রবীন্দ্রকাব্যের ‘সূচনা পর্ব’ সংক্ষেপে বিবৃত করো
সময়কাল
রবীন্দ্রনাথের কবিতা রচনার প্রথম তিন পর্বকে শৈশব বা সূচনা পর্ব আখ্যা দেওয়া যায়। ১৮৭৮ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যেই এই পর্বের পূর্ণবিকাশ।
‘হিন্দুমেলার উপহার’ (১৮৭৫) কবিতা রচনার মধ্য দিয়ে যে কাব্যিক যাত্রাপথের সূচনা হয়েছিল, তার প্রথম জয়নিশান স্থাপিত হল-১৮৭৮ সালে প্রকাশিত কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’-র মাধ্যমে। পরবর্তীকালে কবি লিখলেন ‘বনফুল’ (১৮৭৮), ‘ভগ্নহৃদয়’ (১৮৮১) কাব্যগ্রন্থ দুটি।
কাব্যবৈশিষ্ট্য
১৮৭৮ সালে প্রকাশিত ‘কবিকাহিনী’ কাব্যগ্রন্থটি চারটি সর্গে সমাপ্ত। বলা বাহুল্য, এ কাব্য অপরিপক্ক, অপূর্ণ ও অসার্থক একটি রচনা। কিশোর কবির রচিত এ কাব্যে আবেগের বাহুল্য দৃশ্যমান।
কবির প্রথম রচিত কাব্য ‘বনফুল’ (১৮৮০)-এ আবেগের প্রাচুর্য, ঘটনা ও চরিত্রকে বাস্তব রূপ দিতে পারেনি। ‘বনফুল’ তাঁর প্রাথমিক পর্বে রচিত কাব্য হলেও ছন্দ ও শব্দ প্রয়োগে দক্ষতার অভাব তাতে ছিল না।
‘ভগ্নহৃদয়’ (১৮৮১) কাব্যটিকে কবি গীতিকাব্য আখ্যা দিয়েছেন; • কিন্তু এই বিশাল কাব্যে ঘটনার ক্রমবিকাশ অনুযায়ী কাব্যটিকে আখ্যানকাব্য বলাই শ্রেয়। ‘ভগ্নহৃদয়’ কাব্যে আবেগের অতিশয়োক্তি কবিকে বিব্রত • করেছিল, তাই এর দ্বিতীয় মুদ্রণে তিনি সম্মত হননি। এই কাব্যগ্রন্থটি ‘শ্রীমতি ও হে’-কে উৎসর্গ করা হয়েছে।
মূল্যায়ন
কবির সূচনা পর্বের কাব্যগুলিতে বিহারীলাল চক্রবর্তী, অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ কবিদের সুদূরপ্রসারী প্রভাব ছিল। পরিণত বয়সে কবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর কিশোর বয়সের এই কাব্যগুলিকে মান্যতা দেননি।
আরও পড়ুন – বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর