মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে রাফায়েল-এর অবদান লেখো

মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে রাফায়েল-এর অবদান লেখো

মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে রাফায়েল-এর অবদান লেখো
মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে রাফায়েল-এর অবদান লেখো

মানবতাবাদী শিল্পী হিসেবে রাফায়েল-এর অবদান 

সানজিও রাফায়েল (Sanzio Raphael, ১৪৮৩-১৫২০ খ্রি.) ছিলেন একজন বিশ্ববিখ্যাত ইতালীয় চিত্রশিল্পী এবং স্থপতি। তাঁর সৃষ্টিগুলি গঠনের স্বচ্ছতা, রচনার স্বাচ্ছন্দ্য এবং মানুষের মহিমার নিওপ্লেটোনিক (Neoplatonic) আদর্শের দক্ষ প্রকাশ হিসেবে প্রশংসিত হয়।

(1) ফ্লোরেন্সের শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ: রাফায়েলের বাবা জিওভানি স্যান্টি (Giovanni Santi) ছিলেন সংস্কৃতিবান শহর উরবিনো (Urbino)-র শাসকের চিত্রশিল্পী। অল্প বয়সে পিতৃহারা রাফায়েল পিয়েত্রো পেরুজিনো (Pietro Perugino)-র কর্মশালায় প্রশিক্ষণ নেন। ১৫০৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি পোপের আমন্ত্রণে রোমে আসেন। তাঁর অনেক কাজ ভ্যাটিকান প্রাসাদে (Vatican Palace) দেখতে পাওয়া যায়। রাফায়েল ছিলেন মূলত চিত্রশিল্পী। উরবিনোতে জন্ম হলেও ফ্লোরেন্সের শিল্পীদের সান্নিধ্য তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করেছিল।

(2) চিত্রশিল্পে অবদান: রাফায়েলের অঙ্কনরীতি আপাতদৃষ্টিতে সহজ, সরল ও বোধগম্য। তবে এর মধ্যেই তিনি স্বর্গীয় অনুভূতি ও আধ্যাত্মিকতার গভীর ছাপ সংযোজন করেছেন। এ প্রসঙ্গে ম্যাডোনার ছবিগুলি উল্লেখযোগ্য।

  • ম্যাডোলা: রাফায়েলের ম্যাডোনা সিরিজের ছবিগুলি একই সঙ্গে সৌন্দর্যের প্রতীক এবং ঐশ্বরিক মহিমার আধ্যাত্মিক প্রকাশ। তাঁর বিখ্যাত চিত্র ম্যাডোনা অফ দ্য চেয়ার (Madonna of the Chair), যেখানে মাতৃস্নেহ এবং শিশুর চোখমুখে দেবরূপের অনবদ্য প্রকাশ ঘটেছে।
  • দ্য স্কুল অফ এথেন্স: পোপ দ্বিতীয় জুলিয়াস (Pope Julius II)-এর আমন্ত্রণে তিনি মাইকেল এঞ্জেলোর সঙ্গে সিস্টিন চ্যাপেলে কয়েকটি ফ্রেসকো আঁকেন। এগুলির মধ্যে বিশেষ খ্যাতি পায় দ্য স্কুল অফ এথেন্স (The School of Athens) শীর্ষক ফ্রেসকোটি।
  • প্রতিকৃতি ও স্বপ্রতিকৃতি অঙ্কন: রাফায়েল পোপ দ্বিতীয় জুলিয়াস, পোপ দশম লিও এবং বিশিষ্ট লেখক ও কূটনীতিবিদ বালদাসার কাস্টিগলিওন (Baldassare Castiglione)-এর প্রতিকৃতি অঙ্কন করেছিলেন। তাছাড়া রাফায়েলের চিত্রকল্পগুলির মধ্যে তাঁর স্বপ্রতিকৃতিও (Self-portrait) পাওয়া যায়।
  • লা ভেলাটা: লা ভেলাটা (La Velata)-র মতো চিত্রকল্পে রাফায়েল নারীর স্বাভাবিক রূপ ও সৌন্দর্যের দিকটি তুলে ধরেন।
  • দ্য ট্রান্সফিগারেশন: রাফায়েলের সর্বশেষ ছবিটি হল দ্য ট্রান্সফিগারেশন (The Transfiguration), এটি তিনি বাইবেলের কাহিনি অনুসরণ করে অঙ্কন করেন।

(3) স্থাপত্যে অবদান : রাফায়েল স্থপতি হিসেবেও বেশকিছু কাজ করেছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল চিগি চ্যাপেল (Chigi Chapel) বা চ্যাপেল অফ দ্য ম্যাডোনা অফ লরেটো (Chapel of the Madonna of Loreto), অধুনালুপ্ত পালাজো ব্র্যাঙ্কোনিও ডেল অ্যাকুইলা (Palazzo Branconio dell’ Aquila) প্রভৃতি। রাফায়েল মাত্র ৩৭ বছর বয়সে মারা যান। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি শিল্পের জগতে অমর হয়ে রয়েছেন তাঁর চিত্রকল্পগুলির মাধ্যমে।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment