ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো
ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য

গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উপাদান হল নির্বাচনি ব্যবস্থা। ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

[1] সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার

সংবিধানের 326 নং ধারায় সার্বিক প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে ধনী-নির্ধন-স্ত্রী- পুরুষ-জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে 18 বছর বা 18 বছরের বেশি বয়সের প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে ভোটাধিকার প্রদান করা হয়েছে।

[2] সমপ্রতিনিধিত্বের নীতি

ভারতে লোকসভা এবং বিধানসভার সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে মোট ভোটদাতাদের সংখ্যাগত সমতার নীতির ভিত্তিতে নির্বাচনি এলাকা গঠন করা হয়।

[3] ভোটদানের ক্ষেত্রে সমতার নীতি

ভারতে প্রত্যেক ভোটদাতার একটি করে ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে একজন সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে রাষ্ট্রপতিরও ভোটদানের অধিকার ও গুরুত্বের কোনো বৈষম্য করা হয়নি।

[4] প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া

ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থায় লোকসভা, রাজ্য বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও পৌরসভার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সদস্যরা নির্বাচিত হন। অন্যদিকে, ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদের সদস্যরা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতিও পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন।

[5] অনগ্রসর জাতির জন্য আসন সংরক্ষণ

ভারতীয় নির্বাচনি ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল অনগ্রসর জাতিগুলির জন্য আসন সংরক্ষণ। ভারতে তপশিলি জাতি ও উপ-জাতিদের (SC & ST) জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

[6] নির্বাচনি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ

ভারতের লোকসভা ও রিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রার্থীপিছু ব্যয়ের মাত্রা নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।

[7] নির্বাচনে প্রার্থীদের সুযোগসুবিধার সমতা

ভারতের নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য প্রদত্ত সুযোগসুবিধার মধ্যে সমতা রয়েছে। লোকসভা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত পর্যন্ত প্রতিটি স্তরের নির্বাচনে সমস্ত প্রার্থীকে সমান সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে।

[৪] নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন

ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন রয়েছে। সংবিধানের 324 নং ধারায় নির্বাচন-সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব এই কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

[9] নির্বাচনি আচরণ-বিধি

ভারতে লোকসভা, বিধানসভা-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের ওপর ‘নির্বাচনি আচরণবিধি’ পালনের নির্দেশ জারি করে থাকে। এ ছাড়া ভারতীয় জনপ্রতিনিধিত্ব সংশোধনী আইন (2002) অনুসারে, হলফনামা পেশ • করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জানানো প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

[10] নির্বাচনি বিরোধ-মীমাংসা

ভারতে নির্বাচন-সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির দায়িত্ব আদালতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন – ভারতে সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ্ধতিটি উদাহরণ-সহ আলোচনা করো

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment