ভক্তিবাদী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য লেখো। ভক্তিবাদের মূল আদর্শগুলি কী ছিল

ভক্তিবাদী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য লেখো। ভক্তিবাদের মূল আদর্শগুলি কী ছিল

অথবা, ভক্তিবাদী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য এবং মূলকথা লেখো

ভক্তিবাদী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য লেখো। ভক্তিবাদের মূল আদর্শগুলি কী ছিল
ভক্তিবাদী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য লেখো। ভক্তিবাদের মূল আদর্শগুলি কী ছিল

ভক্তিবাদী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যসমূহ

ভক্তিবাদে বলা হয় যে, কোনও মন্দির-মসজিদ নয়, ভক্তি দিয়ে ঈশ্বরের আরাধনা করলেই মুক্তিলাভ করা সম্ভব। ভক্তিবাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ- ভক্তের সঙ্গে ভগবানের রহস্যময় বা অতীন্দ্রিয় মিলন। ভক্তি হল ঈশ্বরলাভের একমাত্র উপায়। একেশ্বরবাদে বিশ্বাস ভক্তিবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ভক্তিবাদীদের মতে, ঈশ্বর-আল্লা-রাম-শিব সবই এক। যাগযজ্ঞ, পৌত্তলিকতা, জাতিভেদ প্রথার কোনও স্থান ছিল না। গুরুর সান্নিধ্যলাভ ভক্তিবাদের বৈশিষ্ট্য। তাঁরা বলতেন, গুরু ভক্তকে সঠিক পথের সন্ধান দেয়। সাধারণ মানুষের ভাষায় ধর্মপ্রচার ভক্তিবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। 

ভক্তিবাদের মূল আদর্শ/ মূলকথা

ভক্তি আন্দোলনের আদর্শ বা মূলকথা বা মূলতত্ত্বগুলি হল-

(1) ভক্তের সঙ্গে ভগবানের মিলন: ভক্তের সঙ্গে ভগবানের রহস্যময় বা অতীন্দ্রিয় মিলন হল ভক্তিবাদের মুখ্য বিষয়। আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মিলনেই ঘটে মোক্ষলাভ বা মুক্তি।

(2) একেশ্বরবাদ: ভক্তিবাদী সাধকেরা মনে করতেন যে, ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। ধর্মভেদে নানা নামে ঈশ্বরকে ডাকা হয়েছে।

(3) ঈশ্বরের প্রতি প্রেম: ভক্তিবাদে ঈশ্বরের প্রতি একান্ত, বিরামহীন এবং চূড়ান্ত (Single minded, uninterrupted and extreme) ভক্তি থেকে গভীর ভালোবাসায় উত্তরণের কথা বলা হয়েছে। ঈশ্বরের প্রতি প্রেম ও ভালোবাসার এই তত্ত্বকে ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার ‘ভক্তিবাদী আন্দোলনের স্থায়ী অবদান’ বলেছেন।

(4) সামাজিক বৈষম্যের বিরোধিতা: ভক্তিবাদীরা ছিলেন জাতিভেদ, বর্ণভেদ, সামাজিক বৈষম্যের বিরোধী। তাঁদের মতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যে-কোনো মানুষ একান্ত ভক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের সান্নিধ্যলাভ করতে পারেন। ভক্তিবাদে মানুষের মধ্যে সর্বজনীন ভ্রাতৃত্বের তত্ত্ব স্বীকার করা হয়।

(5) গুরুর সান্নিধ্য: ঈশ্বরের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ ও ভক্তিমার্গের সাধনার পথ কঠিন। তাই ভক্তিবাদে একজন গুরুর সান্নিধ্য প্রয়োজন বলে মনে করা হয়েছে। সুতরাং এটা বলা যায় যে, গতানুগতিক চিন্তাধারার বাইরে ভক্তিবাদী নতুন আদর্শগুলি ভারতীয় জনসমাজে আলোড়ন তুলেছিল। সব মানুষ সমান, সব ধর্ম সমান – এইসব বাণী শান্তি ও সহিষ্ণুতার পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment