বাংলা কাব্য-কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিশিষ্টতা আলোচনা করো

বাংলা কাব্য-কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিশিষ্টতা আলোচনা করো

বাংলা কাব্য-কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিশিষ্টতা আলোচনা করো
বাংলা কাব্য-কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিশিষ্টতা আলোচনা করো

বাংলা কাব্যজগতের এক অনন্য কণ্ঠস্বর সুকান্ত ভট্টাচার্য। সুকান্ত তাঁর কবিতার মাধ্যমে মানুষের শোষণমুক্তির সংগ্রামকে আমাদের কাছে নিঃশঙ্কচিত্তে পরিবেশন করেছিলেন।

কাব্যসম্ভার: সুকান্ত ভট্টাচার্য রচিত কাব্যগ্রন্থগুলি হল-‘ছাড়পত্র’ (১৯৪৭), ‘ঘুম নেই’ (১৯৫০), ‘পূর্বাভাস’ (১৯৫০), ‘মিঠেকড়া’ (১৯৫১)। কবি সুকান্ত মনে করতেন কবিতা হল শব্দশিল্প। তাই তিনি শব্দকে এমনভাবে ব্যবহার করতেন যে, কবিতার মধ্যে তা ধীরে ধীরে নির্মাণ হয়ে উঠত। ‘ছাড়পত্র’ কাব্যে কবির প্রবাদপ্রসিদ্ধ অঙ্গীকার কখনও মলিন হয় না-

"এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি, 
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।”

রূপকের ব্যবহার: কবি তাঁর কবিতায় অত্যন্ত সার্থকভাবে প্রতীকী ব্যঞ্জনার ব্যবহার করেছেন। রূপকধর্মিতার যথাযথ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর কবিতাকে পৌঁছে দিয়েছেন অনুরাগীদের মনে। তাঁর স্মরণীয় কবিতা ‘একটি মোরগের কাহিনি’, ‘সিঁড়ি’, ‘কলম’ প্রতীকী ভাষায় রচিত।

সমাজের কথা: রবীন্দ্রানুরাগী কবি সুকান্ত আপন রবীন্দ্র অনুধ্যানে রত থেকেও জানাতে ভোলেননি-

“আমার বসন্ত কাটে খাদ্যের সারিতে প্রতীক্ষায়।”

তাঁর ‘বোধন’ কবিতায় তিনি শিশুঘাতী, নারীঘাতী সাম্রাজ্যবাদের কুৎসিত বীভৎসতাকে ক্ষমা করেননি। ‘রানার’ কবিতায় তিনি সমাজের বঞ্চিত- সর্বহারার মর্মযন্ত্রণাকে বাত্ময় করেছেন।

প্রতিবাদী কবি: সমকালীন কবিদের তুলনায় সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাষা ছিল স্বতন্ত্র। পরিশীলিত ভাষা ও সুস্পষ্ট ভঙ্গিতে তিনি কবিতাকে নিয়ে গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষের জীবনের কাছে। তাঁর কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে ইতিহাস, সামাজিক শ্রেণিবৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সমকালীন রাজনীতি, দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, স্বদেশচেতনা ও আন্তর্জাতিকতাবাদ।

আরও পড়ুন – নুন কবিতার নামকরণের সার্থকতা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment