‘ভক্তিকাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কাকে, কেন বলা হয়ে থাকে? ভক্তি আন্দোলনে রামদাসের ভূমিকা কী ছিল

‘ভক্তিকাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কাকে, কেন বলা হয়ে থাকে? ভক্তি আন্দোলনে রামদাসের ভূমিকা কী ছিল

'ভক্তিকাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কাকে, কেন বলা হয়ে থাকে? ভক্তি আন্দোলনে রামদাসের ভূমিকা কী ছিল
‘ভক্তিকাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কাকে, কেন বলা হয়ে থাকে? ভক্তি আন্দোলনে রামদাসের ভূমিকা কী ছিল

ভক্তিকাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি/তুকারাম

শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র নয়, সম্ভবত সমগ্র ভারতে মহান ভক্তিকাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন তুকারাম (১৫৯৮/১৬০৮- ১৬৫০ খ্রিস্টাব্দ)। তিনি ভক্তিকাব্যের মধ্যে জীবনের শান্তির উৎস খুঁজে পেয়েছেন।

(1) প্রথম জীবন: ষোড়শ শতকের অন্তিম ভাগে মহারাষ্ট্রের পুনেতে তুকারাম জন্মগ্রহণ করেন। দুর্ভিক্ষের সময় স্ত্রী-পুত্রের মৃত্যুতে তাঁর জীবনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। তুকারামের ব্যক্তিজীবনের এই যন্ত্রণা ও হতাশাই তাঁকে ভক্তি ও বৈরাগ্যের দিকে চালিত করে। 

(2) ভাবাদর্শ: তুকারাম প্রেমের মধ্য দিয়েই উপলব্ধি করেছেন অনন্ত শক্তির প্রকৃত স্বরূপকে। তাঁর কাছে দুঃখের পথের অন্তহীন অন্ধকারের মধ্য দিয়ে আত্মার আশাহীন যাত্রার একমাত্র ভরসা হল প্রেম। তিনি কখনও কখনও অতীন্দ্রিয়বাদের পথে হেঁটেছেন। তাঁর সংগীত ও কাব্যগুলিতে ধরা পড়েছে সেই অতীন্দ্রিয়বাদী চিন্তাভাবনারই প্রতিচ্ছবি। তুকারামের ভক্তিবাদী চিন্তার মূলকথা হল, সাধারণ মানুষকে অন্ধ কুসংস্কারের পথ থেকে বের করে তাদের প্রেম ও অতীন্দ্রিয়বাদের পথে পরিচালিত করা।

(3) রচনাসমূহ: তুকারাম সহজ-সরল ভাষায় ভক্তিকাব্য রচনা করে সাধারণ জনমানসকে সচেতন করার প্রয়াসী হয়েছেন। তাঁর রচিত ভক্তিকাব্যগুলি আভঙ্গ নামে পরিচিত।

ভক্তি আন্দোলনে রামদাসের ভূমিকা

মহারাষ্ট্রের অপর বিশিষ্ট ভক্তিসাধক ছিলেন রামদাস (১৬০৮-১৬৮১/১৬৮২ খ্রিস্টাব্দ)। তিনি একাধারে ছিলেন একজন দার্শনিক, সাধক, কবি এবং আধ্যাত্মিক গুরু। তাঁর রামভক্তিতে ভক্তিবাদের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মের সংমিশ্রণ ঘটেছিল।

(1) প্রথম জীবন: সম্ভবত ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে রামদাস মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন। জানা যায় যে, মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি গৃহত্যাগ করেন এবং ঈশ্বরের খোঁজে নানান জায়গায় ভ্রমণ করেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণা নদীর তীরে মন্দির স্থাপন করে তিনি তাঁর মতাদর্শ প্রচারে ব্রতী হন।

(2) মতবাদ ও কর্মজীবন: রামদাস ছিলেন রাম ও হনুমানের উপাসক। সর্বাধিক সাংগঠনিক প্রতিভার অধিকারী এই ভক্তিবাদী প্রচারক মহারাষ্ট্রে প্রায় ১১০০টি মঠ নির্মাণ করেছিলেন। পাশাপাশি সাধক কবি রামদাসের প্রেমভক্তি সক্রিয় সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যাবলির সঙ্গেও যুক্ত ছিল। তিনি মারাঠাবীর শিবাজি কর্তৃক মারাঠা জাতীয়তাবাদের সূচনা করেছিলেন। গৃহীজীবনকে মনে করতেন অধ্যাত্মচেতনার সহায়ক। এই গ্রন্থে তিনি শিষ্যদের সংযত বাক্য, অচলাভক্তি এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। গল্পগুজব করে অলসভাবে দিন কাটানো ও গুরুভোজনের নিন্দা

(3) গ্রন্থ রচনা: রামদাস রচিত বিখ্যাত গ্রন্থটি হল দাসবোধ। তিনি করেছেন তিনি।

(4) কৃতিত্ব: পরিশেষে বলা যায় যে, রামদাসের শিক্ষা থেকে মারাঠা জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে চলার প্রেরণা পেয়েছিল। মারাঠা সাধকেরাও তাঁর থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে মহারাষ্ট্রে সামাজিক শক্তি সুসংহত করেছিলেন।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment