মার্টিন লুথারের আন্দোলন ইউরোপে কী ধরনের গুরুত্ব বহন করেছিল

মার্টিন লুথারের আন্দোলন ইউরোপে কী ধরনের গুরুত্ব বহন করেছিল

মার্টিন লুথারের আন্দোলন ইউরোপে কী ধরনের গুরুত্ব বহন করেছিল
মার্টিন লুথারের আন্দোলন ইউরোপে কী ধরনের গুরুত্ব বহন করেছিল

ইউরোপে লুথারের আন্দোলনের গুরুত্ব

পোপতন্ত্রের যাবতীয় অনাচার, দুর্নীতি এবং আধিপত্য বিস্তারের প্রয়াসের বিরুদ্ধে মার্টিন লুথার যে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন, তা হল ইতিহাসের এক তাৎপর্যবাহী ঘটনা। উইটেনবার্গ চার্চের প্রবেশপথে লুথার কর্তৃক লিখিতভাবে ৯৫ প্রশ্নের তালিকা স্থাপন তথা ধর্মসংস্কার আন্দোলনের মশাল প্রজ্জ্বলন সমগ্র ইউরোপকে আলোকিত করেছিল। ইউরোপে মার্টিন লুথারের আন্দোলনের গুরুত্বগুলি হল-

(1) চার্চব্যবস্থা বা পোপের দুর্নীতির বিরোধিতা: আলোচ্য পর্বে চার্চব্যবস্থা, তথা পোপের নানাবিধ দুর্নীতির ঘোর বিরোধী লুথারের কার্মকাণ্ড সমগ্র ইউরোপকে প্রভাবিত করেছিল। চার্চের মুক্তিপত্র বা Indulgence বিক্রয়ের বিরুদ্ধে লুথারের পদক্ষেপ ছিল জার্মানি-সহ সমগ্র ইউরোপের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ।

(2) চার্চের অনুশাসন জারির প্রতিবাদ: খ্রিস্টানদের পার্থিব বিষয়ে কর্তৃত্বের অধিকারী যেহেতু চার্চ নয়, তাই চার্চের অনুশাসন জারি করারও ক্ষমতা নেই। এই ক্ষমতা আছে ঈশ্বরের প্রতিনিধিস্বরূপ রাজশক্তি বা সরকারের। এইভাবে মার্টিন লুথার চার্চের শাসনতান্ত্রিক অধিকারকে নস্যাৎ করেছিলেন, যা প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে ছিল এক তীব্র কশাঘাত। তবে লুথারের মতবাদ সমকালীন জার্মানি তথা ইউরোপবাসীকে পোপের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য উৎসাহিত করলেও পরোক্ষভাবে তা রাজকীয় স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব ও বিকাশেও সহায়তা করেছিল।

রাষ্ট্রকে পবিত্র এবং দৈবভাবে লালিত বলে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের ধারণাকেই যে তিনি তুলে ধরেছিলেন, সে বিষয়েও কোনও দ্বিমত নেই। অবশ্য এটিও অনস্বীকার্য যে, ষোড়শ শতকে প্রবল প্রতাপশালী পোপের একাধিপত্যকে অস্বীকার করা এবং যাজকতন্ত্রের যাবতীয় দুর্নীতি ও অনাচারের সমালোচনা করা ছিল নৈতিক দুঃসাহসিকতার পরিচায়ক। আর এই কাজে লুথার ছিলেন সফল। তাই জার্মানি ছাড়াও পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বোহেমিয়া, সুইটজারল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডে প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলনের মতাদর্শ প্রসারিত হতে দেখা গিয়েছিল।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment