ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রবন্ধ রচনা 400+ শব্দে

ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রবন্ধ রচনা – আজকের পর্বে ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রবন্ধ রচনা আলোচনা করা হল।

ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রবন্ধ রচনা

ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রবন্ধ রচনা
ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রবন্ধ রচনা

ই-বর্জ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা

সূচনা

সভ্যতার অগ্রগতির সাথে তাল রেখে মানুষ তার জীবনকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরিয়ে তোলার জন্য নতুন নতুন উদ্ভাবন করছে। এইসব আবিষ্কার বিজ্ঞানের জয়যাত্রাকে করেছে ত্বরান্বিত। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে প্লাস্টিক জাতীয় বস্তু, মাইক্রো ওভেন, এয়ার কন্ডিশনার, ডিজিটাল টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিন, সিডি প্লেয়ার, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার প্রভৃতি কিছুদিন ব্যবহারের ফলে অকেজো হয় ও ফেলে দিতে হয়, পরিণত হয় বর্জ্য পদার্থে যা ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য পদার্থ হিসাবে পরিচিত। এইসব বর্জ্য পদার্থের কিছু ক্ষতিকারক উপাদান থাকায় পরিবেশকে দূষিত করছে এবং এর প্রভাব পড়ছে মানুষের, প্রাণীর শরীরে। যার ফলে পরিবেশে ছড়াচ্ছে নানা ধরণের দূষণ।

ই-বর্জ্য (E-Waste) পদার্থের ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান

ই-বর্জ্য পদার্থে আছে ক্ষতিকারক হ্যালোজেনেটেড বিষাক্ত ধাতব ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ। এর মধ্যে আছে ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, পারদ, সীসা প্রভৃতি পদার্থ যা পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যে থাবা বসায়, বিষিয়ে দেয় শরীরকে ক্ষতিকারক বস্তুর প্রভাবে। যেমন মোবাইল ফোনের চার্জারের ব্যাটারিতে থাকা ক্যাডমিয়ামে মুত্রজনিত রোগ হয়। কম্পিউটারের চিপ থেকে ও এই রোগ হতে পারে। কম্পিউটারের মনিটরে থাকে বেরিয়াম যা হৃৎপিন্ড ও যকৃৎকে অকেজো করতে পারে, মাদার বোর্ডে থাকা বেরিয়াম ক্যানসার সৃষ্টিতে সহায়ক হয়। কম্পিউটারের ডিস্কে থাকে ক্রোমিয়াম যার প্রভাবে হাঁপানি, ব্রঙ্কিয়ো এ্যাজমা, এমন কি ডি এন এর পরিকাঠামোর পরিবর্তন আনতে পারে। সীসা ও পারদের ব্যবহার করা হয় অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যে। সীসা অকাল বার্ধক্য, অকালে চুল পাকা, পারদ জটিল চর্মরোগ সৃষ্টি করে।

ভারতে ই-বর্জ্যের প্রভাব

ই-বর্জের বিষাক্ত প্রভাব সম্বন্ধে সারা পৃথিবীর বুদ্ধিজীবিদের ভাবিয়ে তুলছে। যার ফলে সারা পৃথিবীতে ই-বর্জ্য নামে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় ভারতে ই-বর্জ্যের পরিমাণ প্রতি বছরে প্রায় ১,৫০,০০০ টন এবং মুম্বাইতে ১,১৯,০০০ টন। এইসব ই-বর্জ্য রিসাইকেলের ব্যবস্থা করলে নতুন করে ব্যবহার যোগ্য হতে পারে। পরিসংখ্যান অনুসারে আগামী ১৯২০ সালের মধ্যে এই বিষাক্ত ই-বর্জ্যের পরিমাণ ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং মোবাই ই-বর্জ্যের বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৮ গুণ পর্যন্ত। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার একমাত্র পন্থা রিসাইকেলের মাধ্যমে পূনঃব্যবহার। রিসাইকেল বলতে বুঝায় রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশিকা অনুসারে, তামা, রূপা, সোনা, ইন্ডিয়াম, পালাডিয়ামের মতো দামি ধাতুকে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশে ব্যবহার করা বার বার।

বিভিন্ন রাষ্ট্রে ই-বর্জ্য সম্বন্ধে সাবধানতা অবলম্বন

জাপান, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে প্রভৃতি দেশে কঠোর আইন জারি করেছে যে ই-বর্জ্য না রিসাইকেল করে ফেলে রাখা যাবে না। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকার মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে এখনও পর্যন্ত সেরূপ কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সরকারীভাবে পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে মানুষের জীবনে বিষময় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির সম্ভবনা খুবই আছে। সরকারীভাবে ই-বর্জ্য বিষয়ে কঠোর আইন প্রণয়ন খুবই জরুরি।

উপসংহার

ইলেকট্রনিক্স যে বর্তমান সভ্যতায় নতুন যুগের সৃষ্টি করেছে তা ঠিক। ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যের ব্যবহার মানুষের জীবনযাত্রার অঙ্গ এখন। কিন্তু তা থেকে যে ই-বর্জ্য সৃষ্টি হচ্ছে তা থেকে আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তা নাহলে সভ্যতার সংকট দেখা দেবে।

আরও পড়ুন – ভারতে সন্ত্রাসবাদের সমস্যা প্রবন্ধ রচনা

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment