পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর | XI 2nd Semester Philosophy WBCHSE

সূচিপত্র

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর | XI 2nd Semester Philosophy WBCHSE

পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর
পদ, বাক্য, বচন, পদের ব্যাপ্যতা, সত্যতা ও বৈধতা প্রশ্ন উত্তর

পদ কী? পদের অর্থ বিশ্লেষণ করো।

বাক্য বা বচনের উপাদান হল পদ অর্থাৎ যে এক বা একাধিক শব্দ নিজে নিজেই কোনো বচনের উদ্দেশ্য বা বিধেয়রূপে ব্যবহৃত হয় বা হতে পারে তাকে ‘পদ’ (Term) বলে। সংকীর্ণ অর্থে ‘পদ’ বলতে বাক্য বা বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদকে বোঝায়। আর ব্যাপক অর্থে ‘পদ’ উদ্দেশ্য ও বিধেয় ছাড়াও বিশেষ্য বা বিশেষণ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও ব্যাপক অর্থে x, y, z প্রভৃতি বর্ণপ্রতীককেও পদ হিসেবে গণ্য করা হয়।

প্রচলিত যুক্তিবিজ্ঞানে একই উদ্দেশ্য পদ বিধেয় পদ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। যেমন- মানুষ হয় দ্বিপদ জীব, রাম হয় মানুষ। এখানে মানুষ পদটি প্রথম বচনে উদ্দেশ্য এবং দ্বিতীয় বচনে বিধেয় পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

বাক্য কাকে বলে? আলোচনা করো।

দৈনন্দিন জীবনে চিন্তার বিষয়গুলি প্রকাশিত হয় ভাষার দ্বারা। ভাষায় প্রকাশিত চিন্তাকেই ব্যাকরণগত অর্থে ‘বাক্য’ (Statement) বলা হয়। অর্থাৎ বাক্য হল ব্যাকরণগতভাবে অবস্থিত কতগুলি শব্দের বা শব্দসমষ্টির ক্রমিক সমাবেশ, যার সাহায্যে বক্তা অর্থপূর্ণভাবে তার মনের ভাবকে প্রকাশ করতে পারে। তবে কতগুলি অর্থপূর্ণ শব্দ যুক্ত করলেই যে অর্থপূর্ণ বাক্য পাওয়া যাবে তা নয়। শব্দগুলিকে সঠিকভাবে বিন্যস্ত করলে তবেই অর্থপূর্ণ বাক্য পাওয়া যায়।

যেমন- নেভাও জল আগুন ঢেলে -এখানে শব্দগুলি যথাযথক্রমে বিন্যস্ত না হওয়ায় অর্থপূর্ণ বাক্য গঠিত হয়নি। শব্দগুলি সঠিক ক্রমে সাজালে হয় – জল ঢেলে আগুন নেভাও- যা একটি অর্থপূর্ণ বাক্য।

বাক্য নানা প্রকার হয়ে থাকে। যেমন- প্রশ্নমূলক (Interrogative), আদেশমূলক (Imperative), বিস্ময়সূচক (Exclamatory), বর্ণনামূলক (Descriptive) ইত্যাদি।

অবধারণ কাকে বলে? প্রতিটি নিরপেক্ষ বচনে কয়টি পদ থাকে ও কী কী?

অবধারণ: যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা দুটি ধারণার মধ্যে মিল ও অমিল প্রত্যক্ষ করে তাদের মধ্যে একটি সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে বলে অবধারণ (Judgement)। এই সম্বন্ধ সদর্থক এবং নঞর্থক উভয়ই হতে পারে। যেমন- ‘পারদ হয় তরল’ -এখানে পারদের ধারণা ও তরলের ধারণার মিল প্রত্যক্ষ করি। আবার, ‘বৃত্ত নয় চতুর্ভূজ’ -এখানে বৃত্ত-র ধারণার সঙ্গে ‘চতুর্ভুজ’-এর ধারণার অমিল প্রত্যক্ষ করি। এই প্রত্যক্ষ যতক্ষণ মানসিক পর্যায়ে থাকে, সেটিই অবধারণ। ভাষায় প্রকাশিত অবধারণই হল বচন। সুতরাং, বচন ও অবধারণ হল একই বিষয়ের দুটি দিক।

প্রতিটি নিরপেক্ষ বচনে দুটি পদ (Term) থাকে। যথা- উদ্দেশ্য পদ (Subject) এবং বিধেয় পদ (Predicate)।

বচন কাকে বলে? একটি আদর্শ নিরপেক্ষ বচনের কয়টি অংশ ও কী কী?

বচন: বাক্যের পরিশ্রুত বা তর্কবিদ্যাসম্মত রূপটি হল বচন (Proposition)। অ্যারিস্টটলের মতে- ‘ভাষায় প্রকাশিত অবধারণকে বলা হয় বচন’। আবার, আধুনিক যুক্তিবিজ্ঞানে বচনের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী বলা যায়- ‘বচন হল কোনো বিবৃতি, যা সর্বদা হয় সত্য হবে, না হয় মিথ্যা হবে’। অর্থাৎ সত্যতা বা মিথ্যাত্ব হল বচনের ধর্ম। একমাত্র ঘোষক বা নির্দেশক বাক্যগুলি বচন হিসেবে গণ্য হয়। সকল বাক্য বচন নয়। যেমন- সকল মানুষ হয় দ্বিপদ প্রাণী।

নিরপেক্ষ বচনের অংশ: একটি আদর্শ নিরপেক্ষ বচনের (Categorical Proposition) চারটি অংশ থাকে। যথা- পরিমাণক (Quantifier), উদ্দেশ্য পদ (Subject), সংযোজক (Copula) ও বিধেয় পদ (Predicate) |

উদাহরণ-সহ বচনের গঠন বর্ণনা করো।

বচন হল একটি ঘোষক বাক্য, যার ক্রিয়াপদরূপে থাকে ‘হওয়া’ পদটি। বচনে ‘হওয়া’ ক্রিয়াপদটি সবসময় বর্তমান কালে অবস্থান করে। প্রত্যেকটি বচনে চারটি অংশ থাকে- পরিমাণক, উদ্দেশ্য পদ, সংযোজক ও বিধেয় পদ।

প্রত্যেক বচনে দুটি পদ (Term) থাকে। যথা- উদ্দেশ্য পদ (Subject Term) ও বিধেয় পদ (Predicate Term) এবং এই পদ দুটি সংযোজক (Copula) দ্বারা যুক্ত থাকে। ব্যাকরণে যেটি ক্রিয়াপদরূপে বিবেচিত হয় যুক্তিবিজ্ঞানে তাকেই সংযোজক বলে। এই সংযোজক সদর্থক ও নঞর্থক -এই দুই প্রকার হয়। বচনের অপর উল্লেখযোগ্য অংশটি হল পরিমাণক (Quantifier), এটি বচনের পরিমাণকে নির্দেশ করে।

যেমন-‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’-এই বচনটিতে পরিমাণক হল’সকল’, উদ্দেশ্য পদ হল ‘মানুষ’, সংযোজক হল ‘হয়’ এবং বিধেয় পদ হল ‘মরণশীল’।

অবধারণ ও বচনের মধ্যে সম্পর্ক কী?

অবধারণ (Judgement) হল একপ্রকার মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে আমরা মনে মনে দুটি সামান্য ধারণাকে তুলনা করে, তাদের মধ্যে একটি সম্বন্ধ স্থাপন করি।

এই সম্বন্ধ সদর্থক বা নঞর্থক উভয়ই হতে পারে। যেমন- ‘কুবের’ ও ‘ধনী’ -এই দুটি বিষয়ের ধারণাকে যখন আমরা মনে মনে তুলনা করে সম্বন্ধে আবদ্ধ করি, তখন সেটি হয় অবধারণ। এই ভাবনাকে যখন ‘কুবের হয় ধনী ব্যক্তি’ -এমন বাক্যে ‘প্রকাশ করি তখন তাকে বচন বলা হয়। অর্থাৎ অবধারণকে যখন ভাষায় ব্যক্ত করি, তখন তাকে বচন বলা হয়।

সুতরাং বচন ও অবধারণ হল একই বিষয়ের দুটি দিক। অবধারণ হল চিন্তার দিক ও বচন হল সেই চিন্তার ভাষায় প্রকাশিত দিক। মনোমধ্যে যাকে অবধারণ বলা হয়, ভাষায় প্রকাশিত হলে তাকেই বচন বলা হয়।

বচন এবং অবধারণ-এর মধ্যে পার্থক্য কী?

বচন হল ভাষায় ব্যক্ত অবধারণ। অপরদিকে, অবধারণ হল মানসিক প্রক্রিয়া। দুটি ধারণাকে মনে মনে পরস্পরের সঙ্গে তুলনা করলে বা তাদেরকে সংযুক্ত করা হলে গঠিত হয় অবধারণ। সুতরাং, বচন ও অবধারণ সম্পর্কযুক্ত হলেও এক নয়।

• অবধারণ ব্যক্তিগত বিষয় কারণ তা ব্যক্তিবিশেষের মানসিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বচন হল সার্বজনীন কেন-না তা ভাষায় প্রকাশিত।

• অবধারণ অব্যক্ত চিন্তার মধ্যে নির্জন অবস্থায় থাকে। কিন্তু ভাষায় ব্যক্ত হলে অবধারণ সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ পায়, তখন তা বচন হয়।

• তর্কশাস্ত্রে যুক্তি গঠনের ক্ষেত্রে বচন ব্যবহৃত হয়, কিন্তু অবধারণ ব্যবহৃত হয় না।

বচনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

বচনের বৈশিষ্ট্য: বচনের কতগুলি মৌলিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ

উৎস: বচনের মূল উৎস হল বাক্য। তবে যে-কোনো বাক্যই বচন নয়, একমাত্র ঘোষক বাক্যই বচনে পরিণত হতে পারে (যে বাক্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে কোনো কিছু সদর্থক বা নঞর্থকভাবে ঘোষণা করা হয়, তাকেই বলা হয় ঘোষক বাক্য)।

গঠন: প্রতিটি বচন চারটি অংশ নিয়ে গঠিত হয়। এই অংশগুলি হল পরিমাণক, উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয়।

আকার: প্রতিটি বচনের নির্দিষ্ট আকার আছে। যেমন- ‘A’ বচনটির আকার হল – সকল S হয় P। যদি মেঘ করে তবে বৃষ্টি হবে- বচনটির আকার হল- যদি p তবে q।

সভ্যতা-মিথ্যাত্ব: প্রতিটি বচন সত্য অথবা মিথ্যা হবে। অবরোহ অনুমানে প্রধানত আকারগত সত্যতা এবং আরোহ অনুমানে আকারগত ও বস্তুগত উভয় প্রকার সত্যতার দিকে লক্ষ রাখা হয়।

মর্যাদাগত ব্যাখ্যা: সমস্ত বচনই বাক্যের মর্যাদা পেতে পারে কিন্তু সমস্ত বাক্য বচন হতে পারে না, একমাত্র ঘোষক বাক্য বচনের মর্যাদা পেতে পারে। কালের গুরুত্ব: বচন অতীত ও ভবিষ্যৎ কালের হয় না। প্রতিটি বচন কেবল বর্তমান কালের হয়।

‘সব বচনই বাক্য কিন্তু সব বাক্যই বচন নয়’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো। অথবা, ‘বাক্য ও বচন এক নয়’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

ব্যাবহারিক জীবনে আমরা যার সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করি তাকে ব্যাকরণে বাক্য বলে। আর যুক্তিবিজ্ঞানে তাকে বলে বচন। বাক্য বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যেমন- প্রশ্নবোধক, ইচ্ছাবোধক, অনুজ্ঞাপ্রকাশক, বিস্ময়বোধক, নির্দেশক বা ঘোষক প্রভৃতি। এর মধ্যে একমাত্র ঘোষক বা নির্দেশক বাক্যকেই বচন হিসেবে স্বীকার করা হয়। কেন-না ঘোষক বাক্যেই বিষয় সম্পর্কে কোনো কিছুকে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়। তাই বলা যায়, সব বচনই বাক্য কিন্তু সব বাক্য বচন নয়।

বাক্য হল সুবিন্যস্ত অর্থপূর্ণ শব্দসমষ্টি। আর বাক্যের দ্বারা যে অর্থ প্রকাশিত হয় তাকে বলে বচন। সব যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত বচনকে ব্যাকরণে বাক্য বলা হলেও সব ব্যাকরণসম্মত বাক্যকে বচন বলা যায় না।

একটি উদাহরণ দিয়ে নিরপেক্ষ বচনের বিভিন্ন অংশগুলি চিহ্নিত করো।

নিরপেক্ষ বচনের চারটি অংশ- পরিমাণক, উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয়।

পরিমাণক: প্রতিটি আদর্শ আকারের নিরপেক্ষ বচন ‘সকল’, ‘কোনো’, ‘কোনো কোনো’ প্রভৃতি শব্দ বা শব্দগুচ্ছের কোনো একটির দ্বারা শুরু হয়। এই শব্দ বা শব্দগুচ্ছ বচনের পরিমাণ নির্দেশ করে। এই পরিমাণ নির্দেশক শব্দগুলিকেই পরিমাণক বলে।

উদ্দেশ্য: প্রতিটি বচনে যার সম্বন্ধে অর্থাৎ যে পদ সম্বন্ধে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়, তাকে উদ্দেশ্য বলে।

সংযোজক: সংযোজক প্রতিটি বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপনকারী একটি চিহ্ন বা সংকেতসূচক শব্দ।

বিধেয়: প্রতিটি নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যাকে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়, তাকে বলে বিধেয় পদ।

উদাহরণ-

কোনো কোনো মানুষ   হয়        সৎ।
↓             ↓     ↓          ↓
পরিমাণক     উদ্দেশ্য সংযোজক বিধেয়

মানক বা পরিমাণক কাকে বলে?

আদর্শ আকারের একটি নিরপেক্ষ বচন শুরু হয় মানক বা পরিমাণক দ্বারা। বচনের যে অংশটি বা শব্দটি বচনের পরিমাণকে নির্দেশ করে, তাকেই বলা হয় মানক বা পরিমাণক (Quantifier)। পরিমাণক দুই প্রকার- সার্বিক পরিমাণক ও বিশেষ পরিমাণক। বচনে মূলত তিন ধরনের পরিমাণক পরিলক্ষিত হয়। যথা- সকল, কোনো, কোনো-কোনো। সকল এবং কোনো হল সার্বিক পরিমাণক এবং কোনো-কোনো হল বিশেষ পরিমাণক।

যেমন-সকল মানুষ হয় দ্বিপদ জীব, কোনো ত্রিভুজ নয় চতুর্ভুজ, কোনো কোনো পশু হয় গৃহপালিত ইত্যাদি।

পরিমাণকে সংক্ষেপে মানক বলা হয়।

উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ কাকে বলে? উদাহরণ-সহ আলোচনা করো।

উদ্দেশ্য পদ: যে পদ সম্পর্কে বচনে কোনো কিছু ঘোষণা করা হয় অর্থাৎ যার সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাকে বলে উদ্দেশ্য পদ (Subject Term)। উদ্দেশ্য পদ একটি শব্দ হতে পারে আবার একাধিক শব্দও হতে পারে।

বিধেয় পদ: বচনের যে পদ দ্বারা উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয় তাকে বিধেয় পদ (Predicate Term) বলে। বিধেয় পদে একটি শব্দ থাকতে পারে, আবার একাধিক শব্দও থাকতে পারে।

উদাহরণ

সকল মানুষ হয় দ্বিপদ জীব।

উক্ত বচনটিতে ‘মানুষ’-পদটি সম্পর্কে বলা হয়েছে। তাই ‘মানুষ’হল উদ্দেশ্য পদ, যাকে ইংরেজির ‘S’ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। আর ‘দ্বিপদ জীব’ পদটি হল বিধেয় পদ। বচনের বিধেয় পদকে ইংরেজির ‘P’ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

সংযোজক কী? সংযোজক’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী?

সংযোজক: কোনো নিরপেক্ষ বচনে যে চিহ্নের দ্বারা উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যবর্তী স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতির সম্বন্ধকে প্রকাশ করা হয়, তাকে সংযোজক বলে। এটি বচনের গুণকে নির্দেশ করে।

যেমন- সকল জুঁই হয় সুগন্ধি ফুল (A)-এই বচনটিতে সংযোজক হিসেবে ব্যবহৃত ‘হয়’ স্বীকৃতির সম্বন্ধকে প্রকাশ করেছে। আবার কোনো জবা নয় সুগন্ধি ফুল (E) -এই বচনটিতে ‘নয়’ অস্বীকৃতির সম্বন্ধকে প্রকাশ করেছে।

সংযোজক শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ: সংযোজকের ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘Copula’। ‘Copula’ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ‘Co’ এবং ‘Apere’ থেকে। ‘Co’ শব্দটির অর্থ হল সঙ্গে (with) এবং ‘Apere’ শব্দটির অর্থ হল ‘যুক্ত করা’ (to join)। কাজেই ‘Copula’ শব্দটির অর্থ হল ‘যা একটিকে অপর একটির সঙ্গে যুক্ত করে’।

সংযোজকের স্বরূপ বা বৈশিষ্ট্য লেখো।

সংযোজকের স্বরূপ বা বৈশিষ্ট্য: সংযোজকের সংজ্ঞাকে বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া যায়, তা নিম্নরূপ-

মাধ্যম: সংযোজক কোনো পদ নয়, উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্পর্ক প্রকাশক একটি শব্দমাত্র। নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় যুক্ত করা এবং উভয়পদের মধ্যে স্বীকৃতি ও অস্বীকৃতিমূলক সম্বন্ধকে ব্যক্ত করা সংযোজকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

অর্থগত প্রকৃতি : সময় বা কালের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংযোজকের অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না। সংযোজকের অর্থ স্থান- কালভেদে একই থাকে।

ক্রিয়ার বর্তমান রূপ: সংযোজক হল একটি ক্রিয়াপদ। এই ক্রিয়াপদটি ‘ভূ’-ধাতুর বর্তমান কালের রূপ। ফাউলার, হ্যামিলটন, ম্যানসেল প্রমুখ তর্কবিদদের মতে, সংযোজকের রূপ সর্বদা বর্তমান কালের রূপ হবে। কিন্তু মিলের মতে, সংযোজক যে-কোনো কালের হতে পারে।

অর্থ অনুসারে শ্রেণিবিভাগ: অর্থ অনুসারে সংযোজক সদর্থক বা নঞর্থক হতে পারে। কোনো বচনের উদ্দেশ্য পদটি যদি বিধেয় সম্পর্কে কিছু স্বীকার করে, তাহলে সংযোজকটি সদর্থক হবে। আর বিধেয়টি যদি উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু অস্বীকার করে, তাহলে সংযোজকটি নঞর্থক হবে।

নিরপেক্ষ বচনের সংযোজকের কাজ কী?

নিরপেক্ষ বচনের সংযোজকের কাজ: সংযোজক হল নিরপেক্ষ বচনের অন্তর্গত উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপনকারী চিহ্ন বা শব্দ। সংযোজকের কাজ হল-

সংযোগ স্থাপন: সংযোজক উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।

স্বীকৃতি-অস্বীকৃতি: উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে স্বীকৃতিমূলক বা অস্বীকৃতিমূলক সম্বন্ধকে ব্যক্ত করা সংযোজকের অন্যতম কাজ। যেমন- ‘রাজু হয় ধনী’ – এই বচনে হয় সংযোজকটি ‘রাজু’ পদটি সম্পর্কে ‘ধনী’ পদটি স্বীকার করে নেয়। এক্ষেত্রে সংযোজকটি হল সদর্থক। আবার, ‘পিয়া নয় সরল’ -এই বচনে নয় সংযোজকটি ‘পিয়া’ পদটি সম্পর্কে ‘সরল’ পদটিকে অস্বীকার করেছে। এক্ষেত্রে সংযোজকটি হল নঞর্থক।

পার্থক্য নির্দেশ: সংযোজক ব্যাকরণের বাক্য ও যুক্তিবিজ্ঞানের বচনের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে। কেন-না বচনে সংযোজক একটি অংশরূপে থাকলেও বাক্যে থাকে না।

নিরপেক্ষ বচনের গুণ ও পরিমাণ বলতে কী বোঝো।

গুণ: নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদের অন্তর্ভুক্তির সম্বন্ধকে স্বীকার বা অস্বীকার করাকে বলা হয় বচনের গুণ (Quality)। নিরপেক্ষ বচনের গুণ দুই প্রকার- সদর্থক ও নঞর্থক। যেমন-

সদর্থক

সকল কবি হয় দার্শনিক (A)।

কোনো কোনো প্রাণী হয় জলচর (I)।

নঞর্থক

কোনো মানুষ নয় স্বার্থপর (E)।

কোনো কোনো মাছ নয় স্তন্যপায়ী (O)।

পরিমাণ: একটি নিরপেক্ষ বচনের বিধেয় পদে উদ্দেশ্য সম্বন্ধে কিছু বলা হয়। এই বিষয়টি একটি জাতি বা শ্রেণির সমগ্র অংশ হতে পারে আবার আংশিক হতে পারে। উদ্দেশ্য পদের এই সামগ্রিক বা আংশিক স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতিকেই বচনের পরিমাণ (Quantity) বলে। নিরপেক্ষ বচনের পরিমাণ দুই প্রকার- সামান্য (Universal) ও বিশেষ (Particular)। যেমন-

সামান্য

সকল জড় বস্তু হয় আয়তন যুক্ত (A)

কোনো ত্রিভুজ নয় বর্গক্ষেত্র (E)।

বিশেষ

কোনো কোনো হাতি হয় সাদা জীব (I)।

কোনো কোনো আম নয় টক ফল (O)।

সদর্থক বচন ও নঞর্থক বচন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

সদর্থক বচন: যে নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়টি কোনো কিছু স্বীকার (Affirm) করে, সেই বচনটিকে বলা হয় সদর্থক বচন (Affirmative Proposition)। সদর্থক বচনকে ‘হ্যাঁ-বাচক’ বচনও বলা হয়ে থাকে। এই ধরনের বচনের ক্ষেত্রে সংযোজকটির ‘হয়’, ‘হন’ ইত্যাদি রূপ হয়ে থাকে।

উদাহরণ

সকল কবি হয় মানুষ (A)।

কোনো কোনো ব্যক্তি হয় স্বার্থপর (I)।

প্রথম বচনটিতে ‘মানুষ’ গুণটি ‘সকল কবি’ সম্পর্কে স্বীকার করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় বচনটিতে ‘স্বার্থপর’ গুণটি ‘কোনো কোনো মানুষ’ সম্পর্কে স্বীকৃত হয়েছে। A বচন ও I বচন সদর্থক বচন হিসেবে চিহ্নিত হয়।

নঞর্থক বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের ক্ষেত্রে বিধেয়টি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কোনো কিছুকে অস্বীকার (Negate) করে, সেই বচনকে নঞর্থক বচন (Negative Proposition) বলে। এই ধরনের বচনের প্রকাশ সাধারণত ‘নয়’, ‘না’ প্রভৃতি শব্দ দ্বারা ব্যক্ত হয়, তাই নঞর্থক বচনকে ‘না-বাচক’ বচনও বলা হয়।

উদাহরণ

কোনো মানুষ নয় হিংস্র (E)।

কোনো কোনো ছাত্র নয় বুদ্ধিমান (০)।

প্রথম বচনে ‘হিংস্র’ গুণটি ‘সকল মানুষ’ সম্পর্কে অস্বীকার করা হয়েছে এবং ‘বুদ্ধিমান’ গুণটি ‘কোনো কোনো ছাত্র’ সম্পর্কে অস্বীকার করা হয়েছে। E বচন এবং ০ বচন হল নঞর্থক বচন।

সামান্য বা সার্বিক বচন ও বিশেষ বচন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

সামান্য বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের বিধেয়পদটি সমগ্র উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে অর্থাৎ উদ্দেশ্য পদ দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণির সকল সদস্য সম্বন্ধে স্বীকার বা অস্বীকার করে, তাকে সামান্য বা সার্বিক বচন (Universal Proposition) বলে।

যেমন- সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)। এই বচনে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ শ্রেণির সকল সদস্য সম্বন্ধে ‘মরণশীল’ শ্রেণিকে স্বীকার করা হয়েছে।

অনুরূপভাবে, কোনো শিশু নয় স্বার্থপর (E)। এই বচনে উদ্দেশ্য পদ ‘শিশু’ শ্রেণির প্রতিটি সদস্য সম্বন্ধে ‘স্বার্থপর’ শ্রেণিকে অস্বীকার করা হয়েছে।

বিশেষ বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের বিধেয় পদটি উদ্দেশ্যের আংশিক ব্যক্ত্যর্থকে স্বীকার বা অস্বীকার করে, সেই বচনকে বলা হয় বিশেষ বচন (Particular Proposition) I

যেমন- কোনো কোনো সাপ হয় বিষধর (I)। এই বচনে উদ্দেশ্য পদ ‘সাপ’ শ্রেণির ‘কোনো কোনো’ সদস্য সম্বন্ধে বিধেয় পদ ‘বিষধর’-কে স্বীকার করা হয়েছে।

অনুরূপভাবে, কোনো কোনো ফুল নয় লাল (O)। এটিও একটি বিশেষ বচন। এখানে ‘কোনো কোনো ফুল’ সম্বন্ধে ‘লাল’ পদটি অস্বীকার করা হয়েছে।

‘কোনো কোনো’ শব্দের যুক্তিশাস্ত্রসম্মত অর্থ ব্যাখ্যা করো।

একটি নিরপেক্ষ বচন সামান্য না বিশেষ, তা নির্ভর করে বচনটির উদ্দেশ্য পদের পরিমাণের উপর। যদি কোনো বচনের উদ্দেশ্য পদের সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থ বা বাচ্যার্থকে গ্রহণ করা হয় তবে বচনটি সামান্য হবে। অপরপক্ষে, যদি বচনটির উদ্দেশ্য পদের আংশিক বাচ্যার্থ (Denotation) গ্রহণ করা হয়, তাহলে বচনটি হবে বিশেষ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যুক্তিবিজ্ঞানে ‘কোনো কোনো’ (Some) কথার অর্থ হল ‘অন্তত এক’ (at least one)। যুক্তিবিজ্ঞানে আমরা যখন বলি ‘কোনো কোনো মানুষ হয় জ্ঞানী’, তখন এর দ্বারা অনির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে জ্ঞানী বলে মনে করি। যেমন ধরা যাক, কোনো শ্রেণির ১০০ জন ছাত্রের মধ্যে ৯৯ জন ছাত্রই বুদ্ধিমান- এক্ষেত্রে যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত অর্থ অনুসারে বচনটি হবে ‘কোনো কোনো ছাত্র হয় বুদ্ধিমান’। আবার ১০০ জন ছাত্রের মধ্যে যদি অন্তত ১ জন ছাত্রও বুদ্ধিমান হয় তাহলে সেক্ষেত্রেও বচনটি হবে, ‘কোনো কোনো ছাত্র হয় বুদ্ধিমান’। অর্থাৎ শতকরা ৯৯ জনই হোক বা ১ জনই হোক যুক্তিবিজ্ঞানে তাকে প্রকাশ করার জন্য কোনো কোনো শব্দকে পরিমাণক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাজেই যুক্তিবিজ্ঞানে ‘কোনো কোনো’ শব্দের অর্থ হল অন্তত একজন (at least one) I

বিশিষ্ট বচন কী? সংক্ষেপে আলোচনা করো।

কোনো বচনের উদ্দেশ্য পদ যখন একটি বিশিষ্ট পদ হয় অর্থাৎ যা কোনো নির্দিষ্ট একটি ব্যক্তি বা বস্তুকে নির্দেশ করে তাকে বলে বিশিষ্ট বচন (Singular Propositon)। বিশিষ্ট বচনের তিনটি অংশ থাকে- উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয়। এই জাতীয় বচনের উদ্দেশ্য পদটি কোনো ব্যক্তি নাম, সর্বনাম বা নির্দিষ্ট পদ বা নামবাচক পদ হয়। যেমন- ‘প্লেটো হন একজন গ্রিক দার্শনিক’, ‘আমাজন নদী নয় ভারতের অন্তর্ভুক্ত’ ইত্যাদি।

অ্যারিস্টটলীয় যুক্তিবিজ্ঞানে বিশিষ্ট বচনকে শ্রেণি বিষয়ক বচন বলে উল্লেখ করা হয়। এই মতানুসারে কোনো শ্রেণির অন্তর্গত বিষয়রূপে অনেক সদস্য থাকে না, একজন মাত্র সদস্য থাকে। এই কারণে যুক্তিবিজ্ঞানীরা ব্যক্তিনামকে একসদস্যবিশিষ্ট শ্রেণির নাম বলে গণ্য করেন। বিশিষ্ট বচনে উদ্দেশ্য পদ যে শ্রেণিকে বোঝায়, সেই বচনে সেই শ্রেণি বা ব্যক্তিটি সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়। তাই অ্যারিস্টটলীয় যুক্তিবিজ্ঞানে বিশিষ্ট বচনকে সার্বিক বচন হিসেবে গণ্য করা হয়।

সম্বন্ধ অনুসারে বচন কয় প্রকার? উদাহরণ-সহ আলোচনা করো।

সম্বন্ধ অনুসারে বচনের বিভাগ: সম্বন্ধ অনুসারে বচন দুই প্রকার। যথা- নিরপেক্ষ বা অনপেক্ষ বচন (Categorical Proposition) এবং অ-নিরপেক্ষ বা সাপেক্ষ বচন (Non- Categorical or Conditional Proposition)।

নিরপেক্ষ বচন: যে বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্বন্ধ অন্য কোনো শর্তের উপর নির্ভর করে না তাকে নিরপেক্ষ বচন বলে। শর্তের উপর নির্ভরশীল নয় বলে এই বচনকে শর্তহীন (Unconditional) বচন বলা হয়।

যেমন-‘সকল শিশু হয় সরল’, ‘কোনো মানুষ নয় দেবতা’ -উভয় বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্বন্ধ শর্ত ছাড়াই স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়েছে।

সাপেক্ষ বচন: যে বচনের ক্ষেত্রে বিধেয়টি অন্য কোনো শর্তের উপর নির্ভরশীল হয়ে উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোনো কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করে তাকে বলে সাপেক্ষ বচন। শর্তের উপর নির্ভরশীল বলে এই বচনকে শর্তযুক্ত বা শর্ত সাপেক্ষ (Conditional) বচনও বলে।

যেমন- ‘যদি বৃষ্টি হয় তাহলে মাটি ভেজে’। – সাপেক্ষ বচন (প্রাকল্পিক)। ‘হয় সে আসবে অথবা তার বন্ধু আসবে’- সাপেক্ষ বচন (বৈকল্পিক)। উভয় বচনেই দুটি অংশের সম্বন্ধ শর্তের উপর নির্ভরশীল বলে বচনগুলিকে শর্ত-সাপেক্ষ বচন বলে।

সাপেক্ষ বচন বা অ-নিরপেক্ষ বচন কয় প্রকার? তাদের সংজ্ঞা-সহ উদাহরণ দাও।

সাপেক্ষ বচনের প্রকারভেদ: সাপেক্ষ (Conditional) বচন দুই প্রকার। যথা • প্রাকল্পিক (Hypothetical) বচন এবং বৈকল্পিক (Disjunctive) বচন।

প্রাকল্পিক বচন: যে সাপেক্ষ বচনে ‘যদি-তবে’ (If-then) বা অনুরূপ কোনো শব্দের দ্বারা শর্তটি প্রকাশিত হয়, তাকে প্রাকল্পিক বচন বলে।

প্রতিটি প্রাকল্পিক বচনের দুটি অংশ থাকে- পূর্বগ এবং অনুগ। যে অংশে শর্ত থাকে তাকে পূর্বগ বলে এবং যে অংশে মূল বক্তব্যটি থাকে তাকে অনুগ বলে।

বৈকল্পিক বচন: যে সাপেক্ষ বচনে শর্তটি ‘হয়-অথবা’ শব্দ দ্বারা প্রকাশিত হয়। অর্থাৎ দুটি বক্তব্য এমনভাবে যুক্ত থাকে যার একটিকে অপরের বিকল্প (Alternative) হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তাকে বৈকল্পিক বচন বলে। এক্ষেত্রে ‘হয়-অথবা’, ‘হয়-না হয়’ প্রভৃতি শব্দ দ্বারা শর্ত প্রকাশ পায়।

বৈকল্পিক বচনের দুটি অংশ থাকে। যথা- প্রথম বিকল্প ও দ্বিতীয় বিকল্প।

প্রাকল্পিক বচনের গুণ ও পরিমাণ কীভাবে নির্ধারিত হয়? উদাহরণ-সহ লেখো।

প্রাকল্লিক বচনের গুণ নির্ধারণ: একটি প্রাকল্পিক বচন গুণের দিক থেকে সদর্থক ও নঞর্থক দুই-ই হতে পারে। প্রাকল্পিক বচনের গুণ নির্ভর করে বচনটির অনুগর গুণের উপর। অনুগটি যদি সদর্থক হয় তবে প্রাকল্পিক বচনটি সদর্থক হবে, আর অনুগটি যদি নঞর্থক হয় তবে প্রাকল্পিক বচনটি নঞর্থক হবে।

উদাহরণ

• যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমি বাড়ি যাব। – সদর্থক প্রাকল্পিক বচন

• যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমি বাড়ি যাব না।– নঞর্থক প্রাকল্পিক বচন

প্রাকল্পিক বচনের পরিমাণ নির্ধারণ: প্রাকল্পিক বচনের পরিমাণ নির্ভর করে অনুগটি যেভাবে পূর্বগকে অনুসরণ করে তার উপর। অনুগটি যদি সবসময়েই পূর্বগকে অনুসরণ করে, তবে প্রাকল্পিক বচনটি হয় সামান্য বা সার্বিক। অপরপক্ষে, যদি অনুগটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্বগকে অনুসরণ করে তবে প্রাকল্পিক বচনটি বিশেষ হবে।

উদাহরণ

• যদি সূর্য ওঠে তবে অন্ধকার দূর হবে।

• যদি মেঘ করে তাহলে বৃষ্টি হবে।

প্রথমটি সামান্য প্রাকল্পিক বচন। কারণ অনুগ ‘অন্ধকার দূর হবে’ সর্বদাই পূর্বগ ‘সূর্য ওঠে’-কে অনুসরণ করে। আর দ্বিতীয়টি বিশেষ প্রাকল্পিক বচন। কারণ এক্ষেত্রে ‘বৃষ্টি হওয়া’- এই অনুগটি সর্বদা ‘মেঘ করা’-কে অনুসরণ করে না, এমন ক্ষেত্র থাকতেই পারে যখন মেঘ করেছে অথচ বৃষ্টি হয়নি।

বৈকল্পিক বচনের গুণ ও পরিমাণ কীভাবে নির্ধারিত হয় ? উদাহরণ-সহ লেখো।

বৈকল্পিক বচনের গুণ নির্ধারণ: বৈকল্পিক বচন গুণের দিক থেকে সর্বদাই সদর্থক হয়, কখনও নঞর্থক হতে পারে না। যেমন- সে চোরও নয়, সে ডাকাতও নয়- এটি বৈকল্পিক বচন নয়, কারণ এটি দুটি নঞর্থক বচনের যোগফল। সুতরাং বৈকল্পিক বচনের রূপ হল- হয় সে চোর অথবা সে ডাকাত।

বৈকল্পিক বচনের পরিমাণ নির্ধারণ: পরিমাণের দিক থেকে বৈকল্পিক বচন সামান্য ও বিশেষ দুই-ই হতে পারে।

• বৈকল্পিক বচনের বিকল্প দুটির উদ্দেশ্য যদি এক হয় এবং উদ্দেশ্যের আগে যদি ‘সকল’ থাকে, তাহলে সেটি সার্বিক বচন হবে।

যেমন- সকল ছাত্র হয় সৎ কিংবা অসৎ-সামান্য বৈকল্পিক বচন।

• বৈকল্পিক বচনের বিকল্প দুটির উদ্দেশ্য যদি এক হয় এবং উদ্দেশ্যের আগে যদি ‘কোনো কোনো’ থাকে, তাহলে বৈকল্পিক বচনটির পরমিাণ বিশেষ হবে।

যেমন- কোনো কোনো মানুষ হয় সাধু অথবা অসাধু – বিশেষ বৈকল্পিক বচন।

গঠন অনুসারে বচন কয় প্রকার? সংজ্ঞা-সহ উদাহরণ দাও।

গঠন অনুসারে বচনের প্রকারভেদ: গঠন অনুসারে বচন দুই প্রকার। যথা- সরল বা অযৌগিক বচন (Simple Proposition) এবং যৌগিক বচন (Compound Proposition) I

উদাহরণ

• সকল খেলোয়াড় হয় পরিশ্রমী। – সরল বচন

• রাম এবং হরি দুজনেই একাদশ শ্রেণির ছাত্র। – যৌগিক বচন

আযৗগিক বচন : যে বচনের একটি মাত্র বক্তব্য বিষয় থাকে, অর্থাৎ যে বচনের অন্তর্গত অংশগুলি স্বতন্ত্রভাবে বচন হিসেবে গণ্য হতে পারে না, তাকে সরল বচন বা অযৌগিক বচন বা আণবিক বচন বলে। সরল বচনের একটি মাত্র উদ্দেশ্য পদ ও একটি মাত্র বিধেয় পদ থাকে।

যেমন- সকল ধার্মিক হয় উদার।

যৌগিক বচন : যে বচন একাধিক সরল বচন দ্বারা যুক্ত হয়ে গঠিত হয়, এবং যার একাধিক বক্তব্য বিষয় থাকে, তাকে যৌগিক বচন বা অসরল বচন বলে। যৌগিক বচনের অন্তর্গত এক বা একাধিক অংশগুলি স্বতন্ত্রভাবে বচন হিসেবে গণ্য হতে পারে।

যেমন- সানিয়া নৃত্য করবে অথবা গান করবে।

পরিশেষে বলা যায়, যৌগিক বচনমাত্রই সাপেক্ষ বচন এবং অযৌগিক বচন মাত্রই নিরপেক্ষ বচন।

যৌগিক বচন কয় প্রকার ও কী কী? উদাহরণ-সহ সংজ্ঞা দাও।

যৌগিক বচনের প্রকারভেদ: যৌগিক বচন পাঁচ প্রকারের হতে পারে। সেগুলি হল-

প্রাকল্পিক বচন: যে যৌগিক বচনের অন্তর্গত সরল বচনগুলি ‘যদি-তবে’ এইরূপ শব্দের দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে বলে প্রাকল্পিক বচন। যেমন- যদি মেঘ করে তবে বৃষ্টি হবে। প্রাকল্পিক বচনের আকারটি হল: যদি p তবে q।

বৈকল্পিক বচন: যে যৌগিক বচনের অন্তর্গত বচনগুলি ‘অথবা’ শব্দের দ্বারা যুক্ত হয়, তাকে বৈকল্পিক বচন বলে। বৈকল্পিক বচনের অঙ্গবাক্যগুলিকে বলা হয় বিকল্প। যেমন- হয় চার্বাকরা জড়বাদী অথবা ভাববাদী। বৈকল্পিক বচনের আকারটি হল: হয় p অথবা q।

নিষেধক বচল : ‘নয়’, ‘এমন নয় যে’ প্রভৃতি সংযোজক দিয়ে যে যৌগিক বচন গঠিত হয়, তাকে নিষেধক বচন বলে। যেমন- এমন নয় যে, রাম অসৎ। নিষেধক বচনের আকারটি হল: এমন নয় যে, p।

সংযৌগিক বচন : যে যৌগিক বচনের অন্তর্গত সরল বচনগুলি ‘এবং’, ‘ও’, ‘আর’ প্রভৃতি সংযোজক দ্বারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাকে সংযৌগিক বচন বলে। যেমন- যদু আসবে এবং মধু আসবে। সংযৌগিক বচনের আকারটি হল: p এবং q।

দ্বি-প্রাকল্পিক বচন: যে যৌগিক বচনের অন্তর্গত সরল বচনগুলি ‘যদি এবং কেবল যদি’ শব্দের দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে বলে দ্বি-প্রাকল্পিক বচন। যেমন- এটি জিরাফ যদি এবং কেবল যদি এটি লম্বা গলাযুক্ত প্রাণী হয়। দ্বি-প্রাকল্পিক বচনের আকারটি হল: p যদি এবং কেবল যদি q।

নিশ্চয়তা অনুসারে নিরপেক্ষ বচনসমূহের বিভাজন করো। তাদের সংজ্ঞা-সহ উদাহরণ দাও।

নিশ্চয়তা অনুসারে বচনের প্রকারভেদ: নিশ্চয়তা অনুসারে, নিরপেক্ষ বচনসমূহকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- অনিবার্য বচন (Necessary Proposition), ঘোষক বাচক বা বিবরণিক বচন (Assertive Proposition) ও সম্ভাব্য বচন (Problematic Proposition) I

অনিবার্য বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সম্বন্ধটি অনিবার্যভাবে সত্য হয় এবং যে সম্বন্ধের কোনো ব্যতিক্রম সম্ভব নয়, তাকে অনিবার্য বচন বলে। যেমন- ‘৭+৫=১২’, ‘ত্রিভুজ হল তিনটি বাহুবিশিষ্ট সামতলিক ক্ষেত্র’ ইত্যাদি। সাধারণত গাণিতিক ও জ্যামিতিক বচনসমূহ অনিবার্য বচনের অন্তর্গত।

ঘোষক বাচক বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য পদ এবং বিধেয় পদের সম্বন্ধটি অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল হয় এবং অভিজ্ঞতাভিত্তিক কোনো সম্বন্ধ স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়, তাকে ঘোষক বাচক বা বিবরণিক বচন বলে। যেমন ‘সকল রাজহাঁস হয় সাদা’, ‘কাক হয় কালো’ ইত্যাদি।

সম্ভাব্য বচন: যে নিরপেক্ষ বচন তাতে স্থিত উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদের মধ্যে কোনো নিশ্চিত বা অনিবার্য সত্য সম্বন্ধ স্বীকার বা অস্বীকার করে না, শুধু সম্ভাবনাকে প্রকাশ করে, তা সম্ভাব্য বচন নামে পরিচিত। যেমন- ‘রাম হয়তো কবিতা লিখতে পারে’, ‘আগামীকাল রোহন হয়তো স্কুলে যেতে পারে’ ইত্যাদি।

তাৎপর্য অনুসারে বচন কয় প্রকার? সংজ্ঞা-সহ উদাহরণ দাও।

তাৎপর্য অনুসারে বচনের প্রকারভেদ: তাৎপর্য অনুসারে বচনকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- বিশ্লেষক বচন (Analytic Proposition) এবং সংশ্লেষক বচন (Synthetic Proposition) I

বিশ্লেষক বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য পদটিকে বিশ্লেষণ করলে বিধেয় পদের ধারণা পাওয়া যায়, তাকে বলে বিশ্লেষক বচন। যেমন- ‘৭+৫=১২’, ‘সকল সাদা বক হয় সাদা’ ইত্যাদি। বিশ্লেষক বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে নতুন তথ্য দেয় না।

সংশ্লেষক বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য পদটিকে বিশ্লেষণ করলে বিধেয় পদের ধারণা পাওয়া যায় না, এবং বিধেয়টি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে নতুন তথ্য দেয়, তাকে সংশ্লেষক বচন বলে। যেমন-‘সকল ছাত্র হয় মেধাবী’, ‘কোনো কোনো ফুল হয় লাল’ ইত্যাদি। এখানে ‘মেধাবী’ বা ‘লাল’ পদটি যথাক্রমে ‘ছাত্র’ ও ‘ফুল’ পদটিকে বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় না।

পদের ব্যাপ্যতা বলতে কী বোঝো? বিভিন্ন নিরপেক্ষ বচনগুলিতে কোন্ পদ ব্যাপ্য ও অব্যাপ্য হয়?

পদের ব্যাপ্যতা: একটি বচনের দুটি পদ থাকে উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ। নিরপেক্ষ বচনের কোনো পদ যখন তার পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থকে প্রকাশ করে অর্থাৎ সেই পদটির দ্বারা নির্দেশিত সকল বস্তু বা ব্যক্তিকে বোঝায় তখন সেই পদটি সেই বচনে ব্যাপ্য (Distributed) হয়। আর নিরপেক্ষ বচনের কোনো পদ যখন আংশিক ব্যক্ত্যর্থকে প্রকাশ করে অর্থাৎ সেই পদটির দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণির একাংশকে বোঝায়, তখন সেই পদটি অব্যাপ্য (Undistributed) হয়। সুতরাং উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের ব্যাপ্য ধর্ম ও অব্যাপ্য ধর্মকে বলা হয় পদের ব্যাপ্যতা (Distribution of Terms) I

সামান্য সদর্থক (A) বচন উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য ও বিধেয় পদ অব্যাপ্য।

সামান্য নঞর্থক (E) বচন– উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদ ব্যাপ্য।

বিশেষ সদর্থক (I) বচন– কোনো পদকেই ব্যাপ্য করে না। অর্থাৎ উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই অব্যাপ্য।

বিশেষ নঞর্থক (O) বচন উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য ও বিধেয় পদ ব্যাপ্য।

পদের ব্যক্ত্যর্থ ও জাত্যর্থ কাকে বলে?

পদের ব্যক্ত্যর্থ: একটি নিরপেক্ষ বচনের কোনো পদের দ্বারা যে অর্থকে প্রকাশ করা হয়, তাকে বলা হয় ব্যক্ত্যর্থ বা বাচ্যার্থ (Denotation) I

যেমন – ‘মানুষ’ পদটির ব্যক্ত্যর্থ হল রমা, শ্যামা, শ্যামল, যদু, রহিম, শচীন ইত্যাদি সকল মানুষ, যাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের সাধারণ ধর্মটি আছে। এটি যেমন বর্তমান কালের সকল মানুষকে বোঝায় ঠিক তেমনই অতীত এবং ভবিষ্যতের সকল মানুষকেও অন্তর্ভুক্ত করে।

পদের জাত্যর্থ: পদের জাত্যর্থ হল সেই পদের সামান্য ও অসাধারণ ধর্ম। কোনো পদের জাত্যর্থ (Connotation of term) বলতে বোঝায় সেই অপরিহার্য ধর্মকে যার দ্বারা সেই বিশেষ বস্তুকে সেই পদের (নামের) দ্বারা অভিহিত করা হয়।

যেমন-‘মানুষ’ এর অপরিহার্য ধর্ম জীববৃত্তি ও বুদ্ধি বৃত্তি। কাজেই ‘মানুষ’ পদের জাত্যর্থ হল জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি। যারা জীববৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি নামক গুণ দুটির অধিকারী নয়, তারা মানুষ হতে পারে না। পদের জাত্যর্থ তার গুণের দিকটিকে প্রকাশ করে।

ব্যাপ্য পদ ও অব্যাপ্য পদ কাকে বলে?

ব্যাপ্য পদ: একটি নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য পদ বা বিধেয় পদের সমগ্র ব্যক্ত্যর্থকে যদি গ্রহণ করা হয় বা বর্জন করা হয়, তবে সেই পদকে বলা হয় ব্যাপ্য পদ।

যেমন- সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)। এখানে উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ ব্যাপ্য। কেন-না এখানে সকল মানুষ সম্পর্কে অর্থাৎ ‘মানুষ’ শ্রেণির সকল সদস্য সম্পর্কে ‘মরণশীল’ পদটিকে স্বীকার করা হয়েছে।

অব্যাপ্য পদ: একটি নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য বা বিধেয় পদের আংশিক ব্যক্ত্যর্থকে যদি গ্রহণ বা বর্জন করা হয়, তবে সেই পদকে অব্যাপ্য পদ বলে।

যেমন- কোনো কোনো মানুষ হয় সৎ (Ⅰ)। এখানে উদ্দেশ্য পদ মানুষ অব্যাপ্য পদ। কেন-না এখানে ‘মানুষ’ শ্রেণির সকল সদস্য সম্পর্কে ‘সৎ’ পদটি স্বীকার করা হয়নি, আংশিক সদস্য সম্পর্কে স্বীকার করা হয়েছে।

সামান্য সদর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়মটি আলোচনা করো।

সামান্য সদর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম হল- এই বচনের উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য হয় এবং বিধেয় পদ অব্যাপ্য হয়। যেমন-

সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব (A)।

এটি একটি সামান্য সদর্থক বচন বা A বচন। এই বচনে ‘মানুষ’ হল উদ্দেশ্য পদ এবং ‘মরণশীল জীব’ হল বিধেয় পদ। এখানে ‘মানুষ’ পদটি ব্যাপ্য। কারণ এক্ষেত্রে ‘মানুষ’ পদের পূর্বে ‘সকল’ শব্দ ব্যবহার হয়েছে। এই পদটি দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণির অন্তর্গত সকল সদস্যের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ পদটির সমগ্র ব্যক্ত্যর্থকে গ্রহণ করা হয়েছে।

আবার ‘মরণশীল জীব’ পদটির সম্পূর্ণ ব্যক্ত্যর্থকে গ্রহণ করা হয়নি। কারণ ‘মরণশীল জীব’ বলতে ‘মানুষ’ ছাড়াও অন্যান্য জীব (যেমন- কুকুর, বিড়াল, গোরু, মহিষ প্রভৃতি)-কে বোঝায়। মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীরাও মরণশীল জাতির অন্তর্গত। তাদের কথা এখানে বলা হয়নি। বস্তুত, ‘মানুষ’ হল মরণশীল প্রাণীদের একটি বিশেষ অংশ। সুতরাং ‘মরণশীল জীব’ পদটি ব্যাপ্য নয়। এর থেকে সিদ্ধান্ত করা যেতে পারে যে, এ বচনে উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য, বিধেয় পদ অব্যাপ্য।

A বচনের ব্যাপ্যতার ব্যতিক্রমী নিয়মগুলি দৃষ্টান্ত-সহ লেখো।

A বচনের ব্যাপ্যতার ব্যতিক্রমী নিয়ম: যেসব ক্ষেত্রে A বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয়র ব্যক্ত্যর্থ সমান হয়, সেসব ক্ষেত্রে A বচনের উদ্দেশ্য এবং বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য হতে পারে। যেমন-

সংজ্ঞাবাচক পদ: সংজ্ঞাবাচক পদের ক্ষেত্রে A বচনের উভয় পদ ব্যাপ্য হয়। যেমন- সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব (A)।

ব্যাখ্যা: এক্ষেত্রে মানুষ বলতে আমরা যা বুঝি, বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব বলতেও তাই বুঝি। এই দুটি পদের ব্যক্ত্যর্থ সমান। এখানে উদ্দেশ্য পদটির সংজ্ঞা থেকেই বিধেয় পদটি নিঃসৃত হয়েছে। তাই বচনটিতে ‘মানুষ’ (উদ্দেশ্য) এবং ‘বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন জীব’ (বিধেয়) -উভয় পদই ব্যাপ্য হবে।

বিশিষ্ট নামবাচক পদ: বিশিষ্ট নামবাচক পদের ক্ষেত্রে A বচনের উভয় পদ ব্যাপ্য হয়।

যেমন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হন গীতাঞ্জলির রচয়িতা (A)।

ব্যাখ্যা: এক্ষেত্রে আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলতে যা বুঝি, গীতাঞ্জলির রচয়িতা বলতেও তাই বুঝি। অর্থাৎ এই দুটি পদের ব্যক্ত্যর্থ সমান। এখানে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ দুটি হল সমার্থক পদ। তাই বচনটিতে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ (উদ্দেশ্য) এবং ‘গীতাঞ্জলির রচয়িতা’ (বিধেয়)-উভয় পদই ব্যাপ্য হবে।

পুনরুক্তিমূলক বচন: যেসব ক্ষেত্রে A বচনের বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদের পুনরুক্তি, সেসব ক্ষেত্রে A বচনের উভয় পদ ব্যাপ্য হয়।

যেমন- সকল হস্তী হয় মাতঙ্গ (A)।

ব্যাখ্যা: এক্ষেত্রে আমরা হস্তী বলতে যা বুঝি, মাতঙ্গ বলতেও তাই বুঝি। অর্থাৎ ‘হস্তী’ এবং ‘মাতঙ্গ’ হল সমার্থক পদ বা প্রতিশব্দ। তাই বচনটিতে হস্তী (উদ্দেশ্য) এবং মাতঙ্গ (বিধেয়) উভয় পদই ব্যাপ্য হবে।

সামান্য নঞর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম আলোচনা করো।

সামান্য নঞর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম হল- এই বচনের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ উভয়ই ব্যাপ্য হয়।

যেমন- কোনো মানুষ নয় পূর্ণ জীব (E)।

এটি একটি সামান্য নঞর্থক বচন বা E বচন। এই বচনের উদ্দেশ্য অর্থাৎ ‘মানুষ’ পদটি ব্যাপ্য। কারণ এখানে ‘পূর্ণতা’ গুণটি সকল মানুষ, অর্থাৎ মানুষ জাতির অন্তর্গত সকল সদস্য সম্পর্কে অস্বীকার করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ জাতির অন্তর্গত প্রত্যেক সদস্য বিধেয় পদ ‘পূর্ণতা’ নামক গুণ শ্রেণি থেকে সম্পূর্ণরূপে বহিষ্কৃত।

আবার এই বচনের বিধেয় অর্থাৎ ‘পূর্ণ’ পদটিও ব্যাপ্য। কারণ এই পদটিরও সমগ্র ব্যক্ত্যর্থকে গ্রহণ করা হয়েছে। ‘কোনো মানুষ নয় পূর্ণ জীব’ এই বচনটির প্রকৃত অর্থ হল ‘সমস্ত মানুষ’ এবং ‘সমস্ত পূর্ণ বস্তু’- এদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে বলা হয়েছে, বিধেয় পদ ‘পূর্ণতা’ শ্রেণির অন্তর্গত সকল উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’ জাতির থেকে সম্পূর্ণরূপে বহিষ্কৃত। কাজেই ‘মানুষ’ এবং ‘পূর্ণ জীব’- দুটি পদের সমগ্র ব্যক্ত্যর্থকেই গ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং E বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য।

বিশেষ সদর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম আলোচনা করো।

বিশেষ সদর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম হল- এই বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই অব্যাপ্য হয়।

যেমন- কোনো কোনো মানুষ হয় সৎ ব্যক্তি (Ⅰ)। এটি একটি বিশেষ সদর্থক বচন বা। বচন। এই বচনের উদ্দেশ্য অর্থাৎ

‘মানুষ’ পদটি অব্যাপ্য। কারণ এখানে ‘সততা’ গুণটি কোনো কোনো মানুষ সম্পর্কে স্বীকার করা হয়েছে। ‘কোনো কোনো’ কথার অর্থ হল অন্ততপক্ষে একজন। তাহলে এই বচনটির অর্থ হল মানুষ জাতির মধ্যে অন্ততপক্ষে একজন সদস্য আছে যে সৎ জাতির অন্তর্গত। কাজেই এখানে ‘মানুষ’ পদটির সমগ্র ব্যক্ত্যর্থ গ্রহণ না করে ‘আংশিক ব্যক্ত্যর্থ’ গ্রহণ করা হয়েছে।

আবার এই বচনের বিধেয় অর্থাৎ ‘সৎ ব্যক্তি’ পদটিও অব্যাপ্য। কারণ ‘সৎ ব্যক্তি’ পদটির সমগ্র ব্যক্ত্যর্থ গ্রহণ করা হয়নি। এখানে সৎ ব্যক্তির যে বাচ্যার্থ তার একাংশকে গ্রহণ করা হয়েছে, যে অংশটি ‘মানুষ’ উদ্দেশ্য পদের সঙ্গে যুক্ত। অর্থাৎ বিধেয়পদে প্রত্যেক ‘সৎ ব্যক্তি’ সম্পর্কে কোনো কথা বলা হয়নি। সুতরাং । বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই অব্যাপ্য।

বিশেষ নঞর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম আলোচনা করো।

বিশেষ নঞর্থক বচনের ব্যাপ্যতার নিয়ম হল- এই বচনের উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য হয় এবং বিধেয় পদ ব্যাপ্য হয়।

যেমন- কোনো কোনো মানুষ নয় সৎ ব্যাক্তি- এটি একটি বিশেষ নঞর্থক বচন বা ০ বচন। এই বচনের উদ্দেশ্য অর্থাৎ ‘মানুষ’ পদটি ব্যাপ্য নয়। কারণ এখানে ‘সততা’ গুণটি কোনো কোনো মানুষ সম্পর্কে অস্বীকার করা হয়েছে। ফলে ‘মানুষ’ পদের সমগ্র ব্যক্ত্যর্থ গ্রহণ করা হয়নি। এখানে বলা হয়েছে মানুষ জাতির অন্তর্গত অন্ততপক্ষে একজন সদস্য সৎ জাতি থেকে বহিষ্কৃত। ফলে, মানুষ পদের ব্যক্ত্যর্থের একটি নির্দিষ্ট অংশ সম্পর্কে কথা বলায় উদ্দেশ্য ‘মানুষ’ পদ এখানে অব্যাপ্য।

আলোচ্য বচনের বিধেয় অর্থাৎ ‘সৎ ব্যক্তি’ পদটি ব্যাপ্য। কারণ কোনো কোনো মানুষ সম্পর্কে ‘সততা’ গুণের সবটুকুই অস্বীকার করা হয়েছে। সে বা তারা সৎ জাতি থেকে সম্পূর্ণরূপে বহিষ্কৃত- এ কথাই এই বচনে বলা হয়েছে। ফলে ‘সৎ ব্যক্তি’ পদটির সমগ্র ব্যক্ত্যর্থকে গ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং Ⅰ বচনে উদ্দেশ্য পদ অব্যাপ্য কিন্তু বিধেয় পদ ব্যাপ্য।

বৈধতা ও সত্যতা কাকে বলে?

বৈধতা: বৈধতা (Validity) হল যুক্তি বা যুক্তির আকারের ধর্ম। কেন-না যুক্তি বৈধ বা অবৈধ হতে পারে। যুক্তির বৈধতা বলতে বোঝায়, যুক্তির অন্তর্গত হেতুবাক্য থেকে সিদ্ধান্তের অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হওয়া। তাই বৈধতা বা অবৈধতা যুক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়, যুক্তির অন্তর্গত বচনের ক্ষেত্রে নয়।

যুক্তির সিদ্ধান্ত হেতুবাক্য থেকে বৈধ যুক্তির নিয়ম মেনে নিঃসৃত হলে যুক্তি বৈধ হবে, আর নিয়ম না মেনে নিঃসৃত হলে যুক্তি অবৈধ হবে।

সত্যতা: সত্যতা (Truth) বচনের ধর্ম। কেন-না বচনই সত্য অথবা মিথ্যা হতে পারে। সত্যতা বলতে বচনের বাস্তব আনুগত্যকে বোঝায়। একটি বচন তখনই সত্য হবে যদি সেই বচনে প্রকাশিত বিষয়ের সঙ্গে বাস্তবের মিল থাকে।

যেমন- ‘দিল্লী হয় ভারতের রাজধানী’, এই বচনটি সত্য। কেন-না এর বক্তব্য বাস্তব অনুযায়ী হয়েছে। কিন্তু ‘দিল্লী হয় বাংলাদেশের রাজধানী’- এই বচনটি মিথ্যা। কারণ বচনের বিষয় বাস্তব অনুযায়ী হয়নি।

বৈধ যুক্তি বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও। বৈধ যুক্তির আকার কী?

বৈধ যুক্তি: বৈধ যুক্তি বলতে বোঝায় সেই যুক্তিকে যার সিদ্ধান্তটি যুক্তি পদ্ধতির নিয়ম অনুসরণ করে হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়।

উদাহরণ

কোনো মন্ত্রী নয় পুরুষ (E)। মিথ্যা

সকল স্ত্রীলোক হয় মন্ত্রী (A)। মিথ্যা

অতএব কোনো স্ত্রীলোক নয় পুরুষ (E)। – সত্য

এক্ষেত্রে যুক্তিটিতে হেতুবাক্য মিথ্যা কিন্তু সিদ্ধান্ত সত্য হওয়া সত্ত্বেও যুক্তিটি বৈধ। কেন-না সিদ্ধান্তটি যুক্তি পদ্ধতির নিয়ম অনুসরণ করে আশ্রয়বাক্য থেকে নিঃসৃত হয়েছে।

বৈধ যুক্তির আকার: বৈধ যুক্তির আকার বলতে বোঝায় সেই আকারের অন্তর্গত সব যুক্তিই বৈধ।

সকল M হয় P

সকল S হয় M

অতএব সকল S হয় P

বৈধ যুক্তির লক্ষণগুলি কী কী?

বৈধ যুক্তির লক্ষণগুলি নিম্নরূপ-

• বৈধ যুক্তির হেতুবাক্য থেকে সিদ্ধান্ত অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হবে।

• বৈধ যুক্তির ভিত্তি হল আকারগত প্রসক্তি সম্বন্ধ (Relation of Formal Implication) I

• কোন্ যুক্তি বৈধ বা তার হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রসক্তি সম্বন্ধ আছে তা জানার উপায় হল বৈধ যুক্তির যুক্তি পদ্ধতিগুলিকে জানা।

• বৈধ যুক্তির হেতুবাক্যের বস্তুগত সত্যতা থাকলে সিদ্ধান্তটির বস্তুগত সত্যতা থাকে।

• কোনো অবরোহ যুক্তি বৈধ হলে ঐ আকারের অন্য অবরোহ যুক্তিগুলিও বৈধ হয়।

বচনের সত্যতা কত প্রকার ও কী কী? সংক্ষেপে আলোচনা করো।

বচনের সত্যতার প্রমাণ: বচনের সত্যতা দুই প্রকার আকারগত সত্যতা (Formal Truth) এবং বস্তুগত সত্যতা (Material Truth) I

আকারগত সত্যতা: যে বচনের সত্যতা অভিজ্ঞতাভিত্তিক, যাচাইযোগ্য নয়, অর্থাৎ বচনটির বাইরে গিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না, কেবল বচনটির আকার দেখেই সত্যতা যাচাই করা যায়, তাকে বলা হয় আকারগত সত্য বচন।

যেমন ‘টেবিলটি হয় চতুষ্কোণ’- বচনটি আকারগতভাবে সত্য, কিন্তু ‘বৃত্তটি হয় চতুষ্কোণ’- বচনটি আকারগতভাবে মিথ্যা, কেন-না এটির উদ্দেশ্য ও বিধেয় পরস্পর বিরোধী।

বস্তুগত সত্যতা : যে বচনের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব জগতের মিল থাকে, তাকে বস্তুগতভাবে সত্য বচন বলা হয়। আর যদি বচনের বক্তব্য বাস্তবের সঙ্গে মিল না থাকে তাহলে বচনটি বস্তুগতভাবে মিথ্যা হয়।

যেমন- ‘বরফ হয় সাদা’- এই বচনটি বস্তুগতভাবে সত্য, কিন্তু ‘বরফ হয় কালো’- বচনটি বস্তুগতভাবে মিথ্যা।

যুক্তির সত্যতার লক্ষণ কী?

বচনের ক্ষেত্রে ‘সত্যতা’ ও ‘মিথ্যাত্ব’ শব্দ দুটি ব্যবহৃত হয়। কোনো বচনের সত্যতা আছে বলতে আমরা বুঝি বচনটি বস্তুগত দিক থেকে সত্য। যেমন-‘ঘাস হয় সবুজ’-এই বচনটি সত্য। কারণ বচনটিতে যা বর্ণনা করা হয়েছে, সেইরূপ বিষয় বাস্তবে আছে।

আবার এমন কিছু বচন আছে যেগুলি ভাষার গঠনগত অর্থে অথবা আকারগত অর্থে সত্য। যেমন- ‘মামা হয় মায়ের ভাই।’

প্রশ্ন হল, আমরা একটি যুক্তির সিদ্ধান্তকে কখন সত্য হিসেবে পাই? একটি যুক্তির সিদ্ধান্ত তখনই সত্য হয় যখন যুক্তিটি ঐ যুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় বৈধতার নিয়মগুলি যথাযথ অনুসরণ করে সিদ্ধান্তটি নিঃসৃত করে এবং যুক্তিটির আশ্রয়বাক্যে যে বচন বা বচনগুলি ব্যবহৃত হয়েছে তার বস্তুগত সত্যতা থাকে। তবে বৈধ যুক্তির আশ্রয়বাক্য মিথ্যা হলেও সিদ্ধান্ত সত্য হতে পারে।

সত্যতা ও বৈধতার মধ্যে পার্থক্য কী? বৈধ যুক্তির সিদ্ধান্ত মিথ্যা হতে পারে-এ কথার অর্থ কী?

সত্যতা ও বৈধতার পার্থক্য: সত্যতা ও বৈধতার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হল-

• সত্যতা বচনের গুণ, আর বৈধতা হল যুক্তির গুণ বা ধর্ম।

• সত্যতা হল বাস্তবানুগত, অপরদিকে বৈধতা হল আকারগত সত্যতা। সত্যতা হল বচনের একটি তথ্যগত বিষয়, অপরদিকে বৈধতা হল যুক্তিবিদ্যার আলোচ্য বিষয়।

বৈধতা হল যুক্তির আকারগত বৈশিষ্ট্য। এখানে যুক্তির অন্তর্গত বচনগুলি সত্য না মিথ্যা তা বিচার করা হয় না। যুক্তির আকার যদি বৈধ হয় তাহলে ওই আকারে সন্নিবেশিত বচনগুলিকে বিন্যস্ত করলে যুক্তিটি বৈধ হয়। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত বচন মিথ্যা হতে পারে।

উদাহরণ

সকল গোরু হয় দ্বিপদ প্রাণী (A)। মিথ্যা

সকল কুকুর হয় গোরু (A)।মিথ্যা

অতএব সকল কুকুর হয় দ্বিপদ প্রাণী (A)। মিথ্যা

আরও পড়ুন – যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃতি – অবরোহ এবং আরোহ প্রশ্ন ও উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment