রবীন্দ্রকাব্যের ‘প্রান্তিক পর্ব’ সংক্ষেপে বিবৃত করো
কাব্যপরিচয়
রবীন্দ্রকাব্যধারায় ১৯৩৮-১৯৪০ সাল পর্যন্ত সময়পর্বকে প্রান্তিক পর্ব বলা হয়। এই সময়পর্বে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন- ‘প্রান্তিক’ (১৯৩৮), ‘সেঁজুতি’ (১৯৩৮), ‘প্রহাসিনী’ (১৯৩৮), ‘আকাশপ্রদীপ’ (১৯৩৯), ‘নবজাতক’ (১৯৪০)।
কাব্যবৈশিষ্ট্য
১৯৩৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কবি রোগাক্রান্ত হন, অকস্মাৎ ব্যাধির আঘাতে সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে কবি যে নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করেন, ‘প্রাস্তিক’ কাব্যের কবিতাগুলিতে তারই প্রতিফলন লক্ষ করা যায়। উপনিষদের বাণী এবং মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে এসে কবির উপলব্ধি ব্যক্ত হয় এই কাব্যের কবিতায়-
"যাবার সময় হল বিহঙ্গের। এখনি কুলায় রিক্ত হবে। স্তব্বগীতি ভ্রষ্ট নীড় পড়িবে ধূলায় অরণ্যের আন্দোলনে।"
আবার, এই পর্বে লেখা ‘প্রহাসিনী’ কাব্যটি কবির অন্তর্বেদনাকে প্রশমিত করার প্রয়াস। ‘প্রহাসিনী’ হাস্যরসাত্মক লঘুরসের কাব্য। এই পর্বের ‘নবজাতক’ কাব্যে মানবতার উপর সুগভীর বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত হয়েছে কাব্যটির নাম কবিতায়।
মূল্যায়ন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালীন অস্থির বিশ্ব এবং রোগক্লান্ত জীবনের শেষ লগ্নে এসে লেখা ‘প্রান্তিক’ থেকে ‘নবজাতক’ এই কাব্যগ্রন্থগুলিতে একদিকে যেমন রয়েছে পুঁজিবাদী ঔপনিবেশিক সমাজ থেকে মুক্তির প্রত্যাশা, তার সঙ্গেই রয়েছে সভ্য নামধারী বর্বর সভ্যতাকে ধ্বংস করে, নতুন জীবন, নতুন যুগের আহ্বান-
"নবীন আগন্তুক, নবযুগ তব যাত্রার পথে চেয়ে আছে উৎসুক।"
আরও পড়ুন – বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর