইন পাস হয়। এখনও নারীকে পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটতে দেখা যায়, পথ-ঘাটে নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার একবিংশ শতাব্দীতে ও ঘটে থাকে। আগে নারীরা নির্যাতিতা হলে তা অনেক সময় খেউ জানতে পারত না। এখন মিডিয়া, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান প্রভৃতির কল্যাণে প্রচারের ফলে তা জানা যাচ্ছে। নারীদের পণ্যায়নই তাদের ওপর নির্যাতনের অন্যতম কারণ। নারীরা পণ্যের মতো বিদেশের বাজারে বিক্রিও হয়ে যাচ্ছেন।

নারী নির্যাতন বন্ধের জন্য প্রচেষ্টা

নারী নির্যাতনের বীভৎস ও কদর্য রূপ সবচেয়ে বেশী দেখা যায় পণপ্রথার জন্য। বধূহত্যা, বধূকে পুড়িয়ে মারা, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া প্রভৃতি বধূনির্যাতনের মধ্যে পড়ে। পণদেওয়া ও পণ গ্রহণ করা কখনই বাঞ্ছনীয় নয়। এই কু-প্রথার জন্য সরকার কড়া মনোভাব নিয়ে আইন প্রণয়ন করেছে। এজন্য দু-বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। বিয়ের সাতবছরের মধ্যে যদি বধূকে আঘাতের ফলে বা অগ্নিসংযোগের জন্য তার মৃত্যুহয় তাহলে এই ঘটনা বধূহত্যা বলে মনে করা হবে এবং স্বামী, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়রাও অভিযুক্ত হবে। অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হবে তিনি অপরাধী নয়। ১৯৮৩ সালের ৪৯৮ ধারায় আইনে বলা হয়েছে পুলিশ এরূপ ঘটনায় ব্যবস্থা তৎক্ষনাৎ নেবে। ভারতে পুরুষের অনুপাতে নারীর সংখ্যা ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে। ১৯৯৪ সালে আইন প্রনয়ন করা হয়েছে ন্যাটাল ডায়াগনষ্টিক (রেগুলেশন অ্যান্ডপ্রিভেনশন অব মিসইউজ) কণ্যাভ্রুণ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা।

সমস্যা সমাধানে প্রতিবন্ধকতা

মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার এখন সামাজিক ব্যাধি রূপে দেখা দিয়েছে। পুরুষেরা শারীরিক দিক থেকে মেয়েদের থেকে বেশী ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় মেয়েদের ওপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। এই মানসিকতার জন্যও মেয়েরা অনেক সময় অত্যাচারিতা হন। কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের অত্যাচারের ব্যাপারে জাতীয় মহিলা কমিশন নির্দিষ্ট ‘কোড অফ কন্ডাকট্’ চালু করেছেন। কিন্তু আইন থাকলেও বাস্তবে তা ঠিকমতো রূপায়ন হচ্ছেনা। শিক্ষার প্রসার ঘটলেও সচেতনতার অভাবে পণপ্রথা থেকে মানুষ এখনও মুক্ত হয়নি। বধূর ওপর স্বামীর, পরিবারের অত্যাচার এখনও চলছে। গণতান্ত্রিক দেশে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকর আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট করা হলেও অনেকসময় তা লঙ্ঘিত হচ্ছে স্বচ্ছ মানসিকতার অভাবে।

উপসংহার

নারীকে আর দুর্বল ভাবা উচিত হবেনা। জীবন বিকাশের প্রত্যেক ক্ষেত্রে নারীরাও উজ্জ্বল প্রতিভার সাক্ষ্য বহন করছেন। শুধু আইন করে মনের সংকীর্ণতা দূর করা সম্ভব নয়, প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার। এব্যাপারে সরকারের সাথে বেসরকারী উদ্যোগে জনসচেতনতা গড়ে তোলা খুবই জরুরী।

আরও পড়ুন – প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব প্রবন্ধ রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment