মাছ ধরার সময় পুকুরঘাটের ঘটনাটির বর্ণনা দাও।
পুকুরঘাটের পরিবেশ
প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ ছোটোগল্পে কথকের তেলেনাপোতা আবিষ্কারে বের হওয়ার পিছনে মূল উদ্দেশ্যটি ছিল মৎস্যশিকার। তাই তেলেনাপোতা পৌঁছে পরের দিন সকালবেলা কথক নিকটস্থ পুকুরের শ্যাওলা-ঢাকা ভাঙা ঘাটের ধারে বসে গুঁড়িপানায় ঢাকা সবুজ জলে টোপ-সহ বড়শি নামিয়ে দেন। হঠাৎ বাঁশের ডগা থেকে একটা মাছরাঙা ঝুপ করে জলে পড়ে হয়ে ওঠে সার্থক মৎস্যশিকারি। একটা সাপ কথককে সন্ত্রস্ত করে ঘাট থেকে সাঁতার দিয়ে পুকুরের ওপারে গিয়ে ওঠে। দুটো ফড়িং ছিপের ফাতনায় বসার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু করে। নায়কের মন ঘুঘুর ডাকে অন্যমনস্ক হয়ে যায়।
মাছ শিকার
হঠাৎ ঘাটের জলশব্দে চমক ভাঙে নায়কের। ছিপের ফাতনা দুলে উঠে নায়কের মনে মাছের টোপ গেলার বিভ্রম জাগায়। সে দ্যাখে একটি মেয়ে ঘড়া দিয়ে জলের উপর গুঁড়িপানার স্তর সরিয়ে জল ভরছে। যার দু-চোখে মেয়েলি কৌতূহল, কিন্তু গতিবিধিতে সলজ্জ আড়ষ্টতা নেই। সে নায়কের দিকে ঋজু দৃষ্টিতে তাকায়। ফাতনায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করে কোমরে ঘড়া তুলে সে চলে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। হঠাৎ মেয়েটি চলার পথে ফিরে তাকিয়ে বলে ওঠে- “বসে আছেন কেন? টান দিন।” সে কণ্ঠস্বর আন্তরিক, এমন শান্ত-মধুর ও গম্ভীর যে নায়কের মনে হয়, তা পূর্বপরিচিত। এই আকস্মিক চমকে নায়কমন বিহ্বল হয়ে ছিপে টান দেওয়ার কথা ভুলে যায়। তারপর ছিপ তুললে দেখা যায় বড়শি টোপহীন। মেয়েটির দিকে আর-একবার তাকিয়ে নায়কের মনে হয়- “…একটু যেন দীপ্ত হাসির আভাস সেই শান্ত করুণ মুখে খেলে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন – আগুন নাটকের বড়ো প্রশ্ন উত্তর