বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর (Marks 2, 3, 5) | একাদশ শ্রেণি 2nd Semester WBCHSE

বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর (Marks 2, 3, 5) | একাদশ শ্রেণি 2nd Semester WBCHSE

বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর
বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর (Marks 2)

প্রশ্ন : “হায় আমার মাথার চতুর্দিকে যদি চোখ বসানো থাকতো…”-কে এ কথা বলেছেন? তাহলে কী ঘটত?

উত্তর: আলোচ্য কথাটি বলেছেন বিখ্যাত ফরাসি লেখক আনাতোল ফ্রাঁস।

• ফাঁসের মতে, মাথার চতুর্দিকে যদি চোখ থাকত তাহলে দিগন্তবিস্তৃত এই পৃথিবীর সৌন্দর্যের সম্পূর্ণটা একসঙ্গে দেখা সম্ভব হত।

প্রশ্ন : “কথাটা যে খাঁটি”-কোন্ কথা খাঁটি?

উত্তর: আনাতোল ফাঁস বলেছিলেন যে, তাঁর মাথার চারদিকে যদি মাছির মতো চোখ বসানো থাকত তাহলে দিগন্তবিস্তৃত সুন্দর পৃথিবীর সম্পূর্ণ সৌন্দর্য তিনি একসঙ্গে দেখতে পেতেন। এই কথাটাকেই লেখক ‘খাঁটি কথা’ বলেছেন।

প্রশ্ন : “কিন্তু আমার মনের চোখ তো মাত্র একটি কিংবা দুটি নয়।”-‘মনের চোখ’ বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন লেখো।

উত্তর: ‘মনের চোখ’ বলতে বক্তা এখানে মানুষের অন্তর্দৃষ্টিকে বুঝিয়েছেন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে নিত্যনতুন পরিচয়ের মধ্য দিয়েই এই অন্তর্দৃষ্টি জেগে ওঠে।

প্রশ্ন : “মনের চোখ বাড়ানো-কমানো তো সম্পূর্ণ আমার হাতে” -কে এ কথা বলেছিলেন এবং কীভাবে তা সম্ভব হয়?

উত্তর: আনাতোল ফ্রাঁস উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছিলেন।

• জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন নতুন বিষয়কে আয়ত্ত করার মধ্য দিয়েই এক-একটা করে মনের চোখ ফুটে উঠতে থাকে।

প্রশ্ন : “চোখ বাড়াবার পন্থাটা কি?”- এখানে ‘চোখ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে এবং লেখকের মতে কীভাবে তার বৃদ্ধি সম্ভব?

উত্তর: এখানে ‘চোখ’ বলতে মনের চোখ বা অন্তর্দৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।

• লেখকের মতে, চোখ বাড়ানোর পথ দুটি। বই পড়া এবং তার জন্য দরকার বই কেনার প্রবৃত্তি।

প্রশ্ন : “মনের চোখ ফোটানোর আরো একটা প্রয়োজন আছে।” -এ প্রসঙ্গে বারট্রান্ড রাসেলের যে মন্তব্যের কথা লেখক উল্লেখ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: বারট্রান্ড রাসেল বলেছিলেন যে, সংসারের জ্বালা-যন্ত্রণা এড়ানোর প্রধান উপায় হচ্ছে মনের ভেতর একটা নিজস্ব ভুবন তৈরি করে নেওয়া এবং সংকটের সময়ে তার মধ্যে ডুবে যাওয়া। যে যত বেশি এরকম ভুবন সৃষ্টি করতে পারে জাগতিক যন্ত্রণা এড়ানোর ক্ষমতা তার ততই বেশি হয়।

প্রশ্ন : “… কাজেই শেষ পর্যন্ত বাকি থাকে বই।” -যে প্রসঙ্গে লেখক এ কথা বলেছেন নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: সমস্ত দুঃখকষ্ট থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজন মনের ভিতরে একটা অন্য পৃথিবী তৈরি করে নেওয়া। এই পৃথিবী তৈরি হতে পারে দুটো উপায়ে, দেশভ্রমণ করে এবং বই পড়ে। কিন্তু দেশভ্রমণ করার মতো সামর্থ্য ও স্বাস্থ্য যেহেতু সকলের থাকে না, তাই বই থাকে শেষ এবং একমাত্র উপায়। এই প্রসঙ্গেই লেখক মন্তব্যটি করেছেন।

প্রশ্ন : “কেতাবের কথা ভোলেননি।”-কে, কেন কেতাবের কথা ভোলেননি?

উত্তর: ওমর খৈয়াম কেতাবের কথা ভোলেননি।

খৈয়াম জানতেন যে, একদিন রুটি-মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়তমার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বই অনন্ত-যৌবনা। তাই স্বর্গের সরঞ্জামের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে তিনি কেতাবের কথা ভোলেননি।

প্রশ্ন : “আর কলমের আশ্রয় তো পুস্তকে।”-মন্তব্যটির প্রসঙ্গ আলোচনা করো।

উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে, মুসলমানদের পরমগ্রন্থ কুরআনে হজরত মহম্মদ সর্বপ্রথম যে বাণী শুনতে পেয়েছিলেন তাতে আছে “অল্লামা বিল কলমি” অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে কলমের মাধ্যমে জ্ঞান দান করেছেন। আর বই ছাড়া কলম অর্থহীন। এই প্রসঙ্গেই লেখক মন্তব্যটি করেছেন।

প্রশ্ন : “বাইবেল শব্দের অর্থ…”-লেখকের মতে বাইবেল শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী ‘বাইবেল’ শব্দের অর্থ বলেছেন বই। তাঁর মতে এ হল, “বই par excellence, সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক-THE BOOK।”

“গুরুভার আপন স্কন্ধে তুলে নিয়েছিলেন…?” -কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কোন্ দায়িত্ব নিয়েছিলেন?

উত্তর: উল্লিখিত অংশে গণপতি অর্থাৎ গণেশের কথা বলা হয়েছে।

তিনি ‘মহাভারত’ লেখার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

প্রশ্ন : “…তবে তারা দেবভ্রষ্ট হবে।”-কারা, কেন ‘দেবভ্রষ্ট’ হবে?

উত্তর: সাধারণ মানুষ ‘দেবভ্রষ্ট’ হবে।

মানুষ যদি বইয়ের সম্মান করতে না শেখে তাহলে তারা ‘দেবভ্রষ্ট’ হবে।

প্রশ্ন : “কিন্তু বাঙালী নাগর ধর্মের কাহিনী শোনে না।”- এখানে ‘ধর্মের কাহিনী’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: প্রতিটি ধর্মেই বই বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু বাঙালি পাঠক সেই বই কেনার ব্যাপারে প্রচন্ডভাবেই উদাসীন। একেই লেখক ‘ধর্মের কাহিনী’ না-শোনা বলেছেন।

প্রশ্ন : “কথাটার মধ্যে একটুখানি সত্য…”-কোন্ কথা? সেখানে কী সত্য রয়েছে?

উত্তর: বই কেনার কথা শুনে “অত কাঁচা পয়হা কোথায়, বাওয়া, যে বই কিনব?” বাঙালির এই মন্তব্যের কথাই বলা হয়েছে।

• লেখক এখানে অতি সামান্য পরিমাণের একটা সত্যকে খুঁজে পেয়েছিলেন এবং তা হল, ‘বই কিনতে এখানে পয়সা লাগে’।

প্রশ্ন : “সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।”-কোন্ বিষয়ে সন্দেহ না- থাকার কথা বলা হয়েছে? এ বিষয়ে প্রকাশকের অভিমত কী ছিল?

উত্তর: বইয়ের দাম কমানো হলে অনেক বেশি বিক্রি হবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বলে লেখক অভিমত প্রকাশ করেছেন।

প্রকাশককে বইয়ের দাম কমানোর কথা বললে সে পালটা যুক্তি দেয় যে, বই যথেষ্ট পরিমাণে বিক্রি না হলে বইয়ের দাম কমানো সম্ভব হয় না।

প্রশ্ন : “তাই যদি প্রকাশককে বলা হয়…”-প্রকাশককে কী বলা হয়? তার দিক থেকে কী উত্তর পাওয়া যায়?

উত্তর: বই বেশি পরিমাণে বিক্রির জন্য প্রকাশককে বইয়ের দাম কমাতে বলা হয়।

প্রকাশক উত্তর দেয় যে, যথেষ্ট পরিমাণে বই বিক্রি না হলে বইয়ের দাম কমানো সম্ভব নয়।

প্রশ্ন : “তাই এই অচ্ছেদ্য চক্র।”—’অচ্ছেদ্য চক্র’-টি কী?

উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে, ‘অচ্ছেদ্য চক্র’-টি হল-বই সস্তা নয় বলে লোকে বই কেনে না, আর অন্যদিকে লোকে বই কেনে না বলে বই সস্তা হয় না।

প্রশ্ন : “সে ঝুঁকিটা নিতে নারাজ।”-কে, কোন্ ঝুঁকি নিতে নারাজ ছিল?

উত্তর: প্রকাশক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে বইয়ের দাম কমাতে নারাজ ছিল।

প্রশ্ন : “মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরিখানা নাকি দেখবার মত ছিল।” -এই লাইব্রেরির পরিচয় দাও।

উত্তর: মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরিতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ছিল শুধু বই। এমনকি কার্পেটের ওপরেও অসংখ্য বই স্তূপীকৃত হয়ে এমনভাবে পড়ে থাকত যে, সেখানে পা ফেলাই ছিল মুশকিল।

প্রশ্ন : “খানিকক্ষণ মাথা নিচু করে ঘাড় চুলকে বললেন….””-কে, একী বলেছিলেন?

উত্তর: উল্লিখিত অংশে মার্ক টুয়েনের কথা বলা হয়েছে।

• অযত্নে পড়ে থাকা বিশাল বইয়ের ভান্ডারের জন্য এক বন্ধু মার্ক টুয়েনকে শেলফ জোগাড় করতে বললে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি বই জোগাড় করেছেন বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে চেয়ে, কিন্তু শেলফ সেভাবে চাওয়া যায় না।

প্রশ্ন : “একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া।” -বাংলাদেশ কোন্ বিষয়ে ব্যতিক্রম?

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে, প্রকৃত মানুষ জ্ঞানের বাহন তথা বই জোগাড় করার জন্য অকাতরে অর্থ ব্যয় করে। একমাত্র বাংলাদেশের মানুষরাই এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।

প্রশ্ন : “… প্রকৃত সম্মান করতে জানে ফ্রান্স।” কাকে ফ্রান্স প্রকৃত সম্মান করতে জানে এবং কেন?

উত্তর: বইকে ফ্রান্সের লোকেরা প্রকৃত সম্মান করতে জানে।

এই সম্মান জানাতে পারার কারণ ফ্রান্সের মানুষরা প্রকৃত বইপ্রেমী। এমনকি কাউকে মারাত্মক অপমান করতে হলেও তারা বইয়ের সাহায্যেই তা করে।

প্রশ্ন : “জিদ শুধু জঞ্জালই বেচে ফেলছেন”-এখানে ‘জঞ্জাল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 

উত্তর: স্তালিনীয়দের আক্রমণের সময় তাঁর লেখক-বন্ধুরা কোনো প্রতিবাদ করেননি বা জিদের পাশের দাঁড়াননি। তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য জিদ লাইব্রেরি থেকে তাদের লেখা এবং স্বাক্ষর করা বইগুলোকে বিক্রি করে দিতে চান, কারণ সেগুলো তখন তাঁর কাছে ‘জঞ্জাল’ হয়ে গিয়েছিল।

প্রশ্ন : “আমার বেদনাটা সেইখানে!”-লেখক এখানে তাঁর কোন্ বেদনার কথা বলেছেন?

উত্তর: বাঙালির জ্ঞানতৃয়া আছে অথচ বই কেনার বিষয়ে বাঙালি নিতান্তই উদাসীন অথবা বিমুখ। লেখক এখানে সেই বেদনার কথাই বলেছেন।

প্রশ্ন : “এরকম অদ্ভূত সংমিশ্রণ আমি ভূ-ভারতের কোথাও দেখিনি।”-এখানে কোন্ ‘অদ্ভূত সংমিশ্রণ’-এর কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: বাঙালির স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের মধ্যে লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী এক বিস্ময়কর বৈপরীত্য দেখেছেন। বাঙালির জ্ঞানতৃষ্ণা প্রবল, কিন্তু বই কেনার ক্ষেত্রে সে নিতান্তই অনিচ্ছুক। একেই লেখক ‘অদ্ভুত সংমিশ্রণ’ বলেছেন।

বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর (Marks 3)

প্রশ্ন : “কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গিয়েছে”-কীসের কারণ অনুসন্ধানের কথা বলা হয়েছে? অনুসন্ধানের ফল কী হয়েছে?

উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘বই কেনা’ প্রবন্ধের উল্লিখিত অংশে মাছির এক অদ্ভুত ক্ষমতার কথা বলেছেন। মাছিকে যেদিক দিয়েই ধরতে যাওয়া হোক-না-কেন সে সঠিক সময়ে উড়ে যাবে। প্রশ্নোদৃত অংশে এরই কারণ অনুসন্ধান করার কথা বলা হয়েছে।

কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে যে, মাত্র দুটো চোখ | নিয়ে মাছির মস্তিষ্কের গঠন নয়। তার সমস্ত মাথাজুড়ে অসংখ্য চোখ বসানো আছে। মাছির শুধু সামনের দিকটাই আমরা দেখতে পাই। কিন্তু যেহেতু মাথার চারপাশে চক্রাকারে চোখ বসানো আছে, তার ফলে সে একই সময়ে সমস্ত পৃথিবীটা দেখতে পায়।

প্রশ্ন : “আনাতোল ফাঁস দুঃখ করে বলেছেন…”-আনাতোল ফাঁস কে ছিলেন? তিনি কী বলেছিলেন?

উত্তর: আনাতোল ফাঁস ছিলেন বিংশ শতাব্দীর সূচনাপর্বে ফ্রান্সের একজন বিখ্যাত কবি, সাংবাদিক এবং ঔপন্যাসিক। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।

মাছি তার গোটা মাথায় বসানো চোখ দিয়ে চারপাশটা সমানভাবে দেখতে পায়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ফ্রাঁস বলেছিলেন যে, তাঁর মাথার চারদিকে যদি চোখ বসানো থাকত তাহলে দিগন্তবিস্তৃত এই সুন্দরী পৃথিবীর সম্পূর্ণ সৌন্দর্য তিনি একসঙ্গে দেখতে পেতেন।

প্রশ্ন : “…ভবযন্ত্রণা এড়াবার ক্ষমতা তার ততই বেশি হয়।”-কার সম্পর্কে, কেন এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: যে যত বেশি অন্তর্ভুবন সৃষ্টি করতে পারে তার তত বেশি ভবযন্ত্রণা এড়ানোর ক্ষমতা তৈরি হয়।

বারট্রান্ড রাসেল মনে করতেন যে, সংসারের জ্বালা-যন্ত্রণা এড়ানোর প্রধান উপায় হচ্ছে মনের ভিতরে একটা নিজস্ব পৃথিবী তৈরি করে নেওয়া। চারপাশের দৈনন্দিনতার মধ্যে এই পৃথিবী হবে ব্যক্তি- মানুষের নিজস্ব আশ্রয়। কোনো সংকটের মুহূর্ত উপস্থিত হলে ব্যক্তিমন সেই নিজের পৃথিবীতে ডুব দেবে। এই কারণেই বলা হয়েছে যে যত বেশি অন্তর্ভুবন সৃষ্টি করতে পারবে, জাগতিক যন্ত্রণা এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা তার মধ্যে তত প্রবল হবে।

প্রশ্ন : “কিন্তু প্রশ্ন, এই অসংখ্য ভুবন সৃষ্টি করি কি প্রকারে?” -‘অসংখ্য ভুবন’ কথাটি ব্যাখ্যা করো। কীভাবে ভুবন সৃষ্টি সম্ভব বলে কথক মনে করেছেন?

উত্তর: ‘অসংখ্য ভুবন’ বলতে বোঝানো হয়েছে মনের মধ্যে তৈরি হওয়া ভাবনা এবং চিন্তার নিজস্ব জগৎ, যা সাহিত্য-দর্শন-ইতিহাস, জ্ঞান- বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাকে কেন্দ্র করে নবনব রূপ ধারণ করে।

• লেখক মনে করেছেন যে, এই অসংখ্য ভুবন সৃষ্টি হতে পারে বই পড়ে এবং দেশভ্রমণ করে। কিন্তু দেশ ভ্রমণ করার সামর্থ্য ও স্বাস্থ্য যেহেতু সকলের থাকে না তাই শেষপর্যন্ত বই-ই একমাত্র অবলম্বন।

প্রশ্ন : “তাই ভেবেই হয়ত ওমর খৈয়াম বলেছিলেন”-ওমর খৈয়াম কী ভেবেছিলেন? তিনি কী বলেছিলেন?

উত্তর: ব্যক্তির মনের মধ্যে নিজস্ব গোপন ভুবন তৈরি করার ক্ষেত্রে বই হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম অবলম্বন। ওমর খৈয়াম এই ভাবনাই ভেবেছিলেন বলে লেখক মনে করেছেন।

ওমর খৈয়াম বলেছিলেন যে, “এখানে ডালের নিচে একটি রুটি/মদের ফ্লাক্সে কবিতার বই আর তুমি/গান গাইছো আমার পাশে প্রান্তরে/আর প্রান্তর স্বর্গ হয়ে উঠেছে।” খৈয়ামের ভাবনায় স্বর্গ হয়ে উঠতে প্রেমিকার মতোই গুরুত্বপূর্ণ হল বই।

প্রশ্ন : “…তবে তারা দেবভ্রষ্ট হবে।”-কারা ‘দেবভ্রষ্ট’ হবে?  ‘দেবভ্রষ্ট’ হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।

উল্লিখিত অংশে সাধারণ মানুষের দেবভ্রষ্ট হওয়ার কথা বলা হয়েছেয়ের সঙ্গে ধর্মের যোগাযোগ। কোরানে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ মানুষকে জ্ঞানদান করেছেন কলমের মাধ্য কলমের আশ্র নিশ্চিতভাবেই বই। ‘বাইবেল’ শব্দের অর্থই হল সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক। গণেশ এদেশের মহাকাব্য ‘মহাভারত’ অনুলিখন করেছিলেন। এই কারণেই লেখক মনে করেছেন যে, সাধারণ মানুষ যদি বইকে সম্মান করতে না শেখে তাহলে তারা ‘দেবভ্রষ্ট’ হবে।

প্রশ্ন : “আপনারা পারেন না কেন?”-কে, কাকে, কী না-পারার কথা বলেছেন?

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশকদের উদ্দেশ্য করে মন্তব্যটি করেছেন।

প্রকাশকরা যথেষ্ট বই বিক্রি না-হওয়াকে বইয়ের দাম না কমানোর অজুহাত হিসেবে দাঁড় করান। এই প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক বলেছেন যে, সংখ্যার দিক দিয়ে দেখতে গেলে বাংলা পৃথিবীর ছয় কিংবা সাত নম্বর ভাষা। বাংলার তুলনায় ফরাসি ভাষায় অনেক কম লোক কথা বলে কিন্তু সেখানে যুদ্ধের আগে অনেক কম দামে ভালো বই কেনা যেত, সেটা যদি সম্ভব হয় তাহলে বাংলার প্রকাশকরা পারেন না কেন, এই প্রশ্নই প্রাবন্ধিক বাংলার প্রকাশকদের উদ্দেশে রেখেছেন।

প্রশ্ন : “বেশি ছাপিয়ে দেউলে হব নাকি?”-কে, কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছে তা নিজের ভাষায় লেখো। 

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষ্য অনুযায়ী এই মন্তব্য করে থাকেন বাঙালি প্রকাশকরা।

বাঙালিকে বই কেনায় আগ্রহী করে তুলতে প্রকাশককে বইয়ের দাম কমানোর কথা বললে প্রকাশক যুক্তি দেয় যে, বই যথেষ্ট পরিমাণে বিক্রি না হলে বইয়ের দাম কমানো সম্ভব নয়। পৃথিবীর সাত নম্বর ভাষা বাংলার তুলনায় ফরাসি ভাষায় অনেক কম মানুষ কথা বলে। অথচ যুদ্ধের আগে অনেক কম দাম দিয়ে ফরাসি বই কেনা যেত। বাঙালি প্রকাশকদের এই অপারগতা নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রকাশক উত্তরে বলেন যে, ফরাসি প্রকাশক নির্ভয়ে যে-কোনো ভালো বই কুড়ি হাজার ছাপিয়ে দিতে পারে। কিন্তু বাঙালি প্রকাশকদের দু-হাজার বই ছাপাতে গেলে নাভিশ্বাস ওঠে। বেশি বই ছাপালে দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

প্রশ্ন : “প্রকাশকের পক্ষে করা কঠিন….”- প্রকাশকের পক্ষে কী করা কঠিন তা আলোচনা করো।

উত্তর: বাংলায় বই কেনার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক ‘অচ্ছেদ্য চক্র’, তা হল বই সস্তা নয় বলে লোকে বই কেনে না আর লোকে বই কেনে না বলে বই সস্তা করা যায় না। প্রকাশকের পক্ষে এ ‘অচ্ছেদ্য চক্র’ ছিন্ন করা কঠিন। তার কারণ, এই বই প্রকাশ করে তার পেটের ভাত জোগাড় হয়। তাই কোনোরকম ঝুঁকি নিতে সে নারাজ এবং দেউলিয়া হওয়ার ভয় তার মনের মধ্যে সবসময় কাজ করে।

প্রশ্ন : পাঠকদের বই কেনার ধরন বিষয়ে লেখক কী বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে, ভেবেচিন্তে আগেপিছে বিবেচনা করে বই কেনে সংসারী লোকেরা। এর মধ্যে যাদের পাঠকসত্তা প্রবল, তারা প্রথমটায় বই কেনে অনিচ্ছায়, তারপর চেখে সুখ করে অর্থাৎ অল্প-অল্প কিনতে থাকে এবং সবশেষে সে বই কেনে ‘ক্ষ্যাপার মত’, তখন বইয়ের মধ্যেই সে নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকে। প্রাবন্ধিক কৌতুক করে বলেছেন, এটাই এমন একমাত্র নেশা যার কারণে সকালবেলায় চোখের সামনে সারিসারি ‘গোলাপি হাতি দেখতে হয় না কিংবা লিভার পচে পটল তুলতে হয় না।’

প্রশ্ন : “পাঁড় পাঠক বই কেনে….”-‘পাঁড় পাঠক’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? সে বই কেনে কীভাবে?

উত্তর: ‘পাঁড় পাঠক’ বলতে বোঝানো হয়েছে সেই পাঠককে, যার কাছে বইপড়া নেশার মতো।

• একজন ‘পাঁড় পাঠক’ প্রথমে বই কেনে বিরক্তির সঙ্গে। তারপরে ধীরে ধীরে তার অল্পস্বল্প বই কেনার অভ্যাস তৈরি হয়।- “চেখে চেখে সুখ করে।” সবশেষে সে হয়ে যায় “ক্ষ্যাপার মত”। তখন বই কেনাই তার একমাত্র নেশা। সবসময় সে এই নেশায় “চুর হয়ে থাকে।”

বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর (Marks 5)

প্রশ্ন : “এক বন্ধু তাই মার্ক টুয়েনকে বললেন…”-বন্ধু মার্ক টুয়েনকে কী বলেছিলেন? মার্ক টুয়েন তার কী উত্তর দিয়েছিলেন?

উত্তর: মার্ক টুয়েনের নিজের লাইব্রেরিতে এত বেশি বই ছিল এবং মেঝেতে সেগুলি এমনভাবে স্তূপীকৃত হয়ে পড়েছিল যে তা দেখে তাঁর এক বন্ধু মার্ক টুয়েনকে বলেছিলেন, বইগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেগুলোকে গুছিয়ে রাখার জন্য গোটা কয়েক শেলফ জোগাড় করার প্রয়োজন।

মার্ক টুয়েন বন্ধুকে উত্তর দিয়েছিলেন যে, সেই প্রয়োজন যথার্থ কিন্তু লাইব্রেরিটা তিনি যে কায়দায় গড়ে তুলেছেন শেলফ সেই কায়দায় জোগাড় করতে পারা সম্ভব হয়নি। কারণ, শেলফ বন্ধুবান্ধবের কাছে ধার চাওয়া যায় না।

প্রশ্ন : “সেই লোকই দেখা যায় বইয়ের বেলা সর্বপ্রকার বিবেক-বিবর্জিত।”-যে প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: পৃথিবীর অধিকাংশ লোক নিজেদের লাইব্রেরি গড়ে তোলে কিছু বই কিনে, আর কিছু বই বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ধার করে ফেরত না দিয়ে। ঠিক যেমন মার্ক টুয়েনও করেছিলেন। এই প্রসঙ্গেই লেখক বলেছেন যে, যে মানুষ পরের জিনিস গলা কেটে ফেললেও ছোঁবে না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ; সেই লোককেই দেখা যায় বইয়ের বেলায় সম্পূর্ণ বিবেক-বর্জিত হতে। অন্যের বই ধার নিয়ে তারা নির্দ্বিধায় আত্মস্থ করে নেয়।

প্রশ্ন : “সেইটে আমি বিচক্ষণ জনের চক্ষুগোচর করতে চাই।” -কে মন্তব্যটি করেছেন? তাঁর মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: জনৈক আরবীয় পণ্ডিত উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

• ধনীরা মনে করে অর্থ-রোজগার পৃথিবীতে সবথেকে কঠিন কাজ আর জ্ঞানীরা মনে করে জ্ঞান-অর্জন সবথেকে শক্ত কাজ। এই প্রশ্নের মীমাংসা হওয়া সহজ নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ধনীর পরিশ্রমের ফল হিসেবে প্রাপ্ত টাকা যদি তিনি কোনো জ্ঞানীর হাতে তুলে দেন তাহলে জ্ঞানী ব্যক্তি ওই টাকা পরমানন্দে কাজে লাগাতে পারেন। এমনকি কখনো-কখনো ধনীদের থেকেও অনেক ভালো পথে উত্তম পদ্ধতিতে তিনি সেই পয়সা খরচ করতে পারেন। অন্যদিকে জ্ঞানীরা যদি তাদের জ্ঞানচর্চার ফলকে ধনীদের হাতে তুলে দেয় তাহলে ধনীরা তা ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ, তাঁরা বই পড়তে পারেন না। ধনী ও জ্ঞানীদের এই পার্থক্যটাই আরবের পণ্ডিত বিচক্ষণজনের কাছে তুলে ধরেছেন।

প্রশ্ন : “আমার জনৈক বন্ধু একটি গল্প বললেন।”-গল্পটি সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: জন্মদিনের উপহার কিনতে গিয়েছিলেন এক ধনী রমণী। দোকানদার তাঁকে নানা জিনিস দেখায়। কিন্তু সেই ধনী মহিলা জানান যে, তাঁর স্বামীর কাছে সব জিনিসই রয়েছে। শেষে নিরাশ দোকানদার তাঁকে একটি ভালো বই উপহার দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তাতে সেই অহংকারী ধনী রমণী ‘নাসিকা কুঞ্চিত’ করে বলেন যে, তাঁর স্বামীর একটি বইও রয়েছে।

প্রশ্ন : “জিদের প্রাণ অতিষ্ঠ করে তুললো।”-কারা, কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছিল?

উত্তর: স্তালিনপন্থীরা আঁদ্রে জিদের প্রাণকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।

রাশিয়া থেকে ফিরে আঁদ্রে জিদ সোভিয়েতের সমালোচনা করে একটা বই লিখেছিলেন। জিদের এই ‘প্রাণঘাতী কেতাব’ ফ্রান্সের স্তালিনপন্থীরা মেনে নিতে পারেননি। ফলে গালিগালাজ এবং কটুকথার মধ্য দিয়ে তাঁরা আঁদ্রে জিদের প্রাণকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন।

প্রশ্ন : “তিনি স্থির করলেন, এদের একটা শিক্ষা দিতে হবে।” -কে স্থির করেছিলেন এবং কেন তাঁর এই সিদ্ধান্ত?

উত্তর: উল্লিখিত সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন আঁদ্রে জিদ।

সোভিয়েত ইউনিয়নের সমালোচনা করার জন্য যখন প্যারিসে বসবাসকারী স্তালিনপন্থীরা জিদকে সমালোচনা করছেন এবং গালিগালাজ দিচ্ছেন আর তাতে জিদের প্রাণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিল, তখন বিস্ময়করভাবে জিদের লেখক-বন্ধুদের অধিকাংশই চুপ করেছিলেন। জিদের হয়ে সামান্য প্রতিবাদটুকুও করেননি। এই ঘটনাকে জিদ সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি স্থির করেন যে, তাঁর ওইসব লেখক-বন্ধুদের একটা শিক্ষা দিতে হবে।

প্রশ্ন : “কাগজে বিজ্ঞাপন বেরল।”-কীসের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল? তার পরবর্তীতে কী ঘটনা ঘটেছিল?

উত্তর: বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক আঁদ্রে জিদ তাঁর লাইব্রেরি নিলামে বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন।

• সোভিয়েতের বিরোধিতা করে বই লেখায় প্যারিসে স্তালিনপন্থীরা যখন আঁদ্রে জিদকে আক্রমণ করে তাঁর লেখক-বন্ধুরা তখন জিদের পাশে দাঁড়াননি। এর উচিত শিক্ষা দিতেই জিদ লাইব্রেরি নিলামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। প্যারিসের লোকজন প্রাথমিক বিস্ময় কাটিয়ে নিলামস্থলের দিকে ছুটে যায়। কিন্তু গিয়ে তারা অবাক হয়ে দেখে যে, যে বন্ধুরা জিদের পাশে ছিলেন না তাদের স্বাক্ষর করা বইগুলোই তিনি বিক্রি করছেন।

প্রশ্ন : “সেখানে গিয়ে অবস্থা দেখে সকলেরই চক্ষুস্থির।”- সকলে কোথায় গিয়েছিলেন? তাদের এই অবস্থার কারণ কী ছিল?

উত্তর: সকলে নিলামখানার দিকে গিয়েছিলেন।

জিদ কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন যে, তাঁর লাইব্রেরিটা তিনি নিলামে বিক্রি করে দেবেন। এই খবর শুনে প্যারিসবাসীরা নিলামখানার দিকে ছুটে গিয়েছিল, কিন্তু গিয়ে দেখে যে, স্তালিনপন্থীদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে যারা জিদের পাশে থাকেনি, তারা তাদের যে-সমস্ত বই আঁদ্রে জিদকে স্বাক্ষর-সহ উপহার দিয়েছিল, জিদ শুধু সেগুলোই নিলামে চড়িয়েছেন অর্থাৎ ‘জঞ্জাল’ ভেবে সেগুলিকে তিনি বিক্রি করে দিতে চেয়েছেন।

প্রশ্ন : “সেটা আমি ভূমধ্যসাগরের মধ্যিখানে জাহাজে বসে শুনতে পেয়েছিলুম”-কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে? সেটা লেখক কীভাবে শুনতে পেয়েছিলেন?

উত্তর: আঁদ্রে জিদ কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তাঁর লাইব্রেরিটি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু নিলামখানায় উপস্থিত মানুষেরা দেখে যে, তিনি কেবল সেই বইগুলি বিক্রি করে দিতে চাইছেন; যেগুলির লেখক হলেন তাঁর সেইসব বন্ধু-লেখকরা, যারা স্তালিনপন্থীদের সঙ্গে সংঘাতের সময় আঁদ্রে জিদের পাশে থাকেননি। জিদের এই কান্ড দেখেই প্যারিসের লোকেরা অট্টহাস্য করেছিল।

• রয়টার বিষয়টার গুরুত্ব উপলব্ধি করে বেতারে এই খবর ছড়িয়ে দিয়েছিল। আর জাহাজের টাইপ করা একশো লাইনের দৈনিক কাগজেও সেটা সাড়ম্বরে প্রকাশ পেয়েছিল। এইভাবেই লেখক জাহাজে বসে প্যারিসের মানুষদের অট্টহাস্যের খবর পেয়েছিলেন।

প্রশ্ন : “গল্পটা সকলেই জানেন,” যে গল্পের কথা লেখক বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: একজন রাজা তার হেকিমের একটা বই কিছুতেই করায়ত্ত না করতে

পেরে তাকে খুন করেন। বই রাজার হাতে আসে। রাজাও বাহ্যজ্ঞান লুপ্ত হয়ে বইটা পড়তে থাকে। কিন্তু বইটির পৃষ্ঠাগুলো এমন জুড়ে গিয়েছিল যে রাজা বারবার আঙুল দিয়ে মুখ থেকে থুতু নিয়ে সেই জোড়া ছাড়িয়ে পাতা উলটাচ্ছিলেন। এদিকে হেকিম নিজের মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন বলেই প্রতিশোধের ব্যবস্থাও করে গিয়েছিলেন তিনি বইটির পাতায় পাতায় কোনার দিকে মাখিয়ে রেখেছিলেন মারাত্মক বিষ। সেই বিষ রাজার আঙুল হয়ে রাজার মুখের মধ্যে প্রবেশ করেছিল। বইটির শেষ পাতায় এই প্রতিহিংসা নেওয়ার পরিকল্পনার খবরটিও লিখে রেখে গিয়েছিলেন হেকিম। বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।

প্রশ্ন : মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরির বিশেষত্ব কী ছিল? আঁদ্রে জিদে কীভাবে তাঁর লেখক-বন্ধুদের শিক্ষা দিয়েছিলেন?

উত্তর: মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরিতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ছিল শুধু বই। এমনকি কার্পেটের ওপরেও অসংখ্য বই স্তূপীকৃত হয়ে এমনভাবে পড়ে থাকত যে, সেখানে পা ফেলাই ছিল মুশকিল।

• সোভিয়েতের বিরোধিতা করে বই লেখায় প্যারিসে স্তালিনপন্থীরা যখন আঁদ্রে জিদকে আক্রমণ করে তাঁর লেখক-বন্ধুরা তখন জিদের পাশে দাঁড়াননি। এর উচিত শিক্ষা দিতেই জিদ লাইব্রেরি নিলামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। প্যারিসের লোকজন প্রাথমিক বিস্ময় কাটিয়ে নিলামস্থলের দিকে ছুটে যায়। কিন্তু গিয়ে তারা অবাক হয়ে দেখে যে, যে বন্ধুরা জিদের পাশে ছিলেন না তাদের স্বাক্ষর করা বইগুলোই তিনি বিক্রি করছেন।

আরও পড়ুন – ছুটি গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment