ইউরোপে সামন্ততন্ত্রের নেতিবাচক প্রভাবগুলি কী ছিল
ইউরোপের ইতিহাসে সামন্ততন্ত্রের প্রভাব রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ -সবক্ষেত্রেই লক্ষণীয়।
সামন্ততন্ত্রের নেতিবাচক প্রভাবসমূহ
সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি বেশকিছু নেতিবাচক প্রভাবও পরিলক্ষিত হয়। যেমন-
(1) সামাজিক বৈষম্য: সামন্ততন্ত্রের প্রধান নেতিবাচক দিক হল সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্যের উপস্থিতি। এই ব্যবস্থায় সামন্তপ্রভু, অভিজাত ও যাজকরা সমস্ত প্রকার আর্থসামাজিক অধিকার ভোগ করলেও সাধারণ মানুষের কোনও অধিকার ছিল না।
(2) অর্থনৈতিক বৈষম্য: সামন্ততান্ত্রিক অর্থনীতিতে সামন্তপ্রভু ও অভিজাতরা সমৃদ্ধির শিখরে আরোহণ করলেও সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ছিল খুবই শোচনীয়।
(3) শোষণমূলক করের উপস্থিতি: সামন্ততন্ত্রের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক প্রভাব ছিল বিভিন্ন প্রকার শোষণমূলক করের উপস্থিতি। সামন্ততান্ত্রিক সমাজে সাধারণ কৃষক বা ভ্যাসাল ও ভূমিদাস বা সার্ফদের বিভিন্ন ধরনের শোষণমূলক কর প্রদান করতে হত। ফলে তাদের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে।
(4) অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা: শিল্প ও বাণিজ্যের পরিবর্তে সামন্ততন্ত্র একমাত্র কৃষির উপর গুরুত্ব দেওয়ায় সামন্ততান্ত্রিক অর্থনীতি একটি জমিকেন্দ্রিক এবং অঞ্চলভিত্তিক অর্থনীতিতে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।
(5) সার্ফ বা ভূমিদাসদের উপর অত্যাচার: সামন্ততন্ত্রের একটি অন্যতম নেতিবাচক দিক হল, সার্ফ বা ভূমিদাসদের উপর সামন্তপ্রভুদের অকথ্য অত্যাচার। সকলপ্রকার মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এই শ্রেণির উপর সামন্তপ্রভুরা চরম শোষণ ও অত্যাচার চালাতেন।
(6) একনায়ক-এর প্রাধান্য: সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় সামন্তপ্রভু সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হওয়ায় একনায়কতন্ত্রী শাসনকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন –
১। সামন্ততন্ত্র বলতে কী বোঝায়?
২। ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি কী ছিল?
৩। ‘ফিফ’ ও ‘শিভালরি বলতে কী বোঝো?