গীতায় কর্ম কথাটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? আলোচনা করো

গীতায় কর্ম কথাটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? আলোচনা করো

গীতায় কর্ম কথাটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? আলোচনা করো
গীতায় কর্ম কথাটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? আলোচনা করো

গীতায় কর্ম কথাটির অর্থ

গীতায় কর্ম ‘নিষ্কাম’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। গীতার দ্বিতীয় অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছেন-

 "যোগস্থ কুরু কর্মাণি সঙ্গং ত্যত্ত্বা ধনঞ্জয়।
সিদ্ধ্যসিদ্ধ্যোঃ সমো ভূত্বা সমত্বং যোগ উচ্যতে।।” (২/৪৮)
শ্লোকটির তিনটি অংশ

শ্লোকটির ব্যাখ্যা তিনটি অংশে বিশ্লেষণ করা যায়।

প্রথম অংশ- যোগস্থ হয়ে কর্ম করবে।

দ্বিতীয় অংশ – আসক্তি ত্যাগ করে কর্ম করবে।

তৃতীয় অংশ – সিদ্ধি ও অসিদ্ধিকে তুল্যজ্ঞান করবে। এক্ষেত্রে ‘যোগ’ বলতে সিদ্ধি ও অসিদ্ধিতে সমত্বজ্ঞানকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তৃতীয় অংশটি প্রথম অংশের সম্প্রসারণ মাত্র। দ্বিতীয় অংশতে ‘সঙ্গ’ অর্থাৎ আসক্তি ত্যাগ করার কথা বলা হয়েছে। কর্তৃত্বের অভিনিবেশ ত্যাগ করে ‘ঈশ্বর কর্তা’ এইরূপ জেনে কর্ম করতে হবে।

শ্রীকৃষ্ণের নিষ্কাম কর্ম বিষয়ক উপদেশ

নিষ্কাম কর্মযোগ বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ এই অধ্যায়ে অর্জুনকে বলেছেন-

(ক) নিষ্কাম কর্মযোগে প্রচেষ্টার বিনাশ হয় না। বিপরীত ফল হিসেবে কোনো পাপের উৎপত্তি হয় না।

(খ) কাম্যকর্ম সম্পূর্ণ না হলে, অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত সম্পাদন না করলে তা ব্যর্থ হয়ে যায়। কিন্তু নিষ্কাম কর্ম আংশিকভাবে সম্পন্ন হলেও তা কার্যকরী হয়। নিষ্কাম কর্মযোগের অনুসরণে যদি অল্পসংখ্যক কর্মও করা যায় তাহলে সেই কর্মও কর্মীকে মুক্তির পথে নিয়ে যাবে।

(গ) নিষ্কাম কর্মযোগে কর্মটি ক্ষুদ্র কি বৃহৎ, লঘু কি গুরু তা বিবেচনা করার । দরকার নেই। রাজা বা মন্ত্রীর কর্ম অথবা শ্রমিকের কর্ম, ব্রাহ্মণের যাগ-যজ্ঞাদি আর শূদ্রের সেবাকর্ম সবই একই রকম। শূদ্রও যদি ফলের আকাঙ্ক্ষা না করে স্বধর্ম পালনের দ্বারা কর্ম করেন, তবে মুক্তির পথে অগ্রসর হতে পারবেন।

(ঘ) নিষ্কাম কর্মের সাধন মহৎ ভয় থেকে ত্রাণ করে। মহৎ ভয় বলতে জন্ম-মৃত্যুর ভয়, বিত্তনাশের ভয়কে বোঝায়, সকল প্রকার ভয় থেকে নিষ্কাম কর্মযোগী রক্ষা পেয়ে থাকেন।

আরও পড়ুন – যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃতি – অবরোহ এবং আরোহ

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment