শ্রীকৃষ্ণ যোগস্থ হয়ে নিষ্কাম কর্মের সম্পাদনের ক্ষেত্রে যে বুদ্ধিযোগের কথা বলেছেন তার তাৎপর্য কী? এই যোগ কাম্য কর্মের থেকে উন্নততর কেন

শ্রীকৃষ্ণ যোগস্থ হয়ে নিষ্কাম কর্মের সম্পাদনের ক্ষেত্রে যে বুদ্ধিযোগের কথা বলেছেন তার তাৎপর্য কী? এই যোগ কাম্য কর্মের থেকে উন্নততর কেন

শ্রীকৃষ্ণ যোগস্থ হয়ে নিষ্কাম কর্মের সম্পাদনের ক্ষেত্রে যে বুদ্ধিযোগের কথা বলেছেন তার তাৎপর্য কী? এই যোগ কাম্য কর্মের থেকে উন্নততর কেন
শ্রীকৃষ্ণ যোগস্থ হয়ে নিষ্কাম কর্মের সম্পাদনের ক্ষেত্রে যে বুদ্ধিযোগের কথা বলেছেন তার তাৎপর্য কী? এই যোগ কাম্য কর্মের থেকে উন্নততর কেন

বুদ্ধিযোগ

শ্রীকৃষ্ণ নিষ্কাম কর্মযোগ তত্ত্বে যোগস্থ হয়ে কাজ করতে বলেছেন। ‘যোগস্থ’ পদটির অর্থ হল পরমেশ্বরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বুদ্ধিকে পরমেশ্বরে নিহিত করে কর্ম করা। নিষ্কাম কর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে বুদ্ধিযোগের তাৎপর্য হল-

• কর্মফলে আসক্তি থাকবে না। ‘আমি কর্তা’-এই অভিমান যেন না থাকে।

• কর্মের সফলতা ও নিষ্ফলতাকে তুল্য মনে করবে। কর্ম সফল হলে যেমন উৎফুল্ল হবে না, বিফল হলে বিষণ্ণ হবে না। একেই বলা হয়েছে সমত্ববুদ্ধি, এটিই যোগের প্রকৃত লক্ষণ। নিষ্কাম কর্মীকে ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমত্ব-বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে কাজ করতে হবে। একেই বলা হয় বুদ্ধিযোগ।

বুদ্ধিযোগ কাম্যকর্ম অপেক্ষা উন্নত

বুদ্ধিযোগ অপেক্ষা সকাম কর্ম (কাম্যকর্ম) নিকৃষ্ট কেন তা আলোচনা করা যাক-

• সকাম কর্মে বুদ্ধি মনের অসংখ্য কামনা-বাসনা দিয়ে চালিত হয়ে বিক্ষিপ্ত হয় এবং নানাদিকে ধাবিত হয়। অপরদিকে বুদ্ধিযোগে যোগস্থ ব্যক্তির বুদ্ধি পরমেশ্বরে যুক্ত থাকে।

• বুদ্ধিযোগে যোগস্থ ব্যক্তির চিত্ত কোনো সন্দেহ বা সংশয় দ্বারা আন্দোলিত হয় না। অপরপক্ষে বাসনাযুক্ত কর্মে ব্যক্তির চিত্তের কোনো স্থিরতা থাকে না। সবসময় সংশয় ও সন্দেহে আন্দোলিত হয়।

• বুদ্ধিযোগে যুক্ত ব্যক্তি শান্তি ও সমতার সঙ্গে কাজ করেন। তার মনে কোনো রাগ বা দ্বেষ থাকে না। অপরপক্ষে সকাম কর্মীর চিত্ত অশান্ত এবং বিভিন্ন আবেগের দ্বারা বিক্ষুব্ধ হয়ে থাকে।

• বুদ্ধিযুক্ত ব্যক্তির কর্মে কখনও কোনো ভ্রম উৎপন্ন হয় না। তিনি সমত্ববুদ্ধিতে ঈশ্বরের ইচ্ছায় কর্ম করেন। অপরপক্ষে বাসনাচালিত ব্যক্তি প্রায়ই ভ্রমে পতিত হন।

• বুদ্ধিযুক্ত ব্যক্তি সদা আনন্দে থাকেন। অপরপক্ষে সকাম কর্মীর আনন্দ ক্ষণস্থায়ী।

• বুদ্ধিযোগ মানুষকে মোক্ষের পথে নিয়ে যায়। অপরপক্ষে কামনা-বাসনাপ্রসূত কর্ম ব্যক্তিকে সংসারে আবদ্ধ করে।

শ্রীকৃষ্ণ তাই অর্জুনকে সকাম কর্ম ত্যাগ করে বুদ্ধিযোগে যুক্ত থেকে নিষ্কামকর্ম পালন করার উপদেশ দেন।

আরও পড়ুন – যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃতি – অবরোহ এবং আরোহ

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment