ইংল্যান্ডে নবজাগরণের কী ধরনের প্রভাব পড়েছিল

ইংল্যান্ডে নবজাগরণের কী ধরনের প্রভাব পড়েছিল

ইংল্যান্ডে নবজাগরণের প্রভাব

নবজাগরণের পরিণত পর্যায়ে (High Renaissance) ইটালির মানবতাবাদের ধারা আল্পস পবর্তমালা পেরিয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছোয়। ইংল্যান্ডের সাহিত্য, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, সংগীত ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছিল।

(1) সাহিত্য: এই সময় ইংল্যান্ডে ইংরেজি ভাষায় বহু সাহিত্য রচিত হয়। এই ভাষায় মানবতাবাদী ও জীবনমুখী সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে উইলিয়ম ল্যাংল্যান্ড ছিলেন বিশেষভাবে স্মরণীয়। আলোচ্য পর্বে জিওফ্রে চসার ‘দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস’, টমাস মোর ‘ইউটোপিয়া’, এডমন্ড স্পেনসার ‘দ্য ফেয়ারি কুইন’ প্রভৃতি গ্রন্থাদি রচনা করেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মানবতাবাদী স্যার ফ্রান্সিস বেকন রচনা করেন নোভাম অর্গানাম ও দি অ্যাডভান্সমেন্ট অফ লার্নিং। তবে নবজাগরণ যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক ছিলেন উইলিয়ম শেকস্পিয়র। ম্যাকবেথ, হ্যামলেট, কিং লিয়ার, ওথেলো, জুলিয়াস সিজার, দ্য মার্চেন্ট অফ ভেনিস ইত্যাদি হল শেকস্পিরের কালজয়ী রচনাগুলির মধ্যে অন্যতম।

(2) বিজ্ঞান: ইংল্যান্ডে নবজাগরণ পর্বে বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন রজার বেকন। তিনি আধুনিক বিজ্ঞানের জনক নামেও সুপরিচিত। এর পাশাপাশি ইংল্যান্ডের সাধারণ মানুষকে বিজ্ঞানমুখী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্যার ফ্রান্সিস বেকনের নামও উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত ইংরেজ চিকিৎসক উইলিয়ম গিলবার্ট (William Gilbert) তাঁর গ্রন্থ ‘De Magnete’-এ চৌম্বকত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

(3) স্থাপত্য: সমকালীন সময়ে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মতো ইংল্যান্ডেও গথিক স্থাপত্যরীতির আঞ্চলিক রূপ অনুসৃত হয়। রানি এলিজাবেথের (Elizabeth I) সময়কালেই রেনেসাঁ স্থাপত্যের বিকাশ ঘটেছিল। এই সময় স্থাপত্যে হালকা কাঠামো, মার্বেল ও রঙিন পাথরের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। অক্সফোর্ডের বিভিন্ন কলেজ ভবন, ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে, বিভিন্ন শহরের অট্টালিকায় এই নতুন স্থাপত্যরীতির প্রয়োগ ঘটে। হ্যাম্পটন কোর্ট প্যালেস, প্রডিজি হাউস, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল তার উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।

(4) চিত্রকলা: ইংল্যান্ডে চিত্রকলার বিকাশ হয়েছিল ধীরগতিতে। টিউডর যুগে বিদেশি চিত্রশিল্পীদের সাহায্যেই চিত্র অঙ্কন করা হত। এই যুগের বিখ্যাত শিল্পী ছিলেন হান্স হলবেইন (Hans Holbain)। ইংল্যান্ডে নবজাগরণের যুগে অনুচিত্রকলা (Portrait Miniature Painting) জনপ্রিয় হয়। ফ্লেমিশ শিল্পী লুকাস হরেনবুট (Lucas Horenbout), নিকোলাস হিলার্ড (Nicolas Hilliard) এবং আইজাক অলিভার (Isaac Oliver) ইংল্যান্ডে অনুচিত্রকলাকে জনপ্রিয় করেছিলেন।

(5) সংগীত: এই সময় ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ সংগীত রচিত ও গীত হয়। ল্যুট (Lute), ভার্জিনাল (Virginal) বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হয়। উইলিয়ম বার্ড (William Byrd), টমাস তালিস (Thomas Tallis) প্রমুখ এযুগের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ ছিলেন।

আরও পড়ুন – রাষ্ট্রের প্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর

একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। কোনো উত্তর না পেলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Leave a Comment