মেঘনাদবধ কাব্যে’-এর অভিনব উপাদান এবং বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো
বিশিষ্টতা: অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত, নয়টি সর্গে বিন্যস্ত মোট তিন দিন ও দু-রাত্রির ঘটনা সংবলিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ (১৮৬১) মধুকবির সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মহাকাব্যরূপে বিবেচিত হয়।
মেঘনাদবধ কাব্য-এরউপাদান: বাল্মীকি রচিত রামায়ণের লঙ্কাকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত রামানুজ লক্ষ্মণের হাতে রাবণতনয় মেঘনাদের অন্যায় সমরে মৃত্যুবরণের কাহিনি এ কাব্যের মূল বিষয় হলেও কাব্যটি এক নতুন ও স্বাধীন সৃষ্টি।
চরিত্রসৃষ্টি ও প্রকাশভঙ্গিতে অভিনবত্ব: মধুসূদন দত্ত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অভিনব প্রকাশভঙ্গির জন্য এবং চরিত্রসৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে যুগোত্তীর্ণ স্রষ্টার আসনে অধিষ্ঠিত। মূলত তিন জাতীয় চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে তাঁর কাব্যে-দেবতা, মানব ও রাক্ষস। ইন্দ্রজিৎ এখানে বীরত্বের প্রতিনিধি, বিভীষণ দেশদ্রোহী-এ ছাড়া রাবণ, মন্দোদরী, চিত্রাঙ্গদা, প্রমীলা, রাম, লক্ষ্মণ, সীতা এরা স্বকীয় ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল।
বৈশিষ্ট্য:
• এই কাব্য স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালপ্রসারী।
• কাব্যটি বিয়োগান্তক।
• এই মহাকাব্যে তথাকথিত নায়কের পরাজয় হয়েছে।
• এতে করুণরসের আধিক্য দেখা যায়।
• এই মহাকাব্যের চরিত্রগুলি জটিল জীবনজিজ্ঞাসায় তাৎপর্যপূর্ণ।
• এতে ৯টি সর্গ আছে। যথা-অভিষেক, অস্ত্রলাভ, সমাগম, আশোকবন, উদ্যোগ, বধ, শক্তিনির্ভেদ, প্রেতপুরী ও সংস্ক্রিয়া।
• এই মহাকাব্যে ওজস্বী ভাষা ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের সার্থক প্রয়োগ রয়েছে।
আরও পড়ুন – বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর