‘নিও-প্লেটোনিজম’ কী

‘নিও-প্লেটোনিজম’ কী

নিও-প্লেটোনিজম

রেনেসাঁ যুগে ইটালির সাংস্কৃতিক, দার্শনিক এবং শিল্পগত আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ‘নিও-প্লেটোনিজম’ (Neoplatonism)। নিও-প্লেটোনিজম-এর মূল ধারণাটি প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটো (Plato)-র দর্শন বা চিন্তাধারা দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত। এই দর্শন খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে প্লটিনাস (Plotinus)-এর দ্বারা জনপ্রিয়তা লাভ করে। নিও-প্লেটোনিস্টদের বিশ্বাস ছিল যে, মানুষ সুখ ও পরিপূর্ণতা পৃথিবীতেই লাভ করতে পারে। তাঁরা পরকালের অস্তিত্ব বিশ্বাস করতেন না।

(1) নিও-প্লেটোনিজম-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:

  •  খ্রিস্ট ধার্মর সঙ্গে একত্রীকরণ: রেনেসাঁ যুগে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ- ষোড়শ শতকে খ্রিস্ট ধর্মের দর্শন এবং নিও-প্লেটোনিজম-এর দর্শনের একত্রীকরণ লক্ষ করা যায়। মহাবিশ্ব, আত্মার প্রকৃতি ও ঈশ্বর সম্পর্কিত আলোচনাগুলিতে এই সংমিশ্রণ বিশেষভাবে নজরে পড়ে।
  • সাহিত্য ও শিল্পে প্রভাব : নিও-প্লেটোনিজম দান্তের মতো বিখ্যাত পণ্ডিতদের লেখায় প্রভাব ফেলেছিল, যা পরবর্তীকালের অন্যান্য বিখ্যাত লেখকদের মধ্যেও প্রকাশিত হতে দেখা যায়। অপরদিকে মাইকেল এঞ্জেলো, বত্তিসেল্লি প্রমুখ চিত্রশিল্পী নিও-প্লেটোনিক আদর্শের রূপ ও সৌন্দর্য দ্বারা নতুন সৃষ্টির অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।
  • প্রাচীন গ্রানার পুনঃপ্রচলন: নিও-প্লেটোনিজমের মাধ্যমে প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত দার্শনিক প্লেটোর দর্শন, সংলাপ সংবলিত গ্রন্থগুলি অনুবাদ করা হয় এবং ইউরোপ, বিশেষত ইটালির শহরগুলিতে তার প্রচলন ঘটে।

মানবতাবাদের উপর প্রভাব: রেনেসাঁ-প্রসূত মানবতাবাদের বিকাশেও নিও-প্লেটোনিজমের বিশেষ অবদান লক্ষণীয়। নিও-প্লেটোনিজমে আত্মাকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে বর্ণনা করা হয়, আর মানবতাবাদও মানুষের গুণাবলি ও ক্ষমতার উপর গুরুত্ব প্রদান করে। নিও-প্লেটোনিজম ইউরোপের মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের মধ্যে সংযোগস্থাপন করেছিল এবং রেনেসাঁ বা নবজাগরণ কালে যে জ্ঞানভিত্তিক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তাকে প্রভাবিত করেছিল।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment