বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রবন্ধ রচনা 300+ শব্দে

বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রবন্ধ রচনা

বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রবন্ধ রচনা
বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রবন্ধ রচনা

বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রবন্ধ রচনা

ভূমিকা

ভারতবর্ষের সমাজ জীবনে এক নিষ্ঠুর সত্য জাত-পাত ব্যবস্থায় দেশের মনুষ্যত্ব লাঞ্ছিত হচ্ছে। যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে মানুষে মানুষে বিভেদ, মানুষ ঘৃণা করে মানুষকে। দেশ ও জাতির জীবনে ঘনিয়ে আসছে অমঙ্গলের অশনি সংকেত। নির্যাতিত-নিপীড়িত-অবহেলিত শোষিত নিম্নশ্রেণীর মানুষের, নারীজাতির সার্বিক মুক্তি ও সমাজে-রাষ্ট্রে তাদের যথাযথ নাগরিক অধিকার দিয়ে মানবিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করে স্বাধীন ভারতের সংবিধানে আইনগত ও নীতিগতভাবে সেই অধিকার ও সুযোগের নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করে গেলেন, তিনি হলেন মানব প্রেমিক বাবাসাহেব ভীমরাও রামজী আম্বেদকর।

জন্ম ও শিক্ষালাভ, কর্মজীবন

১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল মহারাষ্ট্রে তথাকথিত এক অস্পৃশ্য সমাজে তাঁর জন্ম। তিনি অসাধারণ কৃতিত্ব দেখালেন শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে। অতি দরিদ্র অচ্ছুৎ পরিবারের সন্তান হলেও বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর বহুমুখী প্রতিভা ছিল। কর্মজীবনে নানা বাধা অতিক্রম করে তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন রাষ্ট্রে ও সমাজের উচ্চ সান্মানের আসনে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন হিন্দু ধর্মের জাত-ব্যবস্থাকে সমূলে উৎপাটিত করতে না পারলে ‘অস্পৃশ্যতার কলঙ্ক’ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব নয়। তাঁর মতে জাতব্যবস্থা হল ধর্মীয় ক্রমোচ্চ শ্রেণী বিভাজনের অশোভন প্রকাশ। তিনি চেয়েছিলেন বর্ণাশ্রমের অবসান ঘটিয়ে ও সাম্য প্রতিষ্ঠার দ্বারা হিন্দু সমাজের পুনর্গঠন।

শ্রেণিসংগ্রামের প্রশ্ন এড়িয়ে জাতিভেদ প্রথাকে রোধ করা সম্ভব নয়, একথা তিনি বুঝতে পারেন নি। এসব বঞ্চনা বোধ তাঁকে জেদী করে তুলেছিল। স্বাধীন ভারতের সংবিধান রচনা তাঁর অন্যতম প্রধান কীর্তি। মানবতাবাদী আম্বেদকরের মতে ‘উন্নত জীবনমানের সুস্থ প্রগতিশীল সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে আইন তৈরী যথেষ্ট নয়, চাই মানবদরদী নীতিবোধ। তিনি ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে মানবপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজের যর্থাথ মুক্তি ও উন্নতির জন্য আপোষহীন কঠোর সংগ্রাম করে গেছেন।

উপসংহার

দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে। এই দীর্ঘ বছরেও মানুষের মন থেকে জাত নামক কুসংস্কার এখনও সম্পূর্ণ মুছে যায় নাই। তার প্রধান কারণ, ভারতের অজস্র মানুষ শিক্ষার আলোক থেকে বঞ্চিত। ধর্মের প্রতি অন্ধ আবেগ, রাজনীর্তির স্বার্থের বাড়াবাড়ি। ধর্মের মোহ জালে আকৃষ্ট হয়ে এক শ্রেণীর মানুষ অন্যশ্রেণীর মানুষের মধ্যে জাতের প্রাচীর সৃষ্টির চেষ্টা করছে, রাজনৈতিক সার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যেও এক শ্রেণীর মানুষ বিভেদের জাল রচনা করে চলেছে। আর্থিক অসচ্ছলতা, সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অগ্রগতির বাধার বিশেষ কারণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিবেক জাগ্রত না হলে জাতের নামে বজ্জাতি বন্ধ হবে না। বাবাসাহেব আম্বেদকর জাতের বিভেদ ভুলে নতুন সমাজের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা যদি পরবর্তী প্রজন্ম বাস্তব রূপ দিতে পারে তাহলে তাঁকে সঠিক সন্মান প্রদর্শন করা হবে।

আরও পড়ুন – রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment