রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো

রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো

রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো
রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো

ভূমিকা: প্রাবন্ধিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ভারতী’, ‘সাধনা’, ‘ভাণ্ডার’, ‘নবপর্যায় বঙ্গদর্শন’ ইত্যাদি একাধিক পত্রিকা সম্পাদনার সূত্রে বাংলা প্রবন্ধের সম্ভারকে বাড়িয়ে তুলেছিলেন। তাঁর ভাষা ও গদ্যরীতির বৈচিত্র্য, অসামান্য শৈলী পাঠকবর্গের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে

আত্মপরিচয়মূলক প্রবন্ধ: রবীন্দ্রনাথের আত্মকথামূলক গ্রন্থগুলি হল— ‘জীবনস্মৃতি’ (১৯১২), ‘ছেলেবেলা’ (১৯৪০), ‘আত্মপরিচয়’ (১৯৪৩)। রবীন্দ্রনাথের মতে, ‘জীবনস্মৃতি’ গ্রন্থটি আত্মজীবনী নয়, জীবনের স্মৃতি মাত্র।

ভ্রমণকাহিনি বিষয়ক প্রবন্ধ: রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণপিপাসু মনের পরিচায়ক ‘বিশ্বযাত্রী’ প্রবন্ধটি। দু-চোখ ভরে বিশ্বের সৌন্দর্যরসকে পান করার পরিচয় নিবদ্ধ আছে ‘য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়েরী’ (প্রথম-১৮৯১, দ্বিতীয়-১৮৯৩), ‘জাপান যাত্রী’ (১৯১৯), ‘পশ্চিম-যাত্রীর ডায়েরী’ (১৯২১), ‘পারস্যে’ (১৯৩৬) ইত্যাদি গ্রন্থে। এগুলি ডায়ারির আকারে লিখিত। পত্রাকারে তিনি লিখেছিলেন-‘য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র’ (১৮৮১), ‘ছিন্নপত্র’ (১৯১২), ‘জাভা যাত্রীর পত্র’ (১৯২৭), ‘রাশিয়ার চিঠি’ (১৯৩১)।

শিক্ষা বিষয়ক প্রবন্ধ: শিক্ষা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগে রয়েছে ১৯০৫ থেকে ১৯০৭ সালের মধ্যে রচিত নিবন্ধসমূহ। যথা-‘ছাত্রদের প্রতি সম্ভাষণ’, ‘শিক্ষাসংস্কার’, ‘তপোবন’, ‘স্ত্রী শিক্ষা’, ‘শিক্ষার বাহন’ প্রভৃতি। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে ১৯১৯ থেকে ১৯৩৬ সালের মধ্যে রচিত নিবন্ধসমূহ। যথা-‘শিক্ষার মিলন’, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ’, ‘শিক্ষার বিকিরণ’, ‘শিক্ষা ও সংস্কৃতি’ প্রভৃতি।

ধর্ম বিষয়ক প্রবন্ধ: রবীন্দ্রনাথ মানবধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর ধর্মদর্শন বিষয়ক প্রবন্ধগুলি হল-‘ধর্ম’ (১৯০৯), ‘শান্তিনিকেতন’ (১৯০৯-১৬), ‘মানুষের ধর্ম’ (১৯৩৩) প্রভৃতি।

স্বদেশ ও সমাজ বিষয়ক গ্রন্থ: রবীন্দ্রনাথের স্বদেশ ও সমাজনীতির কথা যে গ্রন্থগুলিতে বহুমাত্রিক রূপ লাভ করেছে, সেগুলি হল- ‘আত্মশক্তি’ (১৯০৫), ‘ভারতবর্ষ’ (১৯০৬), ‘রাজাপ্রজা’ (১৯০৮), ‘স্বদেশ’ (১৯০৮), ‘কালান্তর’ (১৯৩৭), ‘সভ্যতার সংকট’ (১৯৪১) প্রভৃতি।

সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধ: রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সম্পর্কিত আলোচনাসমূহের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায় ‘প্রাচীন সাহিত্য’ (১৯০৭), ‘আধুনিক সাহিত্য’ (১৯০৭), ‘লোকসাহিত্য’ (১৯০৭) প্রভৃতি গ্রন্থে। ‘প্রাচীন সাহিত্য’ গ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথের সংস্কৃত সাহিত্যে গভীর অনুশীলন ও গবেষণার পরিচায়ক। রবীন্দ্রনাথের বহুমুখী প্রতিভা প্রবন্ধসাহিত্যকে অসামান্য শিল্পসুষমা দান করেছে।

আরও পড়ুন – বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment