ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা কীভাবে পরস্পর সম্পর্কিত তা ব্যাখ্যা করো

ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা কীভাবে পরস্পর সম্পর্কিত তা ব্যাখ্যা করো

ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা কীভাবে পরস্পর সম্পর্কিত তা ব্যাখ্যা করো
ভারতীয় নীতিশাস্ত্রে কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা কীভাবে পরস্পর সম্পর্কিত তা ব্যাখ্যা করো

কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের ধারণা

ভারতীয় নীতিশাস্ত্রের একটি মৌলিক বিশ্বাস হল- সমগ্র বিশ্বজগৎ এক অমোঘ নৈতিক নিয়মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। জগতের উৎপত্তি ও গতির মূলে আছে এক শাশ্বত নৈতিক শক্তি। এই অমোঘ মৌলিক নিয়মকে অগ্রাহ্য করা যায় না। কর্মবাদ এবং কর্মনীতিতে বিশ্বাসের থেকে দেখা যায় জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস।

কর্মবাদ

কর্মবাদ অনুসারে মানুষকে তার কৃতকর্মের ফল অবশ্যই ভোগ করতে হবে। কর্মনিয়ম বলে যে, ভালো-মন্দ সব কাজ ব্যক্তির জীবনে নির্দিষ্ট ফল দান করে। কাজেই ফলের কোনো বিনাশ নেই। এই নিয়মের দ্বারা আমরা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে অদৃষ্টগত ভিন্নতা লক্ষ করি এবং তার ব্যাখ্যা দিয়ে থাকি। জীবনের বৈচিত্র্য আমরা কর্মবাদের দ্বারাই ব্যাখ্যা করে থাকি। কেউ সুখী, কেউ দুঃখী, কেউ ধনী, কেউ নির্ধন, কেউ জ্ঞানী, কেউ মূর্খ অথচ তাদের হয়তো জন্ম হয়েছে একই পরিবেশে, তারা বড়ো হয়েছে একইসঙ্গে। এইরূপ ঘটনাকে আমরা কর্মবাদের দ্বারা ব্যাখ্যা করে থাকি। আমরা মনে করি সুকর্মের জন্য ব্যক্তি ভালো ফল পাবে। কিন্তু সে যদি কোনো মন্দ কর্ম করে থাকে, তাকে খারাপ ফল পেতে হবে।

জন্মান্তরবাদ

কর্মবাদ বিশ্বাস করলে তার অবশ্যম্ভব পরিণতি হিসেবে জন্মান্তরবাদেও বিশ্বাস করতে হয়। কেন-না কখনো-কখনো কর্মনীতি অনুসারে মানুষের সুখ বা দুঃখ ভোগকে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি না, সেক্ষেত্রে অসংগতি দেখা যায়। দেখা যায় যে যারা ভালো লোক তারা এই জীবনে অত্যন্ত কষ্ট ভোগ করছেন। আবার যারা মন্দ ব্যক্তি তারা দিব্যি সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করছেন। এই অসংগতিকে ব্যাখ্যা করার জন্য জন্মান্তরবাদ স্বীকার করতে হয়।

কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদের সম্পর্ক

কর্মবাদ অনুসারে মানুষকে তার কৃতকর্মের ফলভোগ করতেই হবে। কিন্তু সেই ফলভোগ যদি ইহজীবনে না হয় তাহলে পরবর্তী জীবনে সেই ফলভোগ করতে হবে। অর্থাৎ নতুন এক জন্ম নিয়ে পূর্ব জীবনের কর্মফল ভোগের জন্য আবার তাকে এই জগতে আসতে হবে।

কর্মফল যেহেতু বিনষ্ট হয় না, তাই এই জীবনে না হলেও কোনো ভবিষ্যৎ জীবনে শুভ, অশুভ, পাপ ইত্যাদি সব নৈতিক মূল্য কর্মফলের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকে। এটিকে তাই বলা হয়েছে নৈতিক মূল্যের সংরক্ষণ নিয়ম। চার্বাক ভিন্ন অন্যান্য সব দর্শনেই কর্মবাদ স্বীকার করা হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নিষ্কাম কর্মের জন্য কোনো কর্মফল ভোগ করতে হয় না। এইরূপ কর্ম কোনো ফলের আশা না করেই সম্পাদন করা হয়। কেবল যেসব কর্ম আমরা ফলের আশা করে সম্পাদন করে থাকি সেই সকাম কর্মের জন্য জীবকে ফলভোগ করতে হয়।

আরও পড়ুন – যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃতি – অবরোহ এবং আরোহ

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment